বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫, ২৬ আষাঢ় ১৪৩২ , ১৪ মুহররম ১৪৪৭

খেলা
  >
ক্রিকেট

তামিমের চোখে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় তারকা সাকিব

ক্রীড়া ডেস্ক ৯ অক্টোবর , ২০২৪, ১৮:৫৮:০৪

254
  • ছবি: ইন্টারনেট

এক সময় দারুণ বন্ধুত্ব ছিল সাকিব আল হাসান আর তামিম ইকবালের মধ্যে। তবে এ সম্পর্ক বিভিন্ন কারণে রূপ নেয় শুত্রুতে। যদিও প্রকাশ্যে কেউ-ই কিছু বলেননি। সম্প্রতি ভারতের খেলাধুলাবিষয়ক সাময়িকী ‘স্পোর্টস্টার’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারেও বিষয়টি নিয়ে সরাসরি মন্তব্য করেননি তামিম। তবে কথা বলেছেন সাকিবের সঙ্গে তার সম্পর্ক নিয়ে। 

প্রায় দেড় দশক জাতীয় দলে একসঙ্গে খেলেছেন সাকিব-তামিম। ড্রেসিংরুমে বেশ কয়েক বছর তাদের মধ্যে কথা না হলেও সাকিবকে তামিমের চেয়ে ভালো জানেন খুব কম মানুষই। এবার সেই সম্পর্ক নিয়ে তামিম বলেছেন, ‘সম্পর্কের উত্থান-পতন আছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো, কেউ একে অপরের ক্ষতি করছি না। কারণ, দুজনই শেষ পর্যন্ত দেশের হয়েই খেলছি। আমি মিডিয়াতে এ নিয়ে কথা বলিনি কিংবা জনসম্মুখে তাকে কিংবা অন্য কাউকে দোষারোপও করিনি।’ সাকিবের প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘আমি সত্যি সত্যিই বিশ্বাস করি, সাকিব বাংলাদেশের জন্য যা করেছে, সেটা অসাধারণ। তার সঙ্গে সম্পর্ক ভালো থাকুক আর না থাকুক, এটা অস্বীকার করা যায় না। সে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় তারকা।’

সাকিব-তামিমের সম্পর্কে তিক্ততা সৃষ্টি না হলে বাংলাদেশের ক্রিকেট কি আরও এগিয়ে যেত? এ ব্যাপারে তামিম বলেন, ‘হ্যাঁ, অবশ্যই—কোনো সন্দেহ নেই। আমি মনে করি, আমাদের মধ্যে ভালো সম্পর্কটা যদি আরও দীর্ঘায়িত হতো, তাতে বাংলাদেশের ক্রিকেট বদলে যেত। আমরা দুজনই দেশের হয়ে ভালো করেছি, দুজনের মানসিকতাই ইতিবাচক এবং বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য সেরাটাই চাই।’

আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার হয়তো এরই মধ্যে শেষ দেখে ফেলেছে তামিম। গত একটি বছর কেমন কেটেছে, এমন প্রশ্নে তামিম বলেন, তিনি ভেবেছিলেন ২০২৫ চ্যাম্পিয়নস ট্রফি খেলে তারপর ক্যারিয়ার নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। বাকিটা শুনুন তামিমের মুখেই, ‘...তারপর অনেক অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটেছে, যেগুলো মোটেও স্বস্তিদায়ক ছিল না।’

ঠিক কি কি ঘটেছিল। এ নিয়ে তামিম বলেন, ‘অনেক কিছুই ঘটেছে। একাধিক ব্যক্তি এর সঙ্গে জড়িত ছিলেন এবং যে যার ভূমিকা খুব চাতুর্যের সঙ্গে পালন করেছেন। কিন্তু আমি তাদের দোষ দিই না। আজ পর্যন্ত কাউকে দোষারোপ করিনি, ভবিষ্যতেও করব না। তারা জানে, আমার সঙ্গে কী করেছে এবং আমিও জানি, তারা কী করেছে। ব্যাপারটা এ পর্যন্তই থাক। আমি কর্মফলে বিশ্বাস করি এবং কারও খারাপ চাই না। কারণ, একদিন আমাকেও এমনকিছু তাড়া করতে পারে।’

কানপুর টেস্টের আগের দিন টেস্ট ক্যারিয়ারকে গুডবাই বলেন সাকিব। তবে তিনি আসন্ন দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ঘরের মাঠে খেলেন এ সংস্করনের জার্সি তুলে রাখতে চান। যদিও তার ইচ্ছে পূরণ হওয়া নিয়ে জোর শঙ্কায় রয়েছে। তবে তামিম মনে করেন, সাকিবের টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় জানানোর সিদ্ধান্ত সঠিক, ‘সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে অনেক কিছুই লেখা হয়েছে, লোকে এ নিয়ে অনেক কথাই বলেছে। যে কারোরই-অধিনায়ক, কোচ ও বোর্ড—নিজস্ব মতামত আছে। যখন সত্যিই মনে হবে সরে যাওয়ার এটাই সময়, তখন সে অনুযায়ীই সিদ্ধান্ত নিতে হয়। সে যদি নিজের ইচ্ছায় এই সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে সেটা সঠিক এবং আমাদের সবারই এটাকে সম্মান জানানো উচিত।’

তামিমের চোখে এই দীর্ঘ ক্যারিয়ারে সাকিব তার সেরা খেলাটা খেলেছেন ২০০৯ সালের এক ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্টে, ‘২০০৯ সাল, ঢাকায় শ্রীলঙ্কা ও জিম্বাবুয়ের সঙ্গে ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্ট। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে আমরা প্রথম ম্যাচে হেরে যাই। ফাইনালে উঠতে আমাদের শ্রীলঙ্কাকে বোনাস পয়েন্টসহ হারাতে হতো। বৃষ্টি নামায় ম্যাচের দৈর্ঘ্য ৩১ ওভারে নামিয়ে আনা হয়। বোনাস পয়েন্টসহ জিততে ২৫ ওভারের মধ্যে শ্রীলঙ্কার ১৪৭ রান তাড়া করতে হতো।’

তামিম আরও বলেন, ‘বোনাস পয়েন্টসহ জয় ছিল তখন আমাদের কল্পনার অতীত। ১১ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর সাকিব ব্যাটিংয়ে নামে। সে ৬৯ বলে ৯২ রানের অবিশ্বাস্য ইনিংস খেলে ২৩.৫ ওভারে দলকে জিতিয়ে দেয়। আমরা শুধু ম্যাচটাই জিতিনি, বোনাস পয়েন্টসহ ফাইনালেও উঠেছিলাম। ড্রেসিংরুমে বসে মনে হয়েছিল জয়ের সুযোগ আছে, তবে ভাবিনি আমরা বোনাস পয়েন্টসহ জিতব। কিন্তু সাকিবের মাথায় অন্য কিছু ছিল। আমি সত্যিই মনে করি, (সাকিবের) সেই অপরাজিত ৯২ রান বাংলাদেশের যেকোনো ক্রিকেটারেরই সেরা ওয়ানডে ইনিংস। আসলে এটাই সাকিব আল হাসান। অন্যভাবে ভাবতে পারার ক্ষমতাই তাকে আজ এই পর্যায়ে নিয়ে এসেছে। ওই ইনিংসটি আমার কাছে খুব খুব উঁচুমানের।’

নিউজজি/সিআর

পাঠকের মন্তব্য

লগইন করুন

ইউজার নেম / ইমেইল
পাসওয়ার্ড
নতুন একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে এখানে ক্লিক করুন