শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ , ১২ জুমাদাউস সানি ১৪৪৬

খেলা

বিসিবির পরিচালনা পরিষদ ভেঙ্গে দিয়ে দুর্ণীতি-অনিয়মের বিচার দাবি

স্পোর্টস রিপোর্টার আগস্ট ৬, ২০২৪, ২০:৪৮:৫৩

3K
  • মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে উপেক্ষিত ক্রিকেট সংগঠকরা। ছবি-শামীম চৌধুরী

এক সময়ে রাজনৈতিক ভেদাভেদ ভুলে ক্রিকেট বোর্ডের সকল কমিটিতে পরীক্ষিত সংগঠকদের বিচরণ ছিল। ২০০৮ সালে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে অনুষ্ঠিত বিসিবির পরিচালনা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি পন্থী প্রার্থীদের লড়াই সমতা হওয়ায় ২০১২ সাল পর্যন্ত বিসিবিতে ছিল গণতান্ত্রিক চর্চা। 

তবে ২০১৩ সালে বিসিবির নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সমর্থিত সংগঠক ছাড়া বিসিবির কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত করা হয়নি ভিন্ন মতাবলম্বী কোনো ক্রিকেট সংগঠককে। এক এক করে ভিন্ন রাজনৈতিক মতাবলম্বী পরীক্ষিত সংগঠকদের ক্লাবসমূহকে অবনমন করিয়ে সেই সব ক্লাবসমূহকে সিসিডিএম থেকে বাদ দেয়া হয়েছে।

ছাত্র-জনতার গণ অভ্যুন্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হওয়ায় বিসিবির পরিচালকরা দিয়েছেন গা ঢাকা। এই সুযোগে ১১ বছর বিসিবির বাইরে থাকা উপেক্ষিত এইসব ক্রীড়া সংগঠকরা মঙ্গলবার মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে বিসিবির প্রশাসনিক অফিসে শো ডাউন করেছে।

বিসিবির সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক এবং গ্র্যাউন্ডস এন্ড ফ্যাসিলিটিজ কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বাবু'র নেতৃত্বে বিসিবির সাবেক কাউন্সিলর এবং গেট ল' এন্ড সিকিউরিটি কমিটির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান তপু, কোয়াব সাধারণ সম্পাদক, ম্যাচ রেফারি এবং বিসিবির কাউন্সিলর দেবব্রত পাল, বিসিবির কাউন্সিলর এবং প্রাইম দোলেশ্বর ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক হোসেন, বিসিবির বাউন্সিলর এবং পারটেক্স স্পোর্টিং ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন, মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের ক্রিকেট কমিটির সদস্য তারিকুল ইসলাম টিটু, লিজেন্ড অব রূপগঞ্জের ম্যানেজার সাব্বির আহমেদ রুবেল, ম্যাচ রেফারি মাহবুবউল্লাহ, বিসিবির লজিস্টিকস কমিটির সাবেক কর্মকর্তা বোরহানুল ইসলাম পাপ্পু, খেলাঘর ক্রীড়া সংঘের কর্মকর্তা মিজানুর রহমান, প্রান্তিক ক্রীড়া চক্রের কর্মকর্তা নাজমুল কবির সেন্টু, ইন্দিরা রোড ক্রীড়া চক্রের কর্মকর্তা আবদুল মজিদ সহ দুই শতাাধিক সংগঠক বিসিবির কার্যালয়ে শো ডাউন করেছেন।

শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে বিসিবির সভাকক্ষে বসে তারা ভবিষ্যত করণীয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। অবিলম্বে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) এর পরিচালনা পরিষদ ভেঙ্গে দিয়ে যৌগ্য এবং উপেক্ষিত সংগঠকদের বিসিবি পরিচালনার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। রাজনৈতিক ভেদাভেদ ভুলে যোগ্য এবং পরীক্ষিত সংগঠকদের দিয়ে বিসিবি পরিচালনার অঙ্গীকার করেছেন তাঁরা।পাশাপাশি গত ১৫ বছর আওয়ামী লীগ শাসনামলে বিসিবির সকল আর্থিক দুর্ণীতি এবং নানা অনিয়মের চিত্র জনসমক্ষে এনে দুর্ণীতিবাজদের বিচারের দাবি অন্তবর্তীকালীন সরকারের কাছে জানিয়েছেন উপেক্ষিত ক্রিকেট সংগঠকরা।

 উপেক্ষিত ক্রিকেট সংগঠকদের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক এবং সাবেক প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু, সাবেক অধিনায়ক এবং নির্বাচক হাবিবুল বাশার সুমন, জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার শাহাদাত হোসেন রাজীব। 

এ মাসে বাংলাদেশ ‌'এ' দল এবং বাংলাদেশ দলের পাকিস্তান সফর এবং  আগামী অক্টোবরে বাংলাদেশের মাটিতে অনুষ্ঠেয় নারী টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজন নির্বিঘ্নে অনুষ্ঠানের জন্য সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন বিসিবির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বাবু-‘ক্রিকেট শুধু কিছু লোকের নয়, পুরো বাংলাদেশের।ক্রিকেটকে দিয়ে বাংলাদেশকে চিনেছে বিশ্ব। সুতরাং ক্রিকেট যেনো বিঘ্ন না হয় সেদিকে সবার সহযোগিতা চাই।’ পরিচালনা পরিষদের অনুপস্থিতিতে বিসিবির কর্মকান্ড চালিয়ে নিতে বিসিবিকে বেতনভুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মোহামেডানের কর্মকর্তা তারিকুল ইসলাম টিটু। 

মিনহাজুল আবেদিন নান্নু গণমাধ্যমকে বলেছেন -‘বিসিবিতে সুশাসন প্রতিষ্ঠা হোক।’ আর হাবিবুলের কথা-‘আমরা নতুন করে ভালো কিছুর স্বপ্ন দেখছি। আমি আশাবাদী যে আমাদের যেসব প্রোগ্রামগুলো ছিল- সেগুলো সবকিছু ঠিকমতো চলবে। কারণ, সামনে আমাদের অনেক গুরুত্বপূর্ণ সময়। অনেক খেলা আছে, আমাদের বিশ্বকাপ আছে, আমাদের জাতীয় দলের সফর আছে।’

মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে বিসিবির ম্যানেজমেন্ট অফিসে তাঁরা এলে বিসিবির পুরোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাদেরকে স্বাগত জানান। উপেক্ষিত সংগঠকরা বিসিবির কর্মকান্ডে ফিরে এলে তাদেরকে সব ধরণের সহায়তা করার আশ্বাস দিয়েছেন এইসব কর্মকর্তা, কর্মচারীরা। 

পাঠকের মন্তব্য

লগইন করুন

ইউজার নেম / ইমেইল
পাসওয়ার্ড
নতুন একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে এখানে ক্লিক করুন