সোমবার, ৭ অক্টোবর ২০২৪, ২২ আশ্বিন ১৪৩১ , ৩ রবিউস সানি ১৪৪৬

খেলা

লিটন-হৃদয়ে ফাইনালে কুমিল্লা

স্পোর্টস রিপোর্টার ফেব্রুয়ারী ২৬, ২০২৪, ২২:২০:৫৮

604
  • লিটন-হৃদয়, একে অপরকে অভিনন্দন। ছবি-বিসিবি

রংপুর রাইডার্স : ১৮৫/৬ (২০.০ ওভারে)

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স : ১৮৬/৪ (১৮.৩ ওভারে)

ফল : কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ৬ উইকেটে জয়ী।

প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ : লিটন দাস (কুমিল্লা)।

একদিন আগে ক্রিকইনফোকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বিপিএল নিয়ে বাজে মন্তব্য করেছেন হাতুরুসিংহে। টেলিভিশনে বিপিএল দেখার আগ্রহই না কি পান না।

বিপিএলের সময়ে টিভি সুইচ নাকি বন্ধ করে দেন তিনি! তার ওই মন্তব্যের জবাব বিসিবির হয়ে দিয়েছে রংপুর রাইডার্স-কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স।

বোলারদের নিয়ে ছেলে-খেলা উৎসবের ম্যাচে রংপুর রাইডার্স মিডল অর্ডার নিশামের ক্যারিয়ারসেরা ইনিংসের (৪৯ বলে ৮ চার, ৭ ছক্কায় ৯৬*) জবাব দিয়েছেন  কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের দুই টপ অর্ডার লিটন (৫৭ বলে ৯ চার, ৪ ছক্কায় ৮৩) এবং তাওহিদ হৃদয় (৪৩ বলে ৫ চার, ৪ ছক্কায় ৬৪।

দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৮৯ বলে ১৪৩ রানে রংপুর রাইডার্সকে হতভম্ব করেছেন এই জুটি। এই জুটির দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে ৯ বল হাতে রেখে ৬ উইকেটে জিতে ৫ম বারের মতো বিপিএলের ফাইনালে উঠেছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। বুধবার দ্বিতীয় কোয়ালিফাইয়ারে সাকিব-তামিম দ্বৈরথ দেখবে দর্শক। 

টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ব্যাটিং পাওয়ার প্লে-তে যে দলটার স্কোর ৩৫/৩, সেই রংপুর রাইডার্স ইনিংস টেনে নিয়েছে ১৮৫/৬ ! কীভাবে সম্ভব হয়েছে তা ? তার উত্তর একটাই, জেমস নিশামের ঝড়। তার টি-২০ ক্যারিয়ারসেরা ইনিংসে (৪৯ বলে ৮ চার, ৭ ছক্কায় ৯৬*) কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে বড় চ্যালেঞ্জ (১৮৫/৬) দিতে পেরেছে রংপুর রাইডার্স।

বিপিএলে এবার নিউ জিল্যান্ড পেস অলরাউন্ডার জেমস নিশামের ব্যাটটা একটু বেশিই চওড়া হয়েছে। এসেই চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে হাফ সেঞ্চুরি উদযাপন করেছেন (৫১*)। চট্টগ্রামে রাউন্ড রবীন লিগের সর্বশেষ ম্যাচে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে ম্যাচ উইনিং ৬৯ রানের হার না মানা ইনিংস দিয়েছেন উপহার এই কিউই। 

কোয়ালিফাইয়ারের ড্রেস রিহার্সল সেই ম্যাচের ব্যাটিংয়ে উজ্জীবিত নিশামের ব্যাটটা আরো চওড়া হয়েছে মিরপুরে এসে। ৬ দিন আগে স্বাচ্ছন্দে ব্যাটিং করেছেন যে বোলারদের বিপক্ষে, তাদেরকে পুনরায় পেয়ে ছেলে-খেলা উৎসবে মেতে উঠেছেন।

তার ব্যাটিং ঝড়ে বিপিএল ইতিহাসে ইনিংসে সবচেয়ে খরুচে বোলিংয়ের (৪-০-৭২-১) অপবাদ পেতে হয়েছে তরুণ পেস বোলার মুশফিক হাসানকে। এর আগে সবচেয়ে অমিতব্যয়ী বোলিংয়ের রেকর্ডটা ছিল চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স পেসার আল আমিনের।

গত ১৩ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে আল আমিনের বোলিং ইনিংসটা ছিল ৪-০-৬৯-০। 

মুশফিক হাসান শেষ ওভারে খরচ করেছেন ২৮ রান! শুধু মুশফিক হাসান একাই নন, মার খেয়েছেন আন্দ্রে রাসেলও (৪-০-৩৭-২)। শেষ পাওয়ার প্লে'র ৫ ওভারের মধ্যে আন্দ্রে রাসেল, মুশফিক হাসান করেছেন ২+২==৪ ওভার। এই চার ওভারে খরচ ওই দুই পেসারের ৬৭ রান! 

এই ম্যাচের মধ্য দিয়ে বিপিএলে অভিষেক হয়েছে অনূর্ধ্ব-১৯ দলের পেসার রোহানাত দৌলা বর্ষনের। রনি তালুকদারকে ফিরিয়ে দেয়া বর্ষন প্রথম ওভারে মার খেয়েও (১২ রান খরচ) ৩ ওভারে খরচ করেছেন ২১ রান। আন্দ্রে রাসেল প্রথম দুই স্পেলে (১-০-৫-১, ১-০-৩-০) প্রশংসিত বোলিং করলেও শেষ স্পেলে খেয়েছেন মার (২-০-২৯-১)। তবে সুনিল নারাইন এই ম্যাচেও দারুণ মিতব্যয়ী বোলিং করেছেন (৪-০-১১-১)।

ব্যাটিং অর্ডারে প্রমোশন দিয়ে এদিন ওপেনিংযে পাঠানো হয়েছে শামিমকে। তবে মেকশিপ্ট ওপেনারের প্রয়োজন মেটাতে পারেননি (২ বলে ০)। আন্দ্রে রাসেলের প্রথম ওভারে ডিপ মিড উইকেটে ক্যাচ দিয়েছেন সাকিব (৯ বলে ৫)।

স্কোরশিটে ২৭ উঠতে ৩ উইকেট হারানোর পর নিশাম-শেখ মেহেদী চতুর্থ উইকেট জুটিতে ২৬ বলে ৩৯ রান করে বড় স্কোরের পথ প্রশস্ত করেছেন। শেখ মেহেদী করেছেন ২২ বলে ২৭। ৬ষ্ঠ উইকেট জুটিতে ৩৬ বলে ৫৩ রানে সোহান দিয়েছেন নিশামকে দারুণ সাপোর্ট ( ২৪ বলে ৩০)।

১৮৬ রানের চ্যালেঞ্জে ইনিংসের প্রথম বলে সুনিল নারাইনকে শিকার করে ফজলহক ফারুকী দিয়েছিলেন শুন্যে  লাফ। তবে লিটন-হৃদয় ম্যাচে ফিরিয়েছেন কুমিল্লাকে।৫ম ওভারে হাসান মাহমুদকে ১ ছক্কা, ৩ বাউন্ডারিতে হৃদয় ২২ রান নিয়ে দলকে দেখিয়েছেন স্বপ্ন। 

ব্যাটিং পাওয়ার প্লে-তে ৬১/১ স্কোরে জয়ের কক্ষপথে রেখেছেন দলকে। ৩১ বলে হৃদয় এবং ৩৮ বলে লিটন ফিফটি পূর্ণ করে দলকে রেখেছেন জয়ের কক্ষপথে। শেষ পাওয়ার প্লে-এর আগে আবু হায়দার লিটনের বলে ডিপ মিড উইকেটে হৃদয় ক্যাচ দিলে (৪৩ বলে ৫ চার, ৪ ছক্কায় ৬৪) শঙ্কা দেখার কথা কুমিল্লার।

তবে ৩০ বলে ৪৩ রানের টার্গেট কঠিন হতে দেননি লিটন। ১৮তম ওভারে শেখ মেহেদীর বলে লং অনে লিটন ক্যাচ দিয়েছেন যখন (৫৭ বলে ৯ চার, ৪ ছক্কায় ৮৩) তখন জয় থেকে মাত্র ১৩ রান দূরে কুমিল্লা। ১২ বলে ১২ রানের টার্গেটটা শেষ ওভার থ্রিলার পর্যন্ত নিতে দেননি মঈন আলী। ১৯তম ওভারের প্রথম তিন বলের মধ্যেই লক্ষ্যে পৌছে দিয়েছেন মঈন আলী। 

পাঠকের মন্তব্য

লগইন করুন

ইউজার নেম / ইমেইল
পাসওয়ার্ড
নতুন একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে এখানে ক্লিক করুন