মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারি ২০২৫, ৮ মাঘ ১৪৩১ , ২১ রজব ১৪৪৬

খেলা

১৫ বছর পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে টেস্ট জয় বাংলাদেশের

ক্রীড়া ডেস্ক ডিসেম্বর ৪, ২০২৪, ০৮:৪৯:০১

158
  • ছবি: ক্রিকইনফো

আগের দিন জয়ের আভাস পেয়েছিল বাংলাদেশ। মঙ্গলবার জাকের আলি অনিকের স্মরণীয় ইনিংসের পর তাইজুল ইসলামের বল হাতে জ্বলে ওঠার পর সেটা ধরার দেওয়ার খুব কাছে চলে এসেছিল। শেষ পর্যন্ত তিন পেসারের দাপটে ১৫ বছর পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে টেস্ট জয় করল বাংলাদেশ। এরফলে দুই ম্যাচের সিরিজ ১-১ এ ড্রও করল টিম টাইগার্স।

মঙ্গলবার জ্যামাইকা টেস্টে বাংলাদেশ জিতে  ১০১ রানে। আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের বর্তমান চক্রও তারা শেষ করতে পারল জয় দিয়ে।

চতুর্থ দিনে মঙ্গলবার দলকে বলতে গেলে ব্যাট হাতে বাংলাদেশ দলকে একাই টেনে নেন জাকের আলি। তার ৯১ রানের ইনিংসের সৌজন্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ২৮৭। কিন্তু তাদের ইনিংস গুটিয়ে যায় ১৮৫ রানেই। ৫০ রানে ৫ উইকেট শিকার করেন তাইজুল। ম্যাচে ৬ উইকেটের পাশাপাশি ব্যাট হাতে দুই ইনিংসেই অবদান রেখে ম্যান দা ম্যাচও তিনিই।

সকালে ৫ উইকেটে ১৯৩ রান নিয়ে দিন শুরু করে বাংলাদেশ। আগের দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান জাকের ও তাইজুল আরেকটু এগিয়ে নেন দলকে। শেষ পর্যন্ত তাইজুলের বিদায়ে ভাঙে এ জুটি। তাকে ফেরান আলজারি জোসেফ।

আগের দিন অসুস্থতার কারণে মঙ্গলবার মুমিনুল হক ব্যাটিংয়ে নামেন আট নম্বরে। কিন্তু প্রথম ইনিংসের মতোই আউট হয়ে যান কোনো রান না করেই। বাংলাদেশের রান তখন ৭ উইকেটে ২১১। জাকের খেলছেন ৭২ বলে ৩৯ রান করে। ঠিক সে সময় এ ব্যাটার খোলস ছেড়ে বের হন।
চার-ছক্কার স্রোতে ভেসে সেঞ্চুরির সম্ভাবনাও জাগিয়ে তোলেন তিনি। শেষ পর্যন্ত তার সেঞ্চুরিটা হয়নি তার। আউট হয়ে যান শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে। তবে ৮ চার ও ৫ ছক্কায় ১০৫ বলে ৯১ রানের ইনিংসটি বাংলাদেশের স্বপ্নের পালে দেয় জোর হাওয়া।

মঙ্গলবার বাংলাদেশ যে ৭৫ রান তোলে, এর ৬২-ই আসে জাকেরের ব্যাট থেকে। এই মাঠে ২১২ রানের বেশি তাড়া করে জয়ের নজির নেই। সেখানে ২৮৭ রানের লক্ষ্য তো অনেক বেশিই। ওয়েস্ট ইন্ডিজও পারেনি নতুন ইতিহাস লিখতে।

লাঞ্চের ঠিক আগের ওভারে আক্রমণে এসেই বাংলাদেশকে প্রথম উইকেট এনে দেন তাইজুল। ৬ রান করে বিদায় নেন মিকাইল লুই। ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক ক্রেইগ ব্যাথওয়েট অবশ্য বেশ ইতিবাচক শুরু করেন। স্বভাববিরুদ্ধ পথে হেঁটে আগ্রাসী কিছু শট খেলেন তিনি। ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে ছক্কা মারেন তাইজুলকে। বাঁহাতি এই স্পিনার পরে ঠিকই শোধ তোলেন। তার তীক্ষ্ণ টার্ন ও বাউন্সে ৪৩ রানে বিদায় নেন ব্র্যাথওয়েট। এর আগেই কেসি কার্টিকে ফেরান তাসকিন আহমেদ।

এদিকে বিশাল টার্ন করা ডেলিভারিতে তাইজুল বোল্ড করে ফেরান আলিক আথানেজকে। কাভেম হজ অবশ্য লড়াই করছিলেন। তবে তাকেও ৫৫ রানে থামান তাইজুল। জশুয়া দা সিলভাকে ফিরিয়ে তাইজুল পূর্ণ করেন পাঁচ উইকেট। টেস্ট ক্যারিয়ারে এই স্বাদ পেলেন তিনি পঞ্চদশবার।

শেষ দিকে জ্বলে ওঠেন পেসার হাসান মাহমুদ। এক ওভারেই ধরেন দুটি শিকার। শামার জোসেফকে দারুণ ইয়র্কারে বোল্ড করে ম্যাচের ইতি টানেন নাহিদ রানা। ক্যারিবীয়দের শেষ উইকেট তুলে নেন প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট পাওয়া নাহিদ রানা।

এই প্রথম এক পঞ্জিকাবর্ষে দেশের বাইরে তিনটি টেস্ট জিততে পারল বাংলাদেশ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ১৬৪

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনিংস: ১৪৬

বাংলাদেশ ২য় ইনিংস: ৫৯.৫ ওভারে ২৬৮ (আগের দিন ১৯৩/৫) (জাকের ৯১, তাইজুল ১৪, মুমিনুল ০, হাসান ৩, তাসকিন ০, নাহিদ ১*; সিলস ১৫.১-৩-৪৬-১, আলজারি জোসেফ ১৫.৫-১-৭৭-৩, শামার জোসেফ ১২-০-৮০-২, গ্রেভস ৮-১-২০-১, হজ ১-০-৪-০, রোচ ১০-০-৩৬-৩)।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২য় ইনিংস: ৫০ ওভারে ১৮৫ (ব্র্যাথওয়েট ৪৩, লুই ৬, কার্টি ১৪, হজ ৫৫, আথানেজ ৫, গ্রেভস ২০, জশুয়া ১২, আলজারি জোসেফ ৫, রোচ ৮, সিলস ১*, শামার জোসেফ ৮; হাসান ৬-০-২০-২, তাসকিন ১০-০-৪৫-২, তাইজুল ১৭-৫-৫০-৫, নাহিদ ৯-২-৩২-১, মিরাজ ৮-০-৩১-০)।

ফল: বাংলাদেশ ১০১ রানে জয়ী।

সিরিজ: দুই ম্যাচের সিরিজ ১-১ ড্র।

ম্যাচ সেরা: তাইজুল ইসলাম।

সিরিজসেরা: তাসকিন আহমেদ ও জেডেন সিলস।

নিউজজি/সিআর

পাঠকের মন্তব্য

লগইন করুন

ইউজার নেম / ইমেইল
পাসওয়ার্ড
নতুন একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে এখানে ক্লিক করুন