সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫, ৩ চৈত্র ১৪৩১ , ১৭ রমজান ১৪৪৬

খেলা

রেকর্ড গড়া জয়ে আবারও চ‍্যাম্পিয়ন বরিশাল

ক্রীড়া ডেস্ক ফেব্রুয়ারী ৭, ২০২৫, ২২:২৮:৪০

176
  • ছবি: ক্রিকইনফো

জিততে হলে গড়তে হবে রেকর্ড। সে চেষ্টার শুরু দুর্দান্ত করেন তামিম ইকবাল। এক পর্যায়ে তিনি ফিরে গেলে হঠাৎ করেই বিপদে পড়ে ফরচুন বরিশাল। তবে হাল ছাড়েনি দলটির ব্যাটাররা। বারবার রঙ পাল্টানো ম‍্যাচের শেষটায় নায়ক রিশাদ হোসেন। শেষ দুই ওভারে তার দুটি ছক্কায় স্নায়ুর কঠিন পরীক্ষায় উতরে গিয়ে বিপিএলের শিরোপা ধরে রাখল ফরচুন বরিশাল।

শুক্রবার মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে বিপিএলের ফাইনালে ৩ বল এবং ৩ উইকেট হাতে রেখেই চিটাগং কিংসকে হারিয়ে বিপিএলে টানা দ্বিতীয়বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে তামিম ইকবালের বরিশাল। বিপিএল ইতিহাসে সর্বোচ্চ ১৯৫ রানের লক্ষ্য তাড়ায় শিরোপা জিতেছে দলটি।

রান তাড়ায় কয়েক ওভারের ব্যবধান তামিম, ডেভিড মালান, হৃদয় এবং মুশফিকুর রহিমের উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে বরিশাল। তবে মাথা ঠান্ডা রেখে দায়িত্ব পালন করেন কাইল মেয়ার্স। বরিশালকে এগিয়ে নেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই ব্যাটার। ম্যাচ জিততে শেষ ২৪ বলে বরিশালের প্রয়োজন ছিল ৩২ রান। উইকেটে তখনও মেয়ার্স এবং মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। মাঠে নামার অপেক্ষায় ছিলেন মোহাম্মদ নবি, রিশাদ হোসেনরা। এমন ব্যাটিং অর্ডার থাকায় সমীকরণটা খুব বেশি কঠিন হওয়ার কথা ছিল না বরিশালের জন্য। এমন সময় একই ওভারে ‘জীবন’ পেয়েছেন মেয়ার্স ও মাহমুদউল্লাহ। বল হাওয়ায় ভাসলেও চিটাগংয়ের কোন ফিল্ডারই সেটা লুফে নিতে পারেননি। যদিও দুটি ক্যাচ ছিল নো ম্যানস ল্যান্ডে।

যদিও পরের ওভারে ৪৬ রানের ইনিংস খেলা মেয়ার্সকে বিদায় করেন শরিফুল। একই ওভারে মাহমুদউল্লাহকে ফিরিয়ে চিটাগংকে ম্যাচে ফেরান বাঁহাতি এই পেসার। ১২ বলে ২০ রানের সমীকরণ মেলাতে গিয়ে রিশাদকে রেখে ১৯তম ওভারে আউট হয়েছেন নবি। ফলে শেষ ওভারে বরিশালের প্রয়োজন ছিল ৮ রান। হুসাইন তালাতের প্রথম বলেই ছক্কা মেরে বরিশালকে জয়ের খুব কাছে নিয়ে যান রিশাদ। পরের বলে সিঙ্গেল নিয়ে দুই দলের রান সমান করেন ডানহাতি এই ব্যাটার। ঠিক সে সময় একটি ডট বল করেন  তানভীর ইসলাম। যদিও পরের বলে ওয়াইড দিয়ে বরিশালের জয় নিশ্চিত করেন তালাত। ফলে চিটাগংকে ৩ উইকেট হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো বিপিএলের চ্যাম্পিয়ন শিরোপা ঘরে তুলল বরিশাল। বিপিএল ইতিহাসে ফাইনালে এটিই সর্বোচ্চ রান তাড়া করে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার রেকর্ড। উল্টো দিকে এক যুগ পর বিপিএলে ফিরে আরও একবার স্বপ্নভঙ্গ হলো চিটাগংয়ের।

এরআগে ১২১ রানে জুটিতে চিটাগংকে দারুণ ভিত গড়ে দেন খাওয়াজা নাফে ও পারভেজ হোসেন। বিপিএলের ১১ আসরে ফাইনালে শতরানের উদ্বোধনী জুটি এটিই প্রথম।। গত বছর চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পথে বরিশালের হয়ে তামিম ইকবাল ও মেহেদী হাসান মিরাজ ৭৬ রানের জুটি গড়েছিলেন। আজ সেটিকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ওপেনিং জুটিতে পরিণত করেছেন ইমন-নাফি। টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে চিটাগংয়ের এই দুই ওপেনার ৭৬ বলে ১২১ রান তুলেছেন। দুর্দান্ত এই জুটি ভাঙে নাফির বিদায়ে। পাকিস্তানি এই তরুণ ব্যাটার ৪৪ বলে তিন ছক্কা ও সাত চারে ৬৬ রান করেছেন। এর আগে ৩৭ বলে হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করেন নাফে। এদিকে টুর্নামেন্টজুড়ে চিটাগংয়ের ব্যাটিংয়ে প্রধান স্তম্ভে পরিণত হওয়া ক্লার্ক ফাইনালেও ঝোড়ো ব্যাটিং করেন। তবে অপরপ্রান্তে বিপরীত মেজাজে ব্যাটিং করেন ইমন। ৩০ বলে ব্যক্তিগত ফিফটি পেলেও তিনি পরের ১৯ বলে করেছেন ২৮ রান। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে ৪৯ বলে ৬টি চার ও ৪ ছক্কায় ৭৮ রান করেন ইমন।

গ্রাহাম ক্লার্কও ফিফটির পথেই ছিলেন। কিন্তু তার উইকেটটি কাটা পড়ে রানআউটের ফাঁদে পড়ে। এর আগে ২৩ বলে ২টি চার ও ৩ ছক্কায় ৪৪ রান করেন ইংল্যান্ডের এই ডানহাতি ব্যাটার। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভার শেষে চিটাগংয়ের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩ উইকেটে ১৯৪ রান। 

বরিশালের হয়ে একটি করে উইকেট শিকার করেন এবাদত ও মোহাম্মদ আলি। শেষ পর্যন্ত তাদের নৈপুণ্যে বড় লক্ষ্যই পায় বরিশাল। তারপরও ব্যাটার সৌজন্যে ঠিকই টানা বিপিএল চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আনন্দে মাতে দলটি। 

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

চিটাগং কিংস: ২০ ওভারে ১৯৪/৩ (নাফে ৬৬, পারভেজ ৭৮*, ক্লার্ক ৪৪, শামীম ২*, তালাত ০*; মেয়ার্স ৪-০-৩৫-০, আলি ৪-০-২১-১, তানভির ২-০-৪০-০, ইবাদত ৪-০-৩৫-১, নাবি ৪-০-৩৪-০, রিশাদ ২-০-৩৪-০)।

ফরচুন বরিশাল: ১৯.২ ওভারে ১৯৫/৭(তামিম ৫৪, হৃদয় ৩২, মালান ১, মেয়ার্স ৪৬, মুশফিক ১৬, মাহমুদউল্লাহ ৭, নাবি ৪, রিশাদ ; ফার্নান্দো ৪-০-৪২-১, সানি ২-০-১৯-০, শরিফুল ৪-০-৩৪-৪, খালেদ ৪-০-২৯-০, তালাত ৩.৩-০-৪৪-০, নাঈম ২-০-১৮-২)।

ফল: ফরচুন বরিশাল ৩ উইকেটে জয়ী

ম্যাচ সেরা: তামিম ইকবাল।

নিউজজি/সিআর

পাঠকের মন্তব্য

লগইন করুন

ইউজার নেম / ইমেইল
পাসওয়ার্ড
নতুন একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে এখানে ক্লিক করুন