মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারি ২০২৫, ৮ মাঘ ১৪৩১ , ২১ রজব ১৪৪৬

সাহিত্য
  >
গল্প

মানুষের মাংসের হালিম

রাশেদ সাদী আগস্ট ১১, ২০২৩, ১৫:৫৮:৩৪

3K
  • মানুষের মাংসের হালিম

বঙ্গবন্ধু এক্সপ্রেস ওয়েতে যে দিন বাস অ্যাক্সিডেন্ট হলো, সেদিনই এক হোটেল মালিক গ্রেফতার হলো।

 

বাসটায় না চলার মতো কোনো সমস্যা ছিল না। বয়স্ক বুড়োর মতো কাশতে  কাশতে খুড়িয়ে চলছিল। তবে গতি যে খুব খারাপ ছিল—তাও বলা যাবে না।

মৃদু ঝাঁকুনি তুলে বাসটি এগিয়ে যাচ্ছিল। ঝাঁকুনির ভেতর অবশ্য অত কিছু ভাবনার অবকাশ ছিল না। বুড়ো গাড়ির পেটের ভেতর অধিকাংশ যাত্রীই ঘুমে, অর্ধঘুমে, কেউ আবার ঝিমুনির মধ্যে দুলছিল।

ড্রাইভার সপাটে পান চিবুচ্ছে আর সিগারেট ফুঁকছে। টানা দু’দিন সে এক মিনিটের জন্যও পিঠটা বিছানায় ঠেকাতে পারেনি। আদ্যিকালের ম্যানুয়াল স্টিয়ারিংয়ের সঙ্গে ধস্তাধস্তি করে কাটিয়েছে।

পান চিবিয়ে আর সিগারেট ফুঁকে ঘুমকে হয়ত পরাস্ত করা যায়,  ক্লান্তিকেতো না—তা যদি হয় আবার হাড়ের ক্লান্তি। ফলে মাঝে মাঝে ড্রাইভারের পান চিবানো থেমে যাচ্ছিল, স্টিয়ারিং থেকে হাত ফসকে যাচ্ছিল।

ড্রাইভারের পেছনের সারির বাঁ-দিকের প্রথম সিটে বসে আদিলের মনে হলো, ড্রাইভারের মাথা ঘুমে ঢলে পড়ছে। বিপরীত থেকে আসা গাড়ির হর্নে চকিতে ঘাড় সোজা করে চালক। আদিলের ভয় হয় এই বুঝি বিপরীত দিকের গাড়ির সঙ্গে সংঘর্ষ বাঁধিয়ে বসল। কিন্তু দেখা গেল দিব্যি চলে যাচ্ছে গাড়ি।

সে দেখল, এ ভাবে ড্রাইভারকে লক্ষ্য করলেই বরং ভয়। না খেয়াল করলে কিছুই না। তার চেয়ে বেশি অস্বস্তি হয়, ইঞ্জিনের ওপর কোনো মতে পাছা পেতে বসা পাঁচ লোক দেখে। স্টিয়ারিংয়ের সঙ্গে সঙ্গে নিরাবলম্ব কলসির মতো মানুষগুলো উল্টা-সিধা হচ্ছে। এরই মধ্যে আবার তারা ঘুমে ঢলে পড়ছে।

পকেটের পঁচাত্তর হাজার টাকার বান্ডেলটা ঠিক আছে কি-না একবার হাত বুলিয়ে নিল। ঠিকই আছে। সব ঠিক আছে। এখন শুধু বাড়ি গিয়ে ঘরটা ঠিক করে ফেলা। বৃষ্টির দিনের আগেই ঘরের চালটা এবার নতুন হবে;  এ ছাড়া, মায়ের ওষুধ, মেয়ের স্কুলের ফি, সন্তান-সম্ভবা বৌ’র সাধ-আহ্লাদ—কত কী যে করতে হবে এই পয়সায়। তবু ভালো শেষ পর্যন্ত ফুটপাথের দোকানটা বেচতে পেরেছে। ভালোই দাম পেয়েছে বলতে হবে। ফুটপাথের রকমারির দোকান, আর কত! তার মধ্যে আবার চালটা নড়বড়ে। ধরতে গেলে জিতেছে আদিল।

ঢাকার পাট চুকেবুকে গেল। এবার গ্রামেই কিছু একটা করেটরে খাবে বলে মনোস্থির করেছে আদিল। কী করা যায়? মাছ ধরলে মন্দ না। সঙ্গে একটা গরুর বাছুর, দুটো ছাগলের বাচ্চা কিনে নেবে, ব্যস। পাশাপাশি যদি ইন্তাজ মোল্লার থেকে কিছু জমি বর্গাচাষে নেয়া যায়—ষোলকলা।

নানা কথা ভাবনার মধ্যেই কখন যেন তন্দ্রায় তলিয়ে যায় আদিল। তার সুঠাম শরীর পাশের সিটের দিকে হেলে পড়ে। কয়েকবার পাশের সিটের জন ধাক্কা দিয়ে সোজাও করে দেয়। ফের ঘুমের অতলে হারিয়ে গিয়ে আবার ঝুঁকে পড়ে। এবার আর বিপরীত পক্ষ থেকে কোনো খবর দাবি আসে না। আসবে কোথা থেকে, সে নিজেওতো গভীর ঘুমে সার।

অতঃপর সেই শব্দটি হলো। আদিলের ভাষায়,  যেন এক ঝাক লোহার জ্বলন্ত পেরেক একযোগে মগজে এসে বিঁধল আর বিঁধতেই থাকল।

কে যেন ‘আল্লাগো’ বলে চিৎকার দিল। তার পর সব অন্ধকার।

 

শহরে হালিমের জন্য বিখ্যাত মগবাজার মোড়ের এই হোটেল। দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ গাড়ি নিয়ে এসে হালিম খেয়ে যায়। সারাদিন, সেই সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত কাস্টমারে গমগম করে পুরো দোকান; তাও শেষ হতে চায় না কাস্টমারের চাহিদা।

সবার মতো আহসানও এই হোটেলের হালিমের ভক্ত। খুৎখুতে স্বভাবের জন্য বন্ধু মহলে তার একটা খ্যাতি আছে। সচরাচর তাই কোনো আয়োজনে তাকে কেউ ডাকতে চায় না, সেটা যদি হয় আবার খাবার কেন্দ্রিক—তাহলেতো বিনা বক্য ব্যয়েই না। ডাকলেই কি, সে যে শোনার আগেই না করে দেবে—সেটা কে না জানে। সেখানে হোটেলতো তার জন্য হারাম। সেই আহসানও এই হালিমের ভক্ত—তা হলে বুঝতে হবে এর মধ্যে কিছু একটা আছে। কী সেটা? সেটা তাই যা অন্য হোটেলে নেই—এইটুকুই বলা যায়। আহসান তার পাতলা ঠোঁট চেটেচেটে খুব রসিয়ে রসিয়ে যখন খায়—সেটাও একটা দেখার মতো দৃশ্য বটে।

হালিম আর একটা পাতলা (তন্দুররুটি)—রাতের জন্য শ্রেষ্ঠতম একটি খাবার। সঙ্গে আবার যদি থাকে বঙ্গবন্ধু এক্সপ্রেসওয়েতে সড়ক দুর্ঘটনার মতো গরম খবর—তাহলেতো কথাই নাই।

এমনিতে আহসান তৃপ্তি নিয়ে খেয়ে ঢেকুর তুলে হোটেল থেকে বেরিয়ে যায়। যাওয়ার সময় মেসিয়ারদের খুশি হওয়ার মতো টিপস দেয়। কারো আপ্যায়নের প্রয়োজন  হলে, সে অতিথিকে নিয়ে সোজা এখানে চলে আসে। যারা এক  ‍দুবার এসেছে—তারা সময়-সুযোগ পেলেই কম বেশি এসে এখানে ঢু মেরে যায়। আর যদি কোনো কারণে এদিক দিয়ে যাওয়া পড়ে, তাহলে তো কথাই নেই—খাওয়া মাস্ট। তাদের জিজ্ঞেস করা হলে—কেন? তারা কিন্তু বলতে পারবে না। একবার বন্ধু আলতাফ বলেছিল, এদের বোধ হয় জাদুটোনা করা আছে। একথা শুনে হু-হু করে সবাই হেসে ছিল সেদিন।

বন্ধুদের মধ্যে একজন শাকিল। রমনা থানার এসআই। ছয় ফুট লম্বা আর কাছির মতো পাকানো শরীর। থপ থপ করে পা ফেলে চলে। পাশ দিয়ে গেলে একবার তাকাতে হয়। তারতো সপ্তায় অন্তত তিন থেকে চারবার আসা চাই-ই চাই। এলেই আহসানকে ফোন, আয়। আহসান কোনো দিন দেখেনি, শাকিল খেয়েছে আর পার্সেল নিয়ে যায়নি। কার জন্য নেয় সে তো জানা কথাই। বললে বলে, হয়েছে হয়েছে। নিজে করো তখন দেখা যাবে।

  ‘আরে সেটা না, এ যুগেও মানুষ এমন বৌ-ভক্ত হয়?’

  ‘আরে বললামতো, বিয়েটা কইরা দেখ না, ভায়া।’

  ‘আর বিয়ে! তোদের দেখে সে সাধ মিটে গেছে।’

  ‘হয়েছে রে, তখন তো আর টিকিটির যে দেখা পাওয়া যাবে না, তা কিন্তু আমরা জানি।’

  ‘আরে রাখ। নিজের মতো ভাবিস না।’

 ‘রাখ না, এই সত্যি। তবে কি জানিস, ভালো কিছু সত্যি বৌকে রেখে খেতে মনচায় না। চাবে কীভাবে বল, ওই যে সে তোর পথ চেয়ে বসে আছে। তার কথা তুই ভুলবি কী দিয়ে?’

  ‘লাল পানিও নিয়ে খাও নাকি?’ আহসান তার পাতলা ঠোঁট বাঁকা করে।

  ‘আরে ও ব্যাপারে আমি জাতে মাতাল তালে ঠিক আছিরে, সোনা।’

  ‘শালা ভণ্ড!’

বন্ধুদের মধ্যে এই শাকিলটাকেই তার পছন্দ। অন্যদের কেমন নকল নকল লাগে। নকল কিছুকে আহসান সহ্যই করতে পারে না। নকল মনে হওয়ার কারণে তার জীবনে একটা প্রেমই হলো না পর্যন্ত। সব নাকি তার নকল নকল লাগে। কেবল আসল আসল তার এই হোটেল আর শাকিলকে। সেই শাকিল আজকে আসার কথা বলেও আসতে পারেনি। ফোন করে বলল কিসের জরুরি কাজ পড়ে গেছে। তাই সে একাই খেতে বসেছে। হালিম আর পাতলা।

উপর থেকে এক-দু’বার মুখে পুরে। এবার চামচটা হালিমের ভেতর ডুবিয়ে দিয়ে কয়েবার নাড়া দিয়ে তুলে নিয়ে আসে। মুখের কাছে নিয়ে আসতেই আহসান হঠাৎ চিৎকার করে ওঠে। ওয়েটার দৌড়ে আসে। কী হয়েছে মামা?

কিছু না, সে নিজেকে সামলে নেয়। চামচটা হালিমে ডুবিয়ে দিয়ে বলে, কিছু না, এমনি।

ওয়েটার চলে যাচ্ছিল। আহসান ডেকে বলে, আমাকে একটা কোক দাও।

 ‘আচ্ছা মামা’বলে ওয়েটার চলে যায়। এই ফাঁকে সে শাকিলকে ফোন দেয়। সঙ্গে কয়েকজন কন্সটেবল আনার কথাও বলে দেয়।

ফোনটাকে সবার অলক্ষ্যে ভিডিও করে। কিছুক্ষণের মধ্যেই বন্ধু শাকিল এসে হাজির হয়। কন্সটেবলদের টেবিলে বসিয়ে শাকিলকে নিয়ে হোটেলের বাইরে বেরিয়ে আসে আহসান। শাকিল ধরতে না পারলেও বুঝতে পারছে ঘটনার ভয়াবহতা আহসানের চোখে-মুখে।

শাকিলকে দেখে ওয়েটার চিল্লিয়ে ওঠে, মামা পার্সেল হবে?

পরে, দাঁড়া। ওয়েটারকে হাত দিয়ে থামিয়ে আহসানের কাঁধে হাত রেখে শাকিল বলে, তুমি ঠিক আছোতো,  বন্ধু?

 ‘উঁহু’ছোট্ট এই শব্দ করে সে লম্বা শাকিলকে নিজের দিকে আকর্ষণ করে কানের কাছে মুখ নিয়ে যায়।

কী, হয়েছে কী বলবি তো? ভূতে পাওয়া মানুষের মতো ও মন কুঁকড়ে যাচ্ছিস কেন?

কিছু বলার আগে তুই এই ভিডিওটা দেখ। খবরদার চিল্লাবি না! কয়েকজন সংবাদিক ডেকেছি। তারা এখনও পৌঁছায়নি। আসার পরে...।

শাকিল ভিডিও দেখে আঁৎকে ওঠে। আহসান সঙ্গে সঙ্গে তার হাত চেপে ধরে—

কোনো শব্দ করবি না,  চুপ।

ইতোমেধ্য দু’জন টিভি সাংবাদিক এসে পৌঁছায়।

কই? এসেই সাংবাদিক প্রশ্ন করে।

আসুন আশিক ভাই, ভেতরে। শাকিল সাংবাদিকদের নিয়ে ভেতরে ঢুকে। পেছনে পেছনে যায় আহসান আর শাকিল। ম্যানেজার কিছু বুঝে ওঠার আগেই আশিক লাইভে চলে যায়।

পরদিন এক বাক্যে সব সংবাদ মাধ্যমে হেডিং, ‘মানুষের মাংসের হালিম বা হোটেলের হালিমে মানুষের আঙুল!’।

 

আদিল হাসপাতালের সাদা অ্যাপ্রোনের বিছানায় শুয়ে। একটা পা সোজা করে রাখা। অপর পা একদিনের ব্যবধানে হারিয়ে গেছে। বঙ্গবন্ধু এক্সপ্রেসওয়ের ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায়।

পায়ের ফাঁকা জায়গাটায় আদিলের স্ত্রী রহিমা বসে আছে। ছয় মাসের পোয়াতি সে, ফলে বসতে তার কষ্ট হয়; পেছন দিকে হেলে বসলে একটু সুবিধা। রোগীর বিছানায় তেমন সুবিধা না থাকায় পেছন দিকে হাত দিয়ে বসেছে। কিন্তু ওভাবে আর কতক্ষণ বসা যায়। ডানা ধরে যায়, তাই সামনের দিকে একটু ঝুঁকতে হয়। পেটে চাপ লাগে, কষ্টটা বেড়ে যায়।

কেবিনের একদিকে একটা টিভি চলছে। কোনো একটা সংবাদ চ্যানেল দেয়া। আনমনে সে দিকে তাকিয়ে তার মেয়ের কথা ভাবে, অসুস্থ দাদি, সঙ্গে ওই বাচ্চা মেয়েটা—কী যে করছে ওরা? খুব চিন্তা হয় তার।

কিছু করতে পারলাম না তরার জুন্য। টিভির পর্দার দিকে তাকিয়ে আদিল দির্ঘশ্বাস ছাড়ে।

কিছু করন লাগব না আপনের। আপনে সুস্থ হইন, তাইলেই দেখবেন সব ঠিক অয়া যাইব। কতগুলো মানুষ মইরা গেল, আল্লায় যে আপনেরে আমার কাছে ফিরায়া দিছে, এই যথেষ্ট। এর চায়া বেশি আমি চাই না।

রহিমা স্বামীর ভালো পাটায় হাত বুলিয়ে দিতে থাকে।

হ, আমিও তাই কই। আরে শালা বাঁচলাম কী কইরা। অবশ্যি এইভাবে বাইচা থাকার মানেই বা কী? এর চায়া কত বড় বড় ফাড়া মানুষ কাটায় ওঠে।

আমিও উঠমু তুই টেনশন নিছ না। কিন্তু যে ওষুধ দিছে, যে ট্যাকার কারবার! তরারে খাওয়ামুই বা কী, মাইয়াডার স্কুলই বা চলব কী দিয়া, আমার মাথায় ধরে নারে ফাহমির মা।

আপনের অত কিছু ভাবন লাগব না কইতাছি না। আমি আছি না।

রহিমা কোনো মতে নিজের কান্নাটা সংবরণ করে। কান্নার রোল পিংপং বলের মতো বুকের ভেতর এলোপাথারি ছোটাছুটি করতে থাকে। অশ্রু জমা হয়ে চোখ ঝাপসা হয়ে আসে। সে খুব মনোযোগ দিয়ে টিভি দেখার চেষ্টা করে। কিছুতেই যেন অশ্রুটা বেরিয়ে না আসে, ফ্যানের বাতাসে চোখেই যেন শুকিয়ে যায়—সেভাবে সে চোখ বড়বড় করে রাখে।

মানুষ কী নিষ্ঠুর দেখ, আমার এই অবস্থা, এর মধ্যেই আমার টাকাগুলা হাতায়া নিছে। কাটা পাটা ও খুঁজে পাওয়া গেল না।

আদিল আক্ষেপ করে বলতে থাকে, কুত্তা হয়ত টাইনা নিয়া খায়া ফেলছে। হায়রে পা! পা নিয়া হরিণের হেই গল্পটার কথা মনে পড়তাছে? দাদি কইত ছোটকালে। এক হরিণ নাকি নদীতে পানি খাইতে গেছে। পানিতে তার ছায়া পড়ছে। শিংগুলোর দিকে চেয়ে তার মনে হলো, আহ, কী সুন্দর! ডালপালার মতো ছড়িয়ে আছে। তারপর গায়ের দিকে তাকাল, দেখল, সোনালি রঙে সাদার ছোপ, তার মনে হলো, আহ কী সুন্দর! তারপর তার চোখ গেল পায়ের দিকে, হরিণের মন খারাপ হয়ে গেল। এত সুন্দর শরীরের কী বাজে আর পাটখড়ির মতো ঠ্যাং, দেখে তার কিছুতেই পছন্দ হলো না। তো একদিন বন দিয়ে যাওয়ার সময় একটা ফাঁদে আটকা পড়ল হরিণ। প্রথম তার শিংটা আটকে গেল। সেটা ছাড়ানোর চেষ্টা করল। কিন্তু ফাঁদের জাল তাতে আরও পেঁচিয়ে গেল। মোচড়া-মুচড়ি করাতে জালটা তার গায়েও পেচিয়ে গেল। অর্থাৎ শক্ত ভাবে আটকে গেল হরিণ। ছাড়ানোর খুব চেষ্টা করতে লাগল সে। প্রথমে সে পা-টা জাল থেকে বের করে আনল, এরপর খুব চেষ্টা করে শরীরটা ছাড়াতে পারলেও শিংতো ছাড়ে না। যত চেষ্টা করে, ডাল পালার মতো ছড়ানো শিংয়ে জাল গেল আরও পেঁচিয়ে । তারপরও লিকলিকে পাগুলোই তাকে বাঁচানোর চেষ্টাকরে যেতে লাগল। এতো গেল পায়ের গল্প। কিন্তু যার পাটাই নাই? তার আবার মোটা কী, পাতলাই বা কী। তারতো পা-ইনেই। পা ছাড়া কোনো হরিণ নিয়া কোনো গল্প দাদি কোনো দিন করে নাই।

সরকারতো বলছে ক্ষতিগ্রস্তদের দশ হাজার কইরা ট্যাকা দিব।

কবে? মইরা গেলে? আরে মইরা গেলে কী? দশ হাজার ট্যাকা তর কাছে পৌঁছাইতে পৌঁছাইতে পাতি নেতার সমবেদনাটা পাইতে পারস! তাও পাইলে তর সাতজন্মের ভাগ্যি, ট্যাকা আর পাওন নাগব না।

রহিমা আদিলের ভালো পাটার ক্ষতগুলোতে ওষুধ লাগিয়ে দিচ্ছিল। প্রচণ্ড ব্যাথায় আদিল চিৎকার করে উঠল, বন্ধ কর ওই টিভি!

টিভির রিমোট অফ করতে গিয়ে রহিমাও চিৎকার ওঠে।

স্ক্রলেব্রেকিং : এক্সপ্রেসওয়েতে বাস দুর্ঘটনায় বিছিন্ন অঙ্গ-প্রতঙ্গ দিয়ে হালিম, মালিকসহ গ্রেফতার দশ।

 

নিউজজি/নাসি

পাঠকের মন্তব্য

লগইন করুন

ইউজার নেম / ইমেইল
পাসওয়ার্ড
নতুন একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে এখানে ক্লিক করুন