নেত্রীর জন্য জান নয়, সিদ্ধান্ত মানুন: দীপু মনি

ঢাকা: ‘নেত্রীর জন্য জান দিয়ে দেবেন বলবেন কিন্তু নেত্রীর দেওয়া সিদ্ধান্ত না মেনে নিজেদের মতো চলবেন এটা উচিত না’ এমন মন্তব্য করেন দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সমাজকল্যাণমন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, ‘আমরা কথায় কথায় বলি নেত্রীর জন্য জান দিয়ে দেবো। কিন্তু কেউ জান দিয়ে দিক এটা নেত্রী চান না। নেত্রী যে সিদ্ধান্ত দেন, সে সিদ্ধান্ত মানি কি না? সেটা কেন্দ্রে হোক, তৃণমূলে হোক, যেখানেই হোক।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের সবার যদি এরকম হয় যে, বিচার মানি তালগাছ আমার তাহলে কিন্তু হবে না। তাহলে কিন্তু নেত্রীর প্রতি ভালোবাসা হলো না।’

রবিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে ‘১/১১- এ কারাবন্দি বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা-মুক্তির দাবিতে ২৫ লক্ষ গণস্বাক্ষর জমা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন।

ডা. দীপু মনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ একটি গণতান্ত্রিক দল, এর সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়াও গণতান্ত্রিক। নেত্রী কারো ওপর কিছু চাপিয়ে দিচ্ছে না। প্রত্যেকের মতামত নিয়ে আলোচনার মধ্য দিয়ে একটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। মূল সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আমাদের মত থাকতে পারে। কিন্তু যখন সিদ্ধান্ত হয়ে যায়, তখন সেটা দলীয় সিদ্ধান্ত।’

তিনি বলেন, ‘হয় আমি সেই সিদ্ধান্ত মানি, না হয় আমি দল করবো না। সেই স্বাধীনতা আপনার আছে। কিন্তু আপনি দলও করবেন, নেত্রীর জন্য জানও দিয়ে দেবেন বলবেন কিন্তু নেত্রী নেতৃত্বে দলের যে সিদ্ধান্ত সেটা মানবেন না; নিজেরা নিজের মতো চলবেন এটাতো আসলে হওয়া উচিত না।’

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমাদের ছাত্রলীগ, যুবলীগ, কৃষক লীগসহ যত সংগঠন আছে সকল সংগঠনের সবার সামগ্রিকভাবে আমাদের বৃহত্তর যে আওয়ামী পরিবার আছে আমাদের ঐক্য, আমাদের আদর্শের প্রতি ষোলআনা অঙ্গীকার ও শৃঙ্খলা থাকা জরুরি। কারণ আমাদের যত অর্জন, বাংলাদেশের যত অর্জন সবকিছু এসেছে আওয়ামী লীগের মাধ্যমে। আর সেই অর্জনকে নস্যাৎ করে দেওয়ার জন্য যে অপশক্তি, তারা বঙ্গবন্ধুর সময় যেমন ছিল আজকেও তারা সক্রিয় আছে। অতএব আমাদেরকে আমাদের ঐক্য, সংকল্পের দৃঢ়তা, দলীয় আনুগত্য যদি সুধরে রাখতে না পারি তাহলে কিন্তু সেই অপশক্তি আবারও ছোবল হানবে।’

দীপু মনি বলেন, ‘দেশের বৃহত্তর রাজনৈতিক দল হিসেবে আমাদের দায়িত্ব ওই অপশক্তি যেন কখনো ছোবল মারতে না পারে সেটা লক্ষ্য রাখতে হবে। সেই দায়িত্ব পালনে যেন আমরা কখনো পিছপা না হই। আমি মনি করি সেটিই আমাদের অঙ্গীকার হওয়া উচিত।’

দীপু মনি আরও বলেন, ‘২০০৭ সালের ১৬ জুলাই শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। ১১ জুন ২০০৮ সালে জনতার চাপে আওয়ামী লীগকে ভাঙতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়ে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাধ্য হয়েছিল শেখ হাসিনাকে মুক্তি দিতে। মাত্র ১৫ দিনে ২৫ লক্ষ স্বাক্ষর সেই সময় সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছিল। আরেকটি ভূমিকা রেখেছিল আমাদের বর্ধিত সভা। যেখানে সারা দেশ থেকে নেতৃবৃন্দ এসে জানিয়ে দিলো ‘‘নো শেখ হাসিনা, নো ইলেকশন’’।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সাপ্তাহিক গণবাংলার প্রধান উপদেষ্টা এম এ করিম, সঞ্চালনা করেন সাবেক ছাত্র নেতা চন্দন কুমার ঘোষ। এ সময় আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট বলরাম পোদ্দারসহ অন্যান্য নেতা উপস্থিত ছিলেন।