শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫, ৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ , ২৫ জিলকদ ১৪৪৬

খেলা

মেসির কান্না-হাসির ফাইনাল জিতে কোপায় আর্জেন্টিনার রেকর্ড ট্রফি

শামীম চৌধুরী জুলাই ১৫, ২০২৪, ১০:৩৫:৩২

402
  • কোপার শিরোপা হাতে আর্জেন্টিনার উৎসব। ছবি-ফেসবুক

আর্জেন্টিনা ১ : কলাম্বিয়া ০

চার বছর আগে ব্রাজিলের মাঠ থেকে ব্রাজিলকে হারিয়ে কোপা আমেরিকায় উরুগুয়ের সর্বাধিক ট্রফি জয়ের (১৫টি) রেকর্ড স্পর্শ করেছে আর্জেন্টিনা।

২৮ বছর পর মেসির নেতৃত্বে কোপার শিরোপা পুনরুদ্ধারে পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন এই আসরে এককভাবে শিরোপা সাফল্যে চোখ ছিল আর্জেন্টিনার।

যুক্তরাষ্ট্রের মিয়ামির হার্ড রক স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ফাইনালে অতিরিক্ত সময়ের গোলে কলাম্বিয়াকে ১-০-তে হারিয়ে রেকর্ড ১৬তম শিরোপা জয়ের উৎসব করেছে আর্জেন্টিনা। ৪ বছর আগে মেসির নেতৃত্ব আর্জেন্টিনা সমৃদ্ধ অতীত ফিরে পেয়েছে কোপা আমেরিকা জিতে।

এর পর বিশ্বকাপ এবং পুনরায় কোপা আমেরিকা। ফিফার মেগা আসরে শিরোপা সাফল্যে অন্য উচ্চতায় এখন মেসি'র আর্জেন্টি। দীর্ঘদিনের বন্ধু ডি মারিয়ার ফেয়ারওয়েল ম্যাচে কোপা আমেরিকা জয় উপহার দিতে পেরে সে কি খুশি মেসি।  

এক দিন আগে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্র্যাম্প নির্বাচনি জনসভায় খেয়েছেন গুলি। সেই ঘটনার রেশ থাকতে থাকতে মিয়ামিতে ঘটেছে অনাকাঙ্খিত ঘটনা। বাংলাদেশ সময় সকাল ৬টায় শুরু হওয়ার কথা ছিল কোপা আমেরিকার ফাইনাল। তবে সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের মিয়ামির হার্ড রক স্টেডিয়ামে নিরাপত্তা বলয় ভেঙ্গে কলাম্বিয়া সমর্থকরা স্টেডিয়ামে জোর করে ঢুকে পড়ায় তৈরি হয়েছে বিশৃঙ্খল পরিবেশ।  টিকিট ছাড়াই দর্শকদের  ঢুকে পড়ার কারণে সময় মতো খেলা শুরু করতে বিলম্ব হয়েছে ৮০ মিনিট!  

যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠারনত কোপা আমেরিকায় আর্জেন্টিনার প্রতিটি ম্যাচে স্টেডিয়ামের দখল ছিল আর্জেন্টিনা সমর্থকদের। ফাইনালে সেখানে ছেয়ে গেছে হলুদে। কোপার সবচেয়ে সফল আর্জেন্টিনার লক্ষ্য যেখানে ১৬তম শিরোপা। সেখানে ২৩ বছর পর দ্বিতীয় শিরোপার খোঁজে কলাম্বিয়া দর্শকদের মতো তাদের ফুটবল দলও খেলেছে দৈহিক শক্তি প্রয়োগ করে। 

আর্জেন্টিনার প্রাণ ভোমরা মেসির পায়ে দুবার চার্জ করে তাকে মাঠের বাইরে বের করে দিতে বাধ্য করেছে কলাম্বিয়ার ডিফেন্ডাররা। খেলার ৩৫ এবং ৬৫ মিনিটে দুবার পায়ে চোট পেয়ে মাঠ ছেড়েছেন মেসি। ডাগ আউটে বসে ব্যাথায় কেঁদেছেন। তাতেই নির্ধারিত ৯০ মিনিট আর্জেন্টিনার আক্রমণ সামাল দিয়ে সমতায় শেষ করেছে কলাম্বিয়া। বল গড়িয়েছে অতিরিক্ত সময়ে।

৪-৪-২ ফরমেশনে আর্জেন্টিনা এদিন শুরুতে ছিল স্ট্রাইকার আলভারেজের উপর নির্ভরশীল। তবে তার একটার পর একটা সুযোগ অপচয় আর্জেন্টিনার জয় বিলম্বিত করেছে। অন্যদিকে ৪-৩-৩ ফরমেশনে কলাম্বিয়া খেলে বলের নিয়ন্ত্রন বেশি নিলেও গোলপোস্ট লক্ষ্য করে আর্জেন্টিনার চেয়ে কম শট নিতে পেরেছে। 

খেলার স্পট কিকের পর পর আর্জেন্টিনার হয়ে গোলের সুযোগ এসেছিল।  ১ মিনিটের মাথায় আলভারেজ সে সুযোগ নষ্ট করেন। তার শট অল্পের জন্য গোলপোষ্টের বাইরে দিয়ে যায়। ৬ষ্ঠ মিনিটে কলাম্বিয়া সহজতম সুযোগ মিস করেছে।  ডি বক্স থেকে নেয়া কর্ডোবার শট গোলপোস্টে ঘেঁষে বাইরে যায়।

২০ মিনিটে ডি মারিয়ার ক্রস থেকে বাঁপায়ের শট নেন লিওনেল মেসি। তবে মেসির শট সেভ করেন কলম্বিয়ার গোলরক্ষক কামিলো ভারগাস। ৩২ মিনিটে দারুণ একটি আক্রমণ করে কলম্বিয়া। আর্জেন্টিনার ডিফেন্ডাররা সেটি ব্লক করে দিলেও কর্নার পেয়ে যায় কলম্বিয়া। তবে কর্নার কিক থেকে বল তালুবন্দি করে নেন আর্জেন্টিনার গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। ৪০ মিনিটে রড্রিগেজের ক্রস থেকে হেড নেন কলম্বিয়ার জন অ্যারিয়াস। তবে ডানপাশ দিয়ে বল চলে যায়। 

মেসিহীন আর্জেন্টিনা প্রায় ২০ মিনিটের মতো মাঠে নিষ্প্রভ থাকার পর আক্রমনে ধার বাড়ায় শেষ দিকে। ৮৭ মিনিটে গঞ্জালেসের হেড গোলপোষ্টের সামান্য উপর দিয়ে চলে যায়। নির্ধারিত সময়ের ইনজুরি টাইমে ডি মারিয়া পেয়েছিলেন দারুণ সুযোগ। আন্তর্জাতিক ফুটবলের শেষ ম্যাচ গোল দিয়ে রাঙাতে পারতেন। তবে কলাম্বিয়া গোলকিপারের ভুলে প্রাপ্ত সুযোগ অপচয় করেছেন ফাঁকা পোষ্টে বলে পা টোকা লাগাতে না পারায়। 

৯৪ মিনিট আলভারেসের শট বাঁচিয়ে দিলেন কলম্বিয়ার গোলকিপার। অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধও ছিল গোলশূন্য। অবশেষে  ১১২ তম মিনিটে আর্জেন্টিনা পেয়েছে জয়সূচক গোল। ১১২ মিনিটে আর্জেন্টিনাকে এগিয়ে দিয়েছেন বদলী লাউতারো মার্তিনেজ। লো সেলসো মাঝমাঠ থেকে পাস দিয়েছিলেন লাউতারোকে। তিনি বক্সে ঢুকে ডান পায়ের নিখুঁত শটে বল জালে জড়ান (১-০)। তাতেই ডাগ আউটে বসে কাঁদতে থাকা মেসির হাসিতে হেসেছে আর্জেন্টিনা সমর্থকরা।

পাঠকের মন্তব্য

লগইন করুন

ইউজার নেম / ইমেইল
পাসওয়ার্ড
নতুন একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে এখানে ক্লিক করুন