রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫, ৫ শ্রাবণ ১৪৩২ , ২৪ মুহররম ১৪৪৭

খেলা

তানভীরের ঘূর্ণিতে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে সমতায় ফিরল বাংলাদেশ

ক্রীড়া ডেস্ক জুলাই ৫, ২০২৫, ২৩:২৪:০৫

181
  • ছবি: ইন্টারনেট

একটা সময় শঙ্কা ভর করেছিল বাংলাদেশ শিবিরে। তবে তানভীর ইসলামের ঘূর্ণিতে ম্যাচে ফেরে বাংলাদেশ। এ স্পিনার নিজের দ্বিতীয় ম্যাচেই পেয়ে যান ৫ উইকেটের দেখা। তাই টাইগারদের জয় একবারে হাতের নাগালের মধ্যে চলে আসে। তবে  শেষদিকে ভয় ধরিয়ে দেন লিয়ানাগে। নবম উইকেটে চামিরাকে নিয়ে ৫৩ বলে ৫৮ রানের জুটি গড়েন তিনি। একসময় ১৭ বলে ২১ রানের সমীকরণে চলে আসে ম্যাচ। শেষ পর্যন্ত চামিরাকে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে স্বস্তি এনে দেন মোস্তাফিজ। শেষে  ১৬ রানের জয়টা নিশ্চিত করেন তানজিম। এর ফলে ৩ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ১-১ সমতায় ফিরল মেহেদী হাসান মিরাজের দল।

 

কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়াম টস জিতে শনিবার আগে ব্যাট করতে নেমে ৪৫.৫ ওভারে ২৪৮ রানেই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৬৭ রান করেন ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন।  পরে বল হাতে ৪৮.৫ ওভারে ২৩২ রানে শ্রীলঙ্কাকে গুটিয়ে দেয় টিম টাইগার্স। 

 

১৪৮ রানের পুঁজি নিয়ে শনিবার শুরুতেই উইকেটের দেখা পায় বাংলাদেশ। ইনিংসের ২য় ওভার করতে আসা তানজিম হাসান সাকিবের শেষ বলে এলবিডব্লু হন ৮ বলে ৫ রান করা পাথুম নিশাঙ্কা। তবে এরপর থেকে স্বাচ্ছন্দ্যেই খেলে শ্রীলঙ্কা। নিশান মাদুস্কা ও কুশাল মেন্ডিসের জুটিতে এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা। এই জুটি ভাঙতে সপ্তম ওভারেই তানভীর হাসানকে বোলিংয়ে নিয়ে আসেন অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ। তবে এ স্পিনার নিজের প্রথম ওভারেই দিয়ে বসেন ১৭ রান। 

 

পরের ওভারে মোস্তাফিজুর রহমান বেশ খরুচে। এ সুযোগে মাত্র ২০ বলে ফিফটি তুলে নেন কুশাল মেন্ডিস।  অবশেষে ১০ম ওভারে বিপজ্জনক জুটি ভাঙেন তানভীর। এ ওভারের তৃতীয় বলে মাদুস্কাকে তুলে নেন  তানভীর। ইনসাইড আউট খেলতে গিয়ে ব্যাটে ঠিকমতো পাননি। তাওহিদ হৃদয়কে ক্যাচ দেন পয়েন্টে। ২৫ বলে ১৭ রানে ফিরেন মাদুস্কা। এর মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় উইকেটে তাদের ৪৫ বলে ৬৯ রানের জুটি ভাঙে।

 

মাদুস্কাকে ফেরানোর পর ৩১ বলে ৫৬ রান করা মেন্ডিসকেও এলবিডব্লু করে ফেরান তানভীর। মূলত তার জোড়া শিকারে ম্যাচে ফেরে বাংলাদেশ। 

 

শ্রীলঙ্কার ওপর চাপ বাড়াতে দুেই প্রান্ত থেকেই স্পিন আক্রমণ চালায় বাংলাদেশ। তাতে দ্রুত সময়ের মধ্যে আরও সফলতা পায় বাংলাদেশ। শামীম হোসাইন পাটোয়ারী ফিরিয়ে দেন চারিথ আসালাঙ্কাকে। ১৭ বলে ৬ রান করে ফেরেন আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান। 

 

শামীমের পর আবারও লঙ্কান শিবিরে আঘাত করেন তানভীর। এ স্পিনার এবার তুলে নেন কামিন্দু মেন্ডিসকে। কিছুক্ষণ পরেই

 

তানভীর তুলে নেন ভেল্লালাগে।  তার বলের লেন্থ ছোট করে দেন। ঠেকিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলেও তা ভেল্লালাগের ব্যাট থেকে প্যাড হয়ে যায় উইকেটকিপার জাকেরের গ্লাভসে। ১০ বলে ১ রান করে আউট হয়ন ভেল্লালাগে। 

 

তানভীরের উইকেট উল্লাস না ফুরাতেই অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ ৫ ম্যাচ পর পেলেন সাফল্য হাসারাঙ্গাকে ফিরিয়ে। তার বলে তুলে মেরেছিলেন হাসারাঙ্গা, কিন্তু তা মিড উইকেটে বাউন্ডারির কাছে দাঁড়িয়ে ক্যাচ নেন তানজিম। ১৬ বলে ১৩ রান করে ফেরেন হাসারাঙ্গা। 

 

নিজের স্পেলের শেষ ওভারে আবারও উইকেটের দেখা পেলেন তানভীর। মাহেশ থিকসেনা মিড উইকেটে ক্যাচ তুলে দিলে প্রথমবার ওয়ানডে ৫ম উইকেটের দেখা পেয়ে যান তানভীর। শোষ দিকে টাইগারদের ভয়  ধরান লিয়ানাগে। তবে তার দারুন ইনিংস ৪৮তম ওভারে থামিয়ে দেন মোস্তাফিজ। শেষ পর্যন্ত পরের টাইগার জয় নিশ্চিত করেন তানজিদ সাকিব।

 

এরআগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম মাত্র ৯ রান করে ফিরে যান। তিনে নামা অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তও ১৪ রানের বেশি করতে পারেননি। ১২তম ওভারে চারিথ আসালঙ্কাকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে কাউ কর্ণারে ধরা পড়েন তিনি।  তবে আরেক ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন ধরে রাখেন এক প্রান্ত। ৬৯ বলে ৬৭ রানের দারুণ ইনিংস খেলেন এই বাঁহাতি ব্যাটার। কিন্তু তার বিদায়ের পর হঠাৎ করেই ব্যাটিং বিপর্যয় নামে।

 

অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ (৯) ফেরেন দ্রুত। এরপরও কিছুটা আশা জাগান তাওহিদ হৃদয় ও শামীম হোসেন পাটোয়ারী। কিন্তু শামীম থিতু হয়ে ফিরে যান ২২ রানে। এরপর কিছুটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন হৃদয় ও জাকের আলী অনিক। ষষ্ঠ উইকেটে আসে ৪৫ রানের জুটি।

 

তাওহিদ হৃদয় ৬৯ বলে ৫১ রানের ইনিংসে  ক্যারিয়ারের অষ্টম ওয়ানডে ফিফটির দেখা পডান। কিন্তু সেট হওয়ার পরও ইনিংসটা বড় করতে পারেননি। দ্বিতীয় রান নেওয়ার চেষ্টায় রানআউট হন তিনি। তার বিদায়ের পর দ্রুত ভেঙে পড়ে বাংলাদেশ। মাত্র ১৪ রানের মধ্যে ৪ উইকেট হারায় লাল-সবুজরা।

 

শেষদিকে কিছুটা ঝড় তোলেন তানজিম হাসান সাকিব। ২১ বলে ৩৩ রানের ইনিংসে দুটি চার ও দুটি ছক্কা হাঁকান এই তরুণ। তবে মোস্তাফিজুর রহমান (০), তানভীর ইসলাম (৪), হাসান মাহমুদ (০) কেউই তাকে যোগ্য সঙ্গ দিতে পারেননি। যে কারণে ১৪৮ রানে থামে টাইগারদের ইনিংস।  

 

শ্রীলঙ্কার হয়ে  চার উইকেট নেন আসিথা ফার্নান্দো। তিনটি উইকেট নেন ভানিন্দু হাসারাঙ্গা।

  সংক্ষিপ্ত স্কোর বাংলাদেশ: ৪৫.৫ ওভারে ২৪৮ (পারভেজ ৬৭, হৃদয় ৫১, তানজিম ৩৩*, জাকের ২৪, শামীম ২২; আসিতা ৪/৩৫, হাসারাঙ্গা ৩/৬০, আসালাঙ্কা ১/২৪, চামিরা ১/৩৭)। শ্রীলঙ্কা: ৪৮.৫ ওভারে ২৩২ (লিয়ানাগে ৭৮, মেন্ডিস ৫৬, কামিন্দু ৩৩; তানভীর ৫/৩৯, তানজিম ২/৩৪, শামীম ১/২২, মিরাজ ১/৩৭, মোস্তাফিজ ১/৫৬)। ফল: বাংলাদেশ ১৬ রানে জয়ী। ম্যাচ সেরা: তানভীর ইসলাম। সিরিজ: ৩ ম্যাচের সিরিজে ১–১ সমতা।

নিউজজি/সিআর

পাঠকের মন্তব্য

লগইন করুন

ইউজার নেম / ইমেইল
পাসওয়ার্ড
নতুন একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে এখানে ক্লিক করুন