শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ , ১১ জুমাদাউস সানি ১৪৪৬

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

ইউরোপে চীনের বৈদ্যুতিক গাড়ি বিক্রি বাড়ল

নিউজজি ডেস্ক ৩০ অক্টোবর , ২০২৪, ১৩:০০:৫৩

61
  • ছবি: ইন্টারনেট

ঢাকা: চীনে তৈরি বৈদ্যুতিক গাড়ির উপর ইউরোপে অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করা নিয়ে চীন সরকারের সাথে ইউরোপিয়ান কমিশনের চলমান দ্বন্দ্বের প্রেক্ষাপটে জানা গেল সেপ্টেম্বরে ইউরোপের বাজারে চীনা প্রতিষ্ঠানের তৈরি বৈদ্যুতিক গাড়ির বা ইলেকট্রিক  ভেহিকল ( ইভি) বিক্রি উল্লেখযোগ্যহারে বৃদ্ধি পেয়েছে। শুল্ক বিভাগের তথ্য অনুযায়ী সেপ্টেম্বর মাসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ২৭টি দেশে চীন ৬০ হাজার ৫১৭টি বৈদ্যুতিক গাড়ি রপ্তানি করেছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৬১ শতাংশ বেশি।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে কোনো এক মাসে চীন এর চেয়ে বেশি বৈদ্যুতিক গাড়ি রপ্তানি করেছিলো একবারই- ২০২৩ সালের অক্টোবরে। উল্লেখ্য, ঠিক সে সময়েই ইউরোপিয়ান কমিশন চীনের তৈরি বৈদ্যুতিক গাড়ির বিরুদ্ধে ভর্তুকি-বিরোধী আইনে তদন্ত শুরু করে।

ভর্তুকি-বিরোধী তদন্ত শুরু করার পেছনে মূল কারণ হলো চীনের গাড়ি নির্মাতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁরা সরকারি ভর্তুকি নিয়ে বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাণ করে বিধায় ইউরোপের বাজারে প্রতিযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোর চেয়ে তুলনামূলক কম দামে বৈদ্যুতিক গাড়ি অফার করতে পারে। ফলে ইউরোপের বৈদ্যুতিক গাড়ির বাজারে এক অসম প্রতিযোগীতা তৈরি হয়- যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে ইউরোপীয় নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর উপর।

অক্টোবর ২০২৩ থেকে শুরু হওয়া ভর্তুকি-বিরোধী তদন্ত প্রক্রিয়া সম্প্রতি সম্পন্ন হওয়ার পর ইউরোপিয়ান কমিশন ৪৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপের সুপারিশ করে। এরপর চলতি বছরের ৪ অক্টোবর ইইউ-ভুক্ত দেশগুলোর ভোটে চীনে তৈরি বৈদ্যুতিক গাড়ির উপর ৩৫ দশমিক ৩ শতাংশ শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নেয় ইইউ- যা নভেম্বর থেকে কার্যকর হওয়ার কথা। উল্লেখ্য, ইইউ’র ২৭টি দেশের মধ্যে ফ্রান্স, ইতালি ও পোল্যান্ডসহ ১০টি দেশ শুল্ক আরোপের পক্ষে রায় দেয়। বিপক্ষে রায় দেয় ৫টি দেশ এবং ভোটদানে বিরত থাকে ১২টি দেশ।

শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত হলেও ইইউ ও চীন সরকার নিজেদের মধ্যে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে যাতে করে শুল্ক আরোপের পরিবর্তে বিকল্প কোনো সমঝোতায় পৌঁছনো যায়। এক্ষেত্রে ন্যূনতম আমদানি মূল্য বা বিক্রয় মূল্য নির্ধারন করা সমঝোতায় পৌঁছনোর ক্ষেত্রে সম্ভাব্য এক পথ হতে পারে। আরেকটি অপশন হতে পারে আমদানির সর্বোচ্চ পরিমাণ নির্ধারণ করে দেওয়া।

বস্তুত চীন থেকে আমদানিকৃত গাড়ির উপর বিশাল পরিমাণ শুল্ক আরোপের বিষয়টি ইইউ’র পক্ষে এতোটা সহজও নয়। কেননা শীর্ষস্থানীয় ইউরোপীয় গাড়ি নির্মাতাদের অনেকেই এখন চীনের বাজারে নিজেদের শেয়ার বাড়াতে চেষ্টা করে যাচ্ছে। এমনকি জার্মান গাড়ি নির্মাতারাও এখন চীনের বাজারকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে থাকে। উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে চীনের গাড়ির বাজার বেশ দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষ করে চীনের ক্রমবর্ধমান মধ্যবিত্ত শ্রেনীর মধ্যে ব্যক্তিগত গাড়ি থাকাকে ‘মর্যাদার প্রতীক’ হিসেবে দেখা হয়। এখন ইউরোপে চীনের বৈদ্যুতিক গাড়ির উপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করা হলে এর নেতিবাচক প্রভাব ইউরোপীয় নির্মাতাদের উপর পড়তে পারে চীনের বাজারে, এমন সম্ভাবনা কিন্তু থেকেই যায়।

উল্লেখ্য, চলতি বছর চীন সরকার দেশটিতে ইইউ থেকে আমদানিকৃত ব্র্যান্ডি, দুগ্ধজাত পণ্য ও শুকোরের মাংস থেকে তৈরি পণ্যের উপর নিজস্ব তদন্ত প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এই প্রেক্ষাপটে ইউরোপীয় গাড়ি নির্মাতারা চীন সরকারের বিরাগভাজন হবে না, এমনটা হলফ করে বলা যাচ্ছে না।

তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া, রয়টার্স,

নিউজজি/পি.এম

পাঠকের মন্তব্য

লগইন করুন

ইউজার নেম / ইমেইল
পাসওয়ার্ড
নতুন একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে এখানে ক্লিক করুন