শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ , ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

ফিচার
  >
ফেসবুক কর্ণার

ঋতুপর্ণ ঘোষের ‘অন্তরমহল’ প্রাচীন জমিদার প্রথার বিরুদ্ধে এক সত্যকথন!

রেজা ঘটক ১৯ এপ্রিল , ২০২২, ১৫:২০:০৯

646
  • ঋতুপর্ণ ঘোষের ‘অন্তরমহল’ প্রাচীন জমিদার প্রথার বিরুদ্ধে এক সত্যকথন!

২০০৫ সালে কলকাতার চলচ্চিত্র নির্মাতা ঋতুপর্ণ ঘোষ নির্মাণ করেন ‘অন্তরমহল’ সিনেমাটি। তারাশংকর বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছোটগল্প ‘প্রতীমা’ অবলম্বনে নির্মাণ করা ‘অন্তরমহল’ সিনেমাটি ২০০৫ সালের ২৮ অক্টোবর মুক্তি পায়। 

ব্রিটিশ আমলের এক জমিদার পরিবারের গল্প এটি। সিনেমায় জমিদার ভূবনেশ্বর চৌধুরীর চরিত্রে অভিনয় করেন জ্যাকি শ্রফ। আর তার দুই স্ত্রী ‘মহামায়া’ চরিত্রে অভিনয় করেন রূপা গাঙ্গুলী (বড় বৌ) আর ‘যশোবতী’ চরিত্রে অভিনয় করেন সোহা আলি খান (ছোট বৌ)। 

অন্তরমহলের গল্পটা এমন- প্রতি বছর জমিদারের বাড়িতে ভাস্কর (প্রতীমা গড়ার কারিগর পালমশাই) ডেকে দুর্গাপূজার প্রতীমা গড়া হয়। কিন্তু জমিদারের মাথায় ঢুকেছে ব্রিটিশ রাজদরবার থেকে যে করেই হোক রায় বাহাদুর উপাধি তার চাই-ই চাই। 

ব্রিটিশ রাজকে খুশি করতে তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন নতুন বছরের দুর্গাপূজায় স্বয়ং দেবীর মুখের চেহারা করা হবে রানী ভিক্টোরিয়ার চেহারার গড়নে। দুর্গা দেবীকে যেন রানী ভিক্টোরিয়ার মতো দেখতে হয়। সে জন্য পুরাতন ভাস্করকে বাদ দিয়ে হিন্দুস্তান থেকে নতুন একজন ভাস্কর আনা হলো। সিনেমায় নতুন ভাস্করের চরিত্রে অভিনয় করেছেন অভিষেক বচ্চন।

এদিকে, জমিদার বাবু পুত্র সন্তানের আশায় প্রথম বিবাহের বারো বছর পর দ্বিতীয় বিবাহ করলেন। ব্রাহ্মণ শাস্ত্র মতে যাবতীয় প্রচেষ্টা করেও কিছুতেই জমিদার বাবুর পুত্র সন্তান হয় না। বিজ্ঞ ব্রাহ্মণের পরামর্শে এবার জমিদার বাবু ছোট বৌয়ের সঙ্গে সহবাসের সময় একই ঘরে ব্রাহ্মণকে ডাকলেন মন্ত্র পাঠের জন্য।

স্ত্রী সহবাসের সময় ব্রাহ্মণ কর্তৃক মন্ত্র পাঠের শব্দ কানে গেলে নাকি পুত্র সন্তান হয়, এমন বিশ্বাসে জমিদার তাই করতে লাগলেন। কিন্তু ব্রাহ্মণের উপস্থিতিতে সহবাসে ছোট বৌয়ের ভীষণ ঘেন্না লাগল। 

ছোট বৌ ছুটে বাড়ি থেকে পালাতে চাইলেন। জমিদার ছোট বৌকে ধরার জন্য কড়া নির্দেশ দিলেন। কিন্তু ছোট বৌকে ধরার সাহস পায় না কেউ। শেষ পর্যন্ত জমিদার বাড়িতে নতুন নিয়োগ পাওয়া ভাস্কর অভিষেক বচ্চন ছোট বৌকে জাপটে ধরলেন।

সেই থেকে ভাস্করের মাথার ভেতরে রহস্যময় কিছু একটা ঘটতে লাগল। নিজের বৌয়ের স্মৃতি আর এই জমিদার বাড়ির ছোট বৌয়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা দুই মিলে এক ঘোরলাগা ব্যাপার। ওদিকে বড় বৌ নতুন পটুয়াকে নানাভাবে পটানোর ধান্ধা করেন। কিন্তু নতুন পটুয়ার মনে সাহস হয় না!

ওদিকে বড় বৌয়ের পরামর্শে পরের রাত থেকে শোবার ঘরের বাইরে বসে ব্রাহ্মণ মন্ত্রপাঠ করা শুরু করলেন। কিন্তু সেখানে বড় বৌ ব্রাহ্মণের সামনে গিয়ে যেভাবে শরীর প্রদর্শন করতে লাগলেন, তা দেখে স্বয়ং ব্রাহ্মণের ক্ষণে ক্ষণে মন্ত্রপাঠ থেমে যাচ্ছিল। 

পরে অবশ্য বড় বৌ ছোট বৌকে বুঝিয়ে বলেছিলেন যে, ঢোরাসাপে বিষ নেই। ও আমি জানি। তোর দরকার পুত্রসন্তান। তুই নতুন ভাস্করকে ঘরে ডেকে পুত্রসন্তান নিয়ে নে। কিন্তু ছোট বৌয়ের মন চাইলেও সেই দুঃসাহস হয় না তার। 

এমনিতে ছোট বৌয়ের খুব বিড়ালের ভয়। জমিদারের পোষা বিড়াল আদরের নীলকান্তকে যশোবতী খুব ভয় পান। এক দুপুরে যশোবতীর ঘরে ঢুকেছিল নীলকান্ত। নীলকান্তকে বের করার জন্য যশোবতীর ঘরে ডাক পড়ে নতুন ভাস্কর অভিষেকের। সেই খবর জমিদার ভূবনেশ্বর বাবুর কানে যায়।

বাড়িতে ফিরে তিনি ছোট বৌকে জিজ্ঞেস করেন, দুপুরে নাকি ঘরে হুলো ঢুকেছিল। জমিদার বাবু যে ভারী কড়া জমিদার তা বুঝিয়ে দিতে তিনি সেই অতি আদরের বিড়ালকে মেড়ে, জোর করে যশোবতীকে সেই মরা নীলকান্তকে দেখিয়ে যা বোঝানোর ঠিকঠাক বুঝিয়ে দিলেন।

ওদিকে পূজার সময় যতই নিকটে আসছে ব্রাহ্মণ সমাজ মিলে জমিদার বাবুকে বোঝাতে চাইলেন, দেবী দুর্গার মুখ যদি রানী ভিক্টোরিয়ার মুখের আদলে হয়, তাহলে ইংরেজরা হয়তো খুশি হবেন কিন্তু হাজার বছরের সনাতন সমাজ, বিশেষ করে প্রতিবেশী হিন্দুরা কিন্তু তা মানবে না। 

অন্তত পূজার সময় রানী ভিক্টোরিয়ার গড়নে যে প্রতীমা গড়া হচ্ছে তা যেন ঢেকে রাখা হয়। পূজার পর যেদিন ভাইসরয় আসবেন, সেদিন যেন সেই প্রতীমা উন্মোচন করা হয়। তার আগে কেউ তা দেখলে অমঙ্গল হবে, দুর্নামও হবে!

এই নিয়ে ব্রাহ্মণ সমাজের সঙ্গে জমিদার বাবুর মন কষাকষি শুরু হলো। শেষ পর্যন্ত ব্রাহ্মণরা মিলে একটা পরামর্শ দিলেন, যদি এই পাপ মোচন করতে হয় তো বড় বৌকে ব্রাহ্মণদের সঙ্গে এক রাত কাটাতে হবে।

ভাগ্যের কী নির্মম পরিহাস! পূজা আরম্ভ হলো। দেবী দুর্গার মুখ উন্মোচন করা হলো। সেই মুখ মোটেও রানী ভিক্টোরিয়ার নয়, একেবারে সাক্ষাৎ ছোট বৌ যশোবতীর মুখ যেন। কোথাও নতুন ভাস্করকে খুঁজে পাওয়া গেল না।

ওদিকে বড় বৌ মহামায়াকে ব্রাহ্মণদের সঙ্গে রাত কাটাতে যেতে হবে। কিন্তু সেই সন্ধ্যায় তার ঋতুস্রাব শুরু হলো। বাড়ির সেবিকা তা জানলেও মহামায়া তাকে ধমকে দিলেন। আর বললেন, না আমি এই অবস্থায়ই ব্রাহ্মণদের সঙ্গে রাত কাটাব। আমি যাব। আমি যাব।

ওদিকে দেবী দুর্গার মুখের কায়া স্বয়ং ছোট বৌ যশোবতীর মতো হওয়ায় বন্দুকে গুলি ভরে জমিদার ছোট বউকে খুন করতে তৈরি হলেন। বড় বৌ মহামায়া দরজায় বাধা দেবার চেষ্টা করেও ক্ষ্যাপা জমিদার বাবুকে আটকাতে পারলেন না। দরজা ভেঙ্গে তিনি গুলি করতে উদ্যত হয়ে হঠাৎ হাতের বন্দুক মাটিতে ফেলে দিলেন! কারণ যশোবতী অনেক আগেই গলায় ফাঁস নিয়েছেন!

সে বছর দেবীমুর্তির পরিবর্তে ঘট পূজা হলো। বিসর্জনের পরদিন গ্রামের শ্মশানে চন্দনকাঠের চিতায় অকালপ্রয়াত ছোট বৌকে মহাসমারোহে দাহ করা হলো। শোনা গেল—তিনি এক কঠিন দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। কেবল নতুন পটুয়ার খবর কেউ জানতে গেল না।

ঋতুপর্ণ ঘোষের সিনেমায় চমৎকার সব ডায়লগ। জমিদার বাবু ছোট বৌকে আদর করার এক পর্যায়ে জিজ্ঞেস করেন, এ মাসে কী হলো নাকি? জবাবে ছোট বৌ বলেন, না আর দুই দিন যাক। গত মাসে তো ৬ তারিখে হয়েছিল। জবাবে জমিদার বাবু বলেন, দেখি, হাতপাখাটা দাও।

তখন হাতপাখা জমিদার বাবুর হাতে দিয়ে ছোট বৌ যশোবতী জমিদার বাবুর গায়ের ঘ্রাণ শুকে সন্দেহ হয়। জিজ্ঞেস করেন, এটা বুঝি নতুন আতর! জবাবে জমিদার বাবু বলেন, বাইরে যেতে হয় এক আতরে, আর বাইরে থেকে ফিরতে হয় নতুন আতরের ঘ্রাণ নিয়ে। নইলে কী আর এ বাড়ির বড় বাবু!

ব্রাহ্মণের পরামর্শে যখন ব্রাহ্মণের সামনে স্ত্রী সহবাস করতে উদ্যত জমিদার বাবু, তখন ছোট বৌকে বলেন, নাও দাঁড়িয়ে থেকো না, ওঠো তাড়াতাড়ি। জবাবে ছোট বৌ বলেন, বিছানায় বসে বসে পূজা দেখব, পাপ হবে না? তখন জবাবে ব্রাহ্মণ বলেন, এ পূজা নয় মা, যজ্ঞ বলতে পারেন। এ যজ্ঞে প্রধান পাত্রপাত্রী আপনি এবং আপনার স্বামী। আমি কেবল পুরোহিত মাত্র! 

তখন জমিদার বাবু বলেন, উনি যা পড়বেন শুনবে। মানে না বুঝলেও মন দিয়ে শুনবে। কানে যাওয়াটাই আসল কথা। অন্য কোনো দিকে যেন মন না যায়। এই পর্যায়ে মুখে পান দিতে দিতে আবার বলেন, বুইছো?

আগের দিনে জমিদার বাবুরা স্ত্রী সঙ্গমের আগে মুখে পান দিতেন! স্ত্রী সহবাসের আগে পান খাওয়ার এই বিষয়টি আমি বুঝিনি। সিনেমায় প্রাচীন জমিদার আমলে বাঙলার জুয়েলারির একটা বিশাল সম্ভার প্রদর্শিত হয়েছে। যেখানে দেখা যায় গালা, বালা, হাতের কাঁকন, পায়ের মল, সীতা হাড়, গুইনি হাড়, মটর মালা, গোলাপ বালা, কোমরের বিছা, মণিকুন্তলা, খোপা সাজাবার হাড়, নাকের নোলক, বাজু বন্ধন, শিলনো নূপুর, কানপাশা, সোনার চুলের চিরুণী, বুইসা হাড়, হাতের বালতি, রতন চৌদ, বাঙলার চৌদ, পাথর জোড়া সেট, কোমরের ঝাপটা ইত্যাদি জুয়েলারির দৃষ্টিনন্দন ব্যবহার। যা ওই সময়ের জমিদারদের বাড়িতে সচারচর ব্যবহৃত হতো। 

প্রায় প্রত্যেক জমিদারের একজন খাস চামচা থাকত। সবাই তাকে বলত সরকার। এ ক্ষেত্রেও একজন সরকারের উপস্থিতি দেখা যায়। জমিদার বাড়ির যত রকমের পাইক পেয়াদা দাসি থাকার কথা, সেরকম এলাহি কারবারের প্রদর্শনীও ছিল এ সিনেমায়। 

বৃটিশদের থেকে রায় বাহাদুর উপাধি পাবার পর যাতে জমিদার বাবুর একখানা আঁকা ছবি প্রদর্শন করা যায়, সেজন্য বাড়িতে রাখা হয়েছিল এক ফিরিঙ্গি আর্টিস্টকে। জমিদার বাবু মহলে বসতেন আর সেই বুড়ো আর্টিস্ট তাকে দেখে দেখে ছবি আঁকেতন।

দুর্গা পূজার আগেই তার ছবি আঁকার কাজ শেষ হয়। যাবার আগে তিনি নতুন পটুয়ার কাছে থেকে রানী ভিক্টোরিয়ার মুখের আদলে তৈরি করা প্রতীমা কেমন হলো দেখতে চাইলে অভিষেক কাপড়ে দিয়ে মুখ আটকানো প্রতীমা থেকে কাপড় খুলে আর্টিস্টকে দেখিয়েছিলেন। তিনি খুব খুশি হন নতুন প্রতীমা দেখে।

বিদায়বেলায় অভিষেক আর্টিস্টকে কিছু উপহার দিয়ে বলেন, আমি পুত্র সন্তানের বাবা হয়েছি, আর্শীবাদ চাই। সিনেমায অভিষেকের স্ত্রীর চরিত্রে অতিথি শিল্পী হিসাবে অভিনয় করেন রাইমা সেন। 

নির্মাতা ঋতুপর্ণ ষোষের সিনেমা দেখে সেই সিনেমা আমার আবারও দেখার ইচ্ছে জাগে। এর আগে ‘হিরের আংটি’, ‘ঊনিশে এপ্রিল’, ‘দহন’, ‘অসুখ’, ‘বাড়িওয়ালী’ ও ‘চোখের বালী’ দেখেও আমার একই অনুভূতি হয়েছিল। তার ‘রেইনকোট’ তো অসাধারণ এক সিনেমা। ‘দ্য লাস্ট লিয়ার’, ‘খেলা’, ‘আবহমান’ আর শেষ সিনেমা ‘সত্যান্বেষী’ দেখার জন্য মুখিয়ে আছি। মাঝখানে অন্য কারো সিনেমা দেখব। 

বাংলার জমিদারগণ যে কতভাবে প্রজা শোষণের পাশাপাশি ব্রিটিশ রাজ দরবারকে খুশি করায় মত্ত থাকত, তার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত ‘অন্তরমহল’ সিনেমায় নতুন করে দেখিয়েছেন নির্মাতা ঋতুপর্ণ ঘোষ।

ব্রাহ্মণ সমাজের যে শ্রেণিভেদাভেদ, কৃষ্টি, কালচার, আর তার আড়ালে যে এক লোভী পুরুষের লালা ঝড়ার দৃষ্টান্ত ঋতুপর্ণ দেখান, তা যেন সমাজে প্রচলিত এই ব্যবস্থাকেই কুঠার আঘাত করে।

ব্রাহ্মণদের আদেশে মহামায়াকে যে একবার লোকসমাজে ন্যাংটো হতে হয়েছিল, সেই জ্বালা মহামায়া সারা জীবন বয়ে বেড়ান। নপুসংক জমিদার পুত্র সন্তানের আশায় আবারও বিয়ে করেন। কিন্তু রোজ রাতে যশোবতীর উপর জোরপূর্বক সঙ্গমেও মাস শেষে কোনো ফল ধরে না। যশোবতীর ঠিকই মাস শেষে ঋতুস্রাব হয়।

আর জমিদার তখন রাগে ক্ষোভে পাড়ায় বেড়াতে যান। তখন যে তিনি অন্য নারীর সঙ্গে ঘুমান, তা সিনেমায় দেখানো না হলেও নানা অনুসঙ্গ তা সুস্পষ্ট করে। নইলে সিনেমায় যশোবতী গলায় ফাঁস নিয়ে মারা গেলেও কোটেশান আকারে তার দুরারোগ্য ব্যাধির যে কারণ উল্লেখ করা হয় না, তা আদতে সেক্সচুয়াল ডিজিজ এইডস-এর কথাই স্মরণ করিয়ে দেয়। যশোবতী গলায় ফাঁস না নিলেও শেষ পর্যন্ত তার এইডস-এ মরণ হতো, এ কথা বোঝাতেই নির্মাতা এই কোটেশানের আশ্রয় নিয়েছেন।

একটি সমাজের কৌলীন্যের আড়ালে যে নষ্ট ভ্রষ্ট পাপাচার অনাচার আর কুসংস্কার কতভাবে সমাজকে ধ্বংস করে, তার জলন্ত উদাহরণ ঋতুপর্ণার ‘অন্তরমহল’। যতদিন বাংলা সিনেমা বাঁচবে, ততদিন ঋতুপর্ণের সিনেমাগুলি মানুষ মনে রাখবে। জয়তু ঋতুপর্ণ ষোষ। জয়তু বাংলা সিনেমা।

নিউজজি/নাসি 

পাঠকের মন্তব্য

লগইন করুন

ইউজার নেম / ইমেইল
পাসওয়ার্ড
নতুন একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে এখানে ক্লিক করুন