শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ , ১০ জিলকদ ১৪৪৫

বিনোদন

‘প্রযুক্তির কল্যাণে শিল্পী, কলাকুশলী ও সাংবাদিক ঘাসের মতো বেড়ে উঠেছে’

নিউজজি প্রতিবেদক  মে ৪, ২০২৪, ১৭:১৭:৩৭

167
  • ছবি: সংগৃহীত

চলচ্চিত্রের বিদ্যমান সমস্যা নিয়ে সম্প্রতি ‘চলচ্চিত্র শিল্পে সমস্যা ও উত্তরণের উপায়’-শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি (বাচসাস)। এতে হাজির হয়েছিলেন চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট গুণীজনরা।

সশরীরে এই বৈঠকে অংশ না নিতে পারলেও এক অডিও বার্তায় বাচসাস’কে সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য সাধুবাদ জানিয়েছেন ঢালিউডের রূপালী পর্দার এক সময়ের সাড়া জাগানো নায়ক সোহেল রানা। সেই সঙ্গে চলচ্চিত্রের বিভিন্ন সংগঠন ও বাচসাসকে একসঙ্গে চলচ্চিত্রের উন্নয়নে ভালোবাসা ও ভ্রাতৃত্ব বজায় রেখে কাজ করার আহ্বান জানান এই দাপুটে অভিনেতা।

ঢাকাই চলচ্চিত্র সূচনার আগেই বাচসাস প্রতিষ্ঠিত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা যখন চলচ্চিত্রে কাজ করতাম তখন বাচসাস এবং আমরা একত্রে মিলে চলচ্চিত্রের মঙ্গলের জন্য কাজ করতাম। আমরা একে অন্যের পরিপূরক ছিলাম। আগে আমরা ভুল করলে সাংবাদিক বন্ধুরা সেটা ধরিয়ে দিতেন। আমাদের তারা শেখাতেন। কিন্তু এখনকার সাংবাদিকতা সে পর্যায়ে নেই। তবে চলচ্চিত্রের স্বার্থে একে অন্যের পরিপূরক হতে হবে।

প্রযুক্তির কল্যাণে বর্তমানে শিল্পী, কলাকুশলী ও সাংবাদিক তিনটি একসাথে মিলে ঘাসের মতো বেড়ে উঠেছে। এখানে শিখে আসতে হয়। সম্মান রেখেই বলছি—অনেকেই এখন হাতে ক্যামেরা পেলে যে কারো ভিডিও ধারণ করে সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করছে খেয়াল খুশি মতো। যার ভিডিও ধারণ করা হচ্ছে তিনি সেটার উপযোগী কিনা সেটা কেউ বিচার করছে না। এখানে আমাদের বিরাট একটা গ্যাপ হয়ে যাচ্ছে। নতুন যারা সাংবাদিক হিসেবে আসছে তাদের ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে বাচসাস থেকে। —বললেন সোহেল রানা।

যোগ করে তিনি আরও বলেন, একজন শিল্পী ও কুশলীকে কিন্তু শিখে আসতে হচ্ছে। চাইলেই কিন্তু সে আসতে পারছে না। কিছু শিল্পীরা হয়ত লাভ দিয়ে চলে আসতে পারে। তবে অন্যদের প্র্যাকটিস করেই আসতে হচ্ছে। সাংবাদিকতায় আসতে হলে পড়াশোনা করে এবং জেনেশুনে আসতে হবে। কেউ ভুল করলে তার ভুল যাচাইয়ের পজিশন থাকতে হবে। আমার মনে হয় এদের ব্যাপারে বাচসাস’র শক্তিশালী সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। যারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের জন্য কাজ করছে তাদের জন্য বাচসাস থেকে ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে।

ঠিকমতো বাংলা উচ্চারণ করতে জানে না সেও ইন্টারভিউ নিতে চায় উল্লেখ করে এই অভিনেতা বলেন, আমি তাদের ইন্টারভিউ দেই না। অনেকেই দেখছি ইন্টারভিউ দেয়। হয়ত কখনো ইন্টারভিউর সুযোগ পায়নি। এক-দুটি সিনেমায় কাজ করেছে তারা ঠিকই সুযোগটি লুফে নিচ্ছে। যে একটা দৃশ্য করেছে তাকে তো শিল্পী বলা যাবে না।

শিল্পী সমিতির দৃষ্টি আকর্ষণ করে সোহেল রানা বলেন, নির্বাচন করার জন্য যাকে খুশি তাকে সদস্য বানিয়ে দিও না। প্রকৃত শিল্পীদের নিতে হবে। এ নিয়ে গত দুই বছর অনেক গণ্ডগোল হয়েছে। আমরা সিনিয়র পাঁচজন মিলে অনেককে বাদ দিয়েছিলাম যাচাই বাছাই করে। যে সব তরুণরা এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের জন্য কাজ করছে তাদের একটা নিয়মের মধ্যে আনতে হবে। যারা নিয়ম মানবে না তাদের ব্যান করে দিতে হবে। বাচসাসকে দায়িত্ব এড়িয়ে গেলে চলবে না। মূল সাংবাদিক ও শিল্পীদের চিহিৃত করতে হবে। চলচ্চিত্রের উন্নয়নে সকল সমিতি মিলে এক হয়ে কাজ করতে হবে।

সর্বশেষে তিনি বলেন, বাচসাস ‘চলচ্চিত্র শিল্পে সমস্যা ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকের মাধ্যমে সুন্দর একটি সমাধান আনতে পারবে সেই প্রত্যাশা করি। উভয়ের মধ্যে পুরনো দিনের মতো ভালোবাসা ও ভ্রাতৃত্ব বজায় থাকুক সেটাই কামনা করি। চলচ্চিত্রের মঙ্গলের জন্য বাচসাসকে জোরালো ভূমিকা রাখতে হবে।

উল্লেখ্য, দীর্ঘ ক্যারিয়ারে প্রায় তিন শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন সোহেল রানা। তার নিজের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান পারভেজ ফিল্মসের ব্যানারেও ৩০টির অধিক চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে। লালু ভুলু (১৯৮৩), অজান্তে (১৯৯৬), সাহসী মানুষ চাই (২০০৩) তিনটি চলচ্চিত্রে অনবদ্য অভিনয়ের সুবাদে তিনবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেছেন সোহেল রানা। ২০১৯ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার আজীবন সম্মাননা লাভ করেন তিনি।

নিউজজি/রুআ

পাঠকের মন্তব্য

লগইন করুন

ইউজার নেম / ইমেইল
পাসওয়ার্ড
নতুন একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে এখানে ক্লিক করুন