রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২ , ২১ শাওয়াল ১৪৪৬

বিদেশ

ইরান ও ইসরায়েল, বন্ধু যখন শত্রু

নিউজজি ডেস্ক ১৫ এপ্রিল , ২০২৪, ১৩:২৫:৫০

203
  • ইরান ও ইসরায়েল, বন্ধু যখন শত্রু

ঢাকা: ইরান ও ইসরায়েল অতীতে ছিল একে অপরের বন্ধু। ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেয়া দ্বিতীয় মুসলিম দেশও ইরান। কিন্তু কয়েক দশক আগে থেকে সেই বন্ধুত্বে ফাটল দেখা দেয়। সম্প্রতি ইসরায়েল ও হামাস যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ইরান ও ইসরায়েল বৈরিতা নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়।  সেই উত্তাপ শেষ পর্যন্ত চরম বৈরিতায় রুপ নিয়েছে। ইসরাইল দাবি করে আসছে,  হামাসের প্রধান সহায়তাকারী হচ্ছে ইরান। 

প্রতিষ্ঠার পর থেকে প্রতিবেশী আরব দেশগুলোর সঙ্গে কয়েক দফায় যুদ্ধে জড়িয়েছে ইসরায়েল। হামাসকে নিশ্চিহ্ন করার নামেও বর্তমানে গাজায় আগ্রাসন চালাচ্ছে দেশটি। তবে এই সংঘাতে নিজেকে সরাসরি যুক্ত করেনি তেহরান। সীমাবদ্ধ ছিল হুঁশিয়ারী দেয়ার মধ্যে।  তবে নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের আশঙ্কা ছিল, ইসরায়েল ও গাজা যুদ্ধ হয়তো শেষ পর্যন্ত ইসরায়েল ইরান যুদ্ধে রূপ নিতে পারে। সেই আশঙ্কাই যেন সত্যিই হলো। এপ্রিলে প্রথম দিন সিরিয়ায় থাকা ইরানের কনস্যুলেটে হামলা চালায় ইসরায়েল। এরপর ইরান পাল্টা হামলা চালানোর হুঁশিয়ারী দেয়।  

গত ১৪ এপ্রিল রাতে ইসরায়েলি ভূখণ্ডে ড্রোন হামলা চালায় ইরান। এর মধ্য দিয়ে কয়েক দশকের বৈরী সম্পর্ক শেষ পর্যন্ত সরাসরি সংঘাতে রুপ নেয়। 

ইতিহাস বলছে, ১৯৪৮ সালে ইসরাইল রাষ্ট্রকে হিসেবে স্বীকৃতির পর দু দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক, এমনকি সামরিক সম্পর্কও গড়ে ওঠে। এরপর ১৯৫৭ সালে ইরানের গোয়েন্দা সংস্থা 'সাভাক' প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করেছিল ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ। মূলত মার্কিন সমর্থন আদায়ের জন্য ইরান ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক ধরে রাখায় মনোযোগী হয়।  

ইরানের সরকার ইসরায়েলের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখলেও ইরানের ভেতরে আগে থেকেই ইসরায়েল বিরোধিতা ছিল। ইরানের শাহ শাসন বিরোধী বামপন্থিদের সঙ্গে ফিলিস্তিনি মুক্তি আন্দোলন ফাতাহ এবং এর নেতা ইয়াসির আরাফাতের যোগাযোগ ছিল। অন্যদিকে, আয়াতুল্লাহ খোমেনী এবং তার অনুসারীরাও ফিলিস্তিনে ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিরুদ্ধে ছিল। ১৯৭৯ সালে ইরানে ইসলামি বিপ্লবের পর দু দেশের মধ্যে সম্পর্ক ভেঙ্গে যায়। 

কারণ ক্ষমতায় আসা ইরানের বিপ্লবী সরকার রাষ্ট্রীয়ভাবে ফিলিস্তিনিদের পক্ষ নেয়ার ঘোষণা দেয়। এমনকি তেহরানে ইসরায়েলের দূতাবাসকে ফিলিস্তিনি দূতাবাসে পরিণত করে। এছাড়া ফিলিস্তিনে ইসরায়েল রাষ্ট্রের অস্তিত্বকেও অস্বীকার করে ইরান। ১৯৯০ এর দশকের গোড়ার দিকে শীতল সম্পর্ক রূপ নেয় শত্রুতায় ।

দ্বিপাক্ষিক উত্তেজনা বাড়ার পেছনে থাকা উল্লেখযোগ্য কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে ইরানের পারমাণবিক প্রযুক্তির উন্নয়ন, লেবাননে হিজবুল্লাহ, ফিলিস্তিনের ইসলামিক জিহাদ এবং হামাসের মতো ইসলামপন্থি দলগুলোকে ইরানের সমর্থন। সেই সাথে ইসরায়েলি স্বার্থের বিরুদ্ধে পরোক্ষভাবে হামলায় ইরানের জড়িত থাকার অভিযোগ। যা মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনীতিকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করেছে।  

পাঠকের মন্তব্য

লগইন করুন

ইউজার নেম / ইমেইল
পাসওয়ার্ড
নতুন একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে এখানে ক্লিক করুন