শনিবার, ৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১ , ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫

বিনোদন

অভিভাবকত্ব পেয়ে ইতিহাস গড়লেন বাঁধন

নিউজজি ডেস্ক  এপ্রিল ২৪, ২০২৪, ১৭:৫৩:২২

279
  • ছবি: সংগৃহীত

জনপ্রিয় অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন। এপার বাংলা ছাড়িয়ে ওপার বাংলাতেও সুনাম কুড়িয়েছেন এই অভিনেত্রী। দেশের আদালত প্রাঙ্গণে  উচ্চারিত হচ্ছে তার নাম। বাংলাদেশের ইতিহাসে তিনিই একমাত্র মা, যিনি সন্তানের পূর্ণ অভিভাবকত্ব পেয়েছেন। তার আগে এবং পরে এখনো কোনো নারী সন্তানের অভিভাবকত্ব পাননি।

আদালতের নির্দেশই মা হিসাবে সন্তানের পূর্ণ অভিভাবকত্ব পেয়েছেন এই অভিনেত্রী গত সোমবার (২২ এপ্রিল)। এদিন নাবালক সন্তানের অভিভাবকত্ব নির্ধারণে নীতিমালা প্রণয়নে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। 

মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আগামী ৪ আগস্টের মধ্যে এই কমিটিকে নীতিমালা দাখিল করতে। বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের দ্বৈত হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার রুলসহ এই আদেশ দেন। অভিভাবক ও প্রতিপাল্য আইন, ১৮৯০-এর ১৯(খ) ধারা অনুসারে কোনো নাবালক সন্তানের বাবা জীবিত থাকা অবস্থায় অন্য কারো পক্ষে সেই নাবালকের অভিভাবক হওয়ার সুযোগ নেই।

আইনটির এই ধারা সংবিধান স্বীকৃত মৌলিক অধিকারের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়ায় কেন তা সংবিধানের ২৬, ২৭ ও ২৮ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না, এক রুলে তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। এর পরই আদালত প্রাঙ্গণে আইনজীবী সারা হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, এটা অনেক বড় একটা অর্জন। বাংলাদেশে যদিও নারীরা সন্তানদের হেফাজত [কাস্টডি] পাচ্ছেন, একটি ঘটনা ছাড়া আর কাউকে অভিভাবকত্ব দেওয়া হচ্ছে না। আমাদের অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন তার সন্তানের অভিভাবকত্ব পেয়েছিলেন। এর বাইরে বাংলাদেশের ইতিহাসে আর কোনো উদাহরণ নেই যে নারীরা সন্তানের অভিভাবকত্ব পাচ্ছেন।

উচ্চ আদালতের এই রুল জারির পর ভীষণ উচ্ছ্বসিত বাঁধন। ছয় বছর আগে [২০১৮ সালের ৩০ এপ্রিল] ঢাকার দ্বাদশ সহকারী জজ ও পারিবারিক আদালতের বিচারক ইসরাত জাহান একমাত্র কন্যাসন্তান মিশেল আমানি সায়রার অভিভাবকত্ব দিয়েছিলেন বাঁধনকে। এ নিয়ে সংবাদ মাধ্যমে বাঁধন বলেন, আইনটা পরিবর্তনের একটা প্রক্রিয়া শুরু হলো, এটা সবচেয়ে আনন্দের। যারা আপিল করেছেন তাদের সাধুবাদ জানাই। আমার অর্জনটা শুধু আমারই থাকুক তা চাই না, আমি চাই বাংলাদেশের সব মেয়ের অধিকার থাকুক তার সন্তানের ওপর। 

বাংলাদেশের ইতিহাসে বাঁধনই প্রথম এবং একমাত্র মা ছয় বছর আগে যখন কন্যা সায়রার অভিভাবকত্ব পেয়েছিলেন। এ বিষয়টি নিয়ে বাঁধন আরও বলেন, আমার পক্ষে যখন রায় এলো, তখন এর গুরুত্ব এতটা বুঝতে পারিনি। বাচ্চাটাকে কাছে রাখতে চেয়েছি, যেহেতু ওর সম্পূর্ণ ভরণ-পোষণ আমিই করতাম, আমি কেন ওর অভিভাবক হতে পারব না। বাচ্চার বাবা কোনো দায়িত্বই কখনো পালন করেননি। আদালতে সেটা প্রমাণও করতে পারেননি, তার জন্য আমাকে অভিভাবকত্ব দেওয়া হয়েছিল।

বাঁধন কন্যা সায়রা এখন ক্লাস ফাইভের ছাত্রী। তার বেশিরভাগ সময় কাটে মায়ের সঙ্গেই। প্রায়ই মা-মেয়ে একসঙ্গে দেশ-বিদেশ ঘুরতে যান। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রায়ই বাঁধন মা আর মেয়ের ছবি শেয়ার করেন। মেয়ে কী মায়ের এই অর্জন নিয়ে কিছু বলে এই প্রশ্নের জবাবে বাঁধন বলেন, হ্যাঁ, ও বুঝতে পারে। তবে এত কিছু ওর ধারণায় নেই। শুধু জানে, ওর মা ওকে কাছে রাখার জন্য লড়াই করেছে এবং জিতেছে। এটাও জানে, তাকে কাছে রাখার জন্য তার মা সমাজ ও আইনের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে গেছে। তার মা একজন ফাইটার, এটা সে এখন ভালোই বোঝে তবে বিষয়টার গুরুত্ব ওর বোঝার জন্য অনেক কঠিন। সেই ক্ষমতা এখনো তার হয়নি। 

নিউজজি/রুআ

পাঠকের মন্তব্য

লগইন করুন

ইউজার নেম / ইমেইল
পাসওয়ার্ড
নতুন একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে এখানে ক্লিক করুন