শনিবার, ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৬ মাঘ ১৪৩১ , ৯ শাবান ১৪৪৬

সাহিত্য

সাহিত্যিক বিনয় কুমার মুখোপাধ্যয়ের জন্মদিন আজ

নিউজজি ডেস্ক ১০ জানুয়ারি , ২০২৫, ১৩:৩২:৩৭

60
  • সংগৃহীত

ঢাকা: বিনয় কুমার মুখোপাধ্যায় বাংলার পাঠকসমাজে তিনি "যাযাবর" নামে তিনি অধিক পরিচিত। "যাযাবর" হল বিনয় কুমার মুখোপাধ্যায়ের ছদ্মনাম। বিনয় কুমার মুখোপাধ্যায় ছিলেন বিশিষ্ট সাহিত্যিক, গীতিকার এবং সাংবাদিক। এই শ্রদ্ধেয় সাহিত্যিক ১৯০৮ সালে জানুয়ারী মাসের ১০ তারিখে অধুনা বাংলাদেশের অন্তর্গত ঢাকা জেলার ফেগুনামার গ্রামে ভুমিষ্ঠ হন । এই শ্রদ্ধেয় সাহিত্যিকের পিতার নাম হল ফণীভূষণ মুখোপাধ্যায় এবং মাতার নাম হল মনোরমা দেবী।

এই শ্রদ্ধেয় সাহিত্যিক চাঁদপুরের জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিক, সেন্ট পলস কলেজ থেকে আই. এ. এবং বঙ্গবাসী কলেজ থেকে বি. এ. পাশ করেন। সেই সময় এই শ্রদ্ধেয় সাহিত্যিক কয়েকটি সঙ্গীত রচনা করেছিলেন। সুরসাগর হিমাংশু দত্ত সুরারোপিত তার সঙ্গীতের রেকর্ডের তালিকা ছয়টি। কাজের প্রয়োজনে দিল্লি গমন করা এবং হিমাংশু দত্তের অকাল প্রয়ানে এই শ্রদ্ধেয় সাহিত্যিকের গীতিকার জীবনে সমাপ্তি ঘটে।

এই বরণীয় সাহিত্যিক যুগান্তর পত্রিকায় সাংবাদিক হিসাবে যোগ দিয়ে কর্মজীবন আরম্ভ করেন । এই পত্রিকায় এই বরণীয় সাহিত্যিক "শ্রীপথচারী" ছদ্মনামে রাজনৈতিক কলম লিখতেন। চাকরিজীবনে এই বরণীয় সাহিত্যিক ভারত সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের উচ্চ পদস্থ কর্মচারী ছিলেন এবং পরে প্রেস কাউন্সিলের সচিব হয়েছিলেন। এই পদ থেকেই বিনয় কুমার মুখোপাধ্যায় অবসর গ্রহন করে কর্মজীবন শেষ করেন । এই বরণীয় সাহিত্যিক কর্মজীবনেই সাহিত্য রচনা আরম্ভ করেন।

"যাযাবর" ছদ্মনামে রচিত এই স্বণামধন্য সাহিত্যিকের প্রথম উপন্যাস "দৃষ্টিপাত" ১৯৪৬ সালে প্রকাশিত হয়। এই উপন্যাসটি প্রকাশিত হওয়া মাত্রই বাঙালি পাঠকমহলে একটা আলোড়নের সৃষ্টি হয়। গ্রন্থপ্রেমীদের মধ্যে এই উপন্যাসটি পড়েন নি এমন বাঙালি সেই সময় খুঁজে পাওয়া কঠিন ছিল।

"দৃষ্টিপাত" উপন্যাসটি এই স্বণামধন্য সাহিত্যিককে এতোই জনপ্রিয়তা দান করে যে শোনা যায়, সেই সময় তরুন - তরুনীদের প্রেমপত্রে তার লেখার উদ্ধৃতিগুলি ব্যবহার হতো। ছোটগল্প ও উপন্যাস মিলিয়ে এই স্বণামধন্য সাহিত্যিকের গ্রন্থসংখ্যা ছয়। এই গ্রন্থগুলি হল - দৃষ্টিপাত, জনান্তিক, ঝিলম নদীর তীরে (কাশ্মীরে হানাদারদের আক্রমন নিয়ে রচিত এই গ্রন্থ), লঘুকরণ, হ্রস্ব ও দীর্ঘ এবং যখন বৃষ্টি নামলো। "দৃষ্টিপাত" উপন্যাসটি প্রকাশিত হওয়ার আগে মাসিক বসুমতী পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে এই উপন্যাসটি প্রকাশিত হয়েছিল।

১৯৫০ সালে সমকালীন বাংলা সাহিত্যের সর্বশ্রেষ্ঠ গ্রন্থ হিসাবে "দৃষ্টিপাত" দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বারা নরসিংহ দাস পুরস্কারে সম্মানিত হয়। ১৯৬০ সালে "দৃষ্টিপাত" উপন্যাসটির হিন্দী অনুবাদ প্রকাশিত হয়। পরবর্তীকালে অন্যান্য কয়েকটি ভাষাতেও এই উপন্যাসটি অনুদিত হয়েছে। বাংলা ভাষায় ক্রিকেট নিয়ে এই জনপ্রিয় সাহিত্যিকের রচিত দুইটি গ্রন্থ "খেলার রাজা ক্রিকেট" এবং "মজার খেলা ক্রিকেট" বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

এই প্রথিতযশা সাহিত্যিকের রচিত সব কয়টি গ্রন্থই জনপ্রিয় হয়েছিল। এই জনপ্রিয় সাহিত্যিক আর কেন গ্রন্থ রচনা করেন নি তা নিয়ে পাঠকদের মনে ক্ষোভ আজও আছে। এই খ্যাতনামা সাহিত্যিক নিজের সাহিত্যকীর্তির জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কাছ থেকে বিদ্যাসাগর পুরস্কার লাভ করেন। ২০০২ সালে অক্টোবর মাসের ২২ তারিখে বর্তমান ভারতবর্ষের অন্তর্গত দিল্লি শহরে এই খ্যাতনামা সাহিত্যিকের তিরোধান হয় ।

নিউজজি/পি.এম

পাঠকের মন্তব্য

লগইন করুন

ইউজার নেম / ইমেইল
পাসওয়ার্ড
নতুন একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে এখানে ক্লিক করুন