বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০২৪, ২৫ আশ্বিন ১৪৩১ , ৬ রবিউস সানি ১৪৪৬

খেলা

প্রোটিয়া বাধা পেরুতে পারেনি বাংলাদেশ

শামীম চৌধুরী, নিউইয়র্ক থেকে জুন ১১, ২০২৪, ০০:২৬:১৬

196
  • হৃদয়ের একটি শট। ছবি-ক্রিকইনফো

দক্ষিণ আফ্রিকা : ১১৩/৬ (২০.০ ওভারে)

বাংলাদেশ : ১০৯/৭ (২০.০ ওভারে)

ফল : বাংলাদেশ ৪ রানে পরাজিত।

প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ : হেনরিক ক্লাসেন (দক্ষিণ আফ্রিকা)।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মায়ের দোয়া টিম বলে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য একটু বেশিই তাঁতিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে। মায়ের দোয়ার জোরে ডালাসের পর নিউইয়র্কেও ইতিহাস রচনার হাতছানি ছিল। ।

এই আসরের আগে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ইতিহাসে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ছিল না কোনো জয়। ডলাসে রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে ৩ দিন আগে সংক্ষিপ্ত সংস্করণের বৈশ্বিক আসরে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পেয়েছে বাংলাদেশ প্রথম জয়।

ডালাসে ওই জয় থেকে টনিক নিয়ে ২২০০ কিলোমিটার দূরে নিউইয়র্কে আর একটি সাফল্যের গল্প লিখতে প্রত্যয়ী ছিল বাংলাদেশ দল। তবে বোলারদের পারফরমেন্সে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ১১৩/৬-এ আটকে ফেলেও টপ অর্ডার ব্যাটারদের ব্যাটিং ব্যর্থতা এবং পক্ষপাতমূলক আম্পায়ারিং জয়ের পথে অন্তরায় হয়েছে। হেরে গেছে ৪ রানে।

ডালাসের পারফরমাররাই নিউইয়র্কে বাংলাদেশ দলকে দেখিয়েছে স্বপ্ন। ডালাসে শ্রীলঙ্কার ১২৫ রানের চ্যালেঞ্জ পাঁড়ি দিতে সওয়ার হতে হয়েছে তাওহিদ হৃদয়-মাহমুদউল্লাহ'র ঘাড়ে। নিউইয়র্কে দক্ষিণ আফ্রিকার ১১৪ রানের হার্ডল পেরুতেও এই দুই মিডল অর্ডারের টেনে নিয়েছেন বাংলাদেশ দলকে। নিউইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে চ্যালেঞ্জ যতোই কম মনে হোক না কেনো, তা পাড়ি দেয়া দুরূহ। ৪৮ ঘন্টা আগে নেদারল্যান্ডসের ১০৩/৯ স্কোরের জবাব দিয়ে ৪ উইকেটে জিততে ১৯তম ওভার পর্যন্ত খেলতে হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকাকে। বোলারদের ডিনামাইট পেতে রাখা এই ভেন্যুতে ২৪ ঘন্টা আগে ভারতের ১২০ রানের চ্যালেঞ্জে ৬ রানে হেরে তা জানিয়ে দিয়েছে পাকিস্তান। সোমবার ১১৪ রান তাড়া করতে যেয়ে ৪ রানে হেরেছে বাংলাদেশ। 

এই ম্যাচেও বাংলাদেশের টপ অর্ডাররা হতাশ করেছেন। রাবাদাকে পর পর দুই বলে দুটি বাউন্ডারি মেরে সেই ওভারের শেষ বলে তানজিদ হাসান তামিম উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েছেন (৯ বলে ৯)। বাঁ হাতি স্পিনার মহারাজের প্রথম বলে লিটন এক্সট্রা কভােরে দিয়েছেন ক্যাচ (১৩ বলে ৯)। নরকিয়ের ৪র্থ বলে মিড উইকেটে সাকিব দিয়েছেন ক্যাচ (৪ বলে ৩)। এই মহারাজকে হৃদয় ২টি ছক্কা মেরে দিয়েছিলেন উত্তাপ। 

স্কোরশিটের চেহারা যখন ৫০/৪, তখন অবশিষ্ট ৬১ বলে ৬৪ রানের টার্গেটটা সহজ মনে হয়নি। হৃদয়-মাহমুদউল্লাহ'র ৪৫ বলে ৪৪ রানের পার্টনারশিপ রাবাদা ১৮তম ওভারের প্রথম বলে ভেঙ্গে দিলে শেষ ১৭ বলে ২০ রানের টার্গেট পাড়ি দেয়া মনে হয়েছে কঠিনতর। তবে শেষ ১৮ বলে ২০ রানের টার্গেটে এলোমেলো হয়েছে বাংলােদেশ। ১৩ রানের মধ্যে হারিয়েছে ৩ উইকেট। 

 ৩৪ বলে ২ চার, ২ ছক্কায় ৩৭ রানের ইনিংসে দলকে জয়ের আবহ দিয়ে হৃদয় আম্পায়ার্স বলে এলবিডাব্লু হলে ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। হৃদয় আম্পায়ার্স বলে এলবিডাব্লু হলে ধাক্কা খায় বাংলাদেশ।  শেষ ওভারে ১১ রানের টার্গেট যখন শেষ ২ বলে ৬ রানে এসে দাঁড়ায় তখন অনোন্যপায় হয়ে কেশব মহারাজকে ছক্কা মারতে যেয়ে লং অনে মাহমুদউল্লাহ ক্যাচ দিলে (২৭ বলে ২০) হারকেই নিয়তি বলে মেনে নিতে হয় বাংলাদেশ দলকে।      

ডালাসে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে জয়টাই বদলে দিয়েছে বাংলাদেশ দলকে। বোলিংয়ে নির্ভার বাংলাদেশ ডালাসের চেয়েও বেশি শক্তি সঞ্চয় করে নিউইয়র্কের নাসাউ কাউন্টিতে হয়েছে অবতীর্ন।

প্রথমে ব্যাট করে বাংলাদেশের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে ১৪৮/৪-এর নিচে কোনো স্কোর নেই দক্ষিণ আফ্রিকার। পেসার তানজিম হাসান সাকিবের ক্যারিয়ারসেরা বোলিং (৩/১৮) এবং তাসকিনের (২/১৯) উইকেট টেকিং বোলিংয়ের পাশে মোস্তাফিজের মিতব্যয়ী বোলিংয়ে (৪-০-১৮-০) নিউইয়র্কে সেই দক্ষিণ আফ্রিকাকে মাত্র ১১৩/৬-এ থামিয়ে ফেলেছে বাংলােদেশ।

টসে হেরে ফিল্ডিংয়ে নেমে বরং একটু উপকারই হয়েছে বাংলাদেশ দলের। তানজিম হাসান সাকিবের প্রথম স্পেলে (৩-০-১৩-৩) ব্যাটিং পাওয়ার প্লে-তে (২৫/৪) দক্ষিণ আফ্রিকা হয়েছে এলোমেলো। ইনিংসের প্রথম ওভারে ডি কক-এর হাতে পর পর দুই বলে ছক্কা, চার খেয়ে ওই ওভারের শেষ বলে হেনরিকস ডিফেন্স করতে যেয়ে এলবিডাব্লুতে কাটা পড়েছেন ১ বলে ০। তানজিমের পরের ওভারে ডি কক বোল্ড (১১ বলে ১৮)। তানজিম হাসান সাকিবকে দেখে উদ্বদ্ধি তাসকিন পরের ওভারে মার্করামকে হতভম্ব করা ডেলিভারিতে করেছেন বোল্ড (৮ বলে ৪)।

প্রথম স্পেলের শেষ ওভারে তানজিমকে অনোন্যপায় হয়ে কাভারে ক্যাচ দিতে বাধ্য হয়েছেন স্টাবস (৫ বলে ০)। স্কোরশিটে ২৩ উঠতে ৪ উইকেট হারিয়ে দিশেহারা দক্ষিণ আফ্রিকার ৫ম উইকেট জুটির দুই ব্যাটার মিলার-ক্লাসেন ৭৯ বলে ৭৯ রান যোগ করে দলকে তিন অঙ্কের ডিজিটে টেনে নিয়ে গেছেন।

ব্রেক থ্রু-টা দিয়েছেন তাসকিন। তার অ্যাঙ্গেল ডেলিভারি ক্রস খেলতে যেয়ে ক্লাসেন বোল্ড (৪৪ বলে ২ চার, ৩ ছক্কায় ৪৬)। প্রথম দুই স্পেলে মার খেয়ে (১-০-৬-০ ও ১-০-১৪-০) শেষ ওভারে মিলারকে করেছেন বোল্ড এই লেগ স্পিনার (৩৮ বলে ২৯)।

নাসাউ কাউন্টি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ১১৪ রানের টার্গেটটা কিন্তু কম নয়। সর্বশেষ ৫টি ম্যাচের রেকর্ড কিন্তু বলছে তা। তা এবার জানিয়ে দিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার পেসার রাবাদা (২/১৯), নরকিয়ে (২/১৭) এবং বাঁ হাতি স্পিনার মহারাজ (৩/২৭)। 

পাঠকের মন্তব্য

লগইন করুন

ইউজার নেম / ইমেইল
পাসওয়ার্ড
নতুন একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে এখানে ক্লিক করুন