শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ , ১৯ রমজান ১৪৪৫

অন্যান্য
  >
বিশ্বকাপ

স্টিভ রোডসই প্রথম নন

শামীম চৌধুরী, ম্যানচেস্টার থেকে ১০ জুলাই , ২০১৯, ০৫:৩২:৫০

  • বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে স্টিভ রোডস। ছবি-শামীম চৌধুরী

স্টিভ রোডস হাই প্রোফাইল কোচ নন। তা ঠিক।  ১১ টেস্ট,৯ ওয়ানডে ম্যাচের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন স্টিভ রোডস বাংলাদেশ দলের সিনিয়র ক্রিকেটারদের উপর প্রভাব বিস্তার করতে চাননি-এটাও ঠিক।

কিন্তু ক্রিকেটারদের বন্ধু তো হতে পেরেছেন ? বিশ্বকাপে চূড়ান্ত দল নির্বাচনের আগে  বিকেএসপিতে আবাহনী-রূপগঞ্জের ম্যাচ। সৌম্যকে শেষ পরীক্ষা দিতে হবে। ছুটে গেছেন স্টিভ রোডস, ম্যাচের আগে সৌম্য'কে দিয়েছেন টিপস। 

যতোক্ষন ম্যাচ, ততোক্ষন বাউন্ডারি রোপের পাশ দিয়ে হেঁটেছেন, তার এই ছটফট চিত্র দেখে সৌম্য উঠেছেন জ্বলে। সেঞ্চুরিতে ফিরেছেন ফর্মে। বাংলাদেশ দলের অন্য হাই প্রোফাইল কোচরা যেখানে শর্ত পুরোপুরি পালন করেননি, দলের অনুশীলনের শুরু থেকে যাদের উপস্থিতি ছিল না।দল তো দূরের কথা, বিসিবি'র উপর প্রভাব খাটিয়েছেন, হয়েছেন বিরাগভাজন। 

সেই কাতারে তো ছিলেন না এই ইংলিশ।সেই কোচকে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে কেন বিদায় দিচ্ছে বিসিবি ? সাধারনত: একটি টূর্নামেন্ট কিংবা সিরিজ শেষ হওয়ার কোচের রিপোর্টটা হাতে পাওয়া জরুরী। সে অপেক্ষাও তো করতে পারতো বিসিবি ! শ্রীলংকা সফরটা যখন এগিয়ে এসেছে, আর মাত্র ক'দিন বাকি। নীচের সারির দলের সঙ্গে খেলার আগে কোচ ছাটাঁই, নতুন কোচের অধীনে কতোটা যুক্তিযুক্ত-এটাও প্রশ্ন।

বিশ্বকাপে ব্যর্থতায় কোপটা পড়েছে স্টিভ রোডসের উপর। তা বলার অপেক্ষা রাখে না। বাংলাদেশ ক্রিকেট ইতিহাসে এমন ঘটনা কিন্তু এটাই প্রথম নয়। ১৯৯৭ সালে আইসিসি ট্রফি জয়ে বিশ্বকাপ খেলেছে বাংলাদেশ যে কোচের কারনে, সেই গর্ডন গ্রীনিজকে বিসিবি ‌অব্যহতি পত্র ধরিয়ে দিয়েছে ১৯৯৯ বিশ্বকাপে বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচ চলাকালে ! নর্দাম্পটনে পাকিস্তানকে হারিয়ে বিশ্বজয়ের উৎসবে ফেটে পড়েছে, গর্ডন গ্রীনিজ তখন ড্রেসিংরুমের বাইরে।

অপরাধ তার বিদেশী সংবাদ মাধ্যমকে দেয়া একটি সাক্ষাতকারের একটি বাক্য-‌ বাংলাদেশে এখনো প্রথম শ্রেনীর ক্রিকেটই প্রবর্তিত হয়নি, তাই এক্ষুনি বাংলাদেশ টেস্ট মর্যাদার জন্য যথার্থ নন।' তার এই মন্তব্য বিসিবি'র আতে লাগায় বিদায়টা হয়েছে বাংলাদেশ সরকারের দেয়া অনারারী নাগরিকের অপদস্ত হয়ে। কোচ হয়ে মহসীন কামাল দায়িত্ব গ্রহনের শুরু থেকেই ছিলেন সমালোচিত। ৯ মাসের অধ্যায়ে ৭ টেস্ট্,১১ ওয়ানডে ম্যাচের সব ক'টিতেই হেরেছে বাংলাদেশ। ২০০৩ বিশ্বকাপে কেনিয়া,কানাডার কাছে হেরে বিশ্বকাপে বড় লজ্জা দিয়েছে ক্রিকেট দল। সে কারনেই তার বিদায়ে স্বস্তি পেয়েছে বিসিবি।

বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের ইমেজকে তুলে ধরার কারিগর ডেভ হোয়াটমোর দল নির্বাচনে পেয়েছিলেন পূর্ন স্বাধীনতা। হস্তক্ষেপমুক্ত দল পরিচালনায় পেয়েছেন সাফল্য। বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট,টেস্টও ওয়ানডে সিরিজ জয়ের নায়ক হোয়াটমোরের ২ মেয়াদে ৮৬ ওয়ানডে ম্যাচে ৩৩টি জয়ে অন্য উচ্চতায় উঠেছে বাংলাদেশ।   ২০০৭ বিশ্বকাপে ভারত,দক্ষিন আফ্রিকার মত বড় প্রতিপক্ষকে হারিয়েছে বাংলাদেশ তার প্রশিক্ষনে। অথচ, বিশ্বকাপ শেষে নতুন মেয়াদে তাকে চুক্তিবদ্ধ না করে বিসিবি দিয়েছে ফেয়ারওয়েল। কারনটা তুচ্ছ। ২০০৭ বিশ্বকাপ চলাকালে ৯৬ বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন কোচ ভারতের অফার পেলে চলে যাবেন, ২০০৭ বিশ্বকাপ চলাকালে ভারতের গনমাধ্যমে এই একটি সংবাদ প্রকাশই কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। ২ দফা মেয়াদে সফল কোচ সিডন্স এর কোচিংয়ে ৮১ ওয়ানডে ম্যাচে বাংলাদেশের জয় ৩০টি।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে টেস্ট এবং ওয়ানডে সিরিজে স্বাগতিকদের হোয়াইট ওয়াশ করা ছাড়াও হোমে নিউজিল্যান্ডকে ৪-০তে বাংলা ওয়াশে দারুন অর্জনেও ২০১১ বিশ্বকাপ শেষে সিডন্স অধ্যায় শেষ হয়েছে ! বিশ্বকাপের সেই আসরে বাংলাদেশ শেষ ৮ এর দেখা পায়নি, এটাই বড় অপরাধ। দ্বিতীয় দফায় মেয়াদ শেষ হওয়ার ২ মাস আগে নিউজিল্যান্ডের ওয়েলিংটন ফায়ারবার্ডসের অফার পেয়েছেন, এই সংবাদটিও কাল হয়েছে বুকাননের এই ডেপুটির ! তবে গ্রীনিজ,হোয়াটমোর,সিডন্স চাকরি হারাননি। মেয়াদ পূর্ন করেছেন। সেখানে বিশ্বকাপ ব্যর্থতায় মহসীন কামালের মতো চাকুরি হারিয়েছেন স্টিভ রোডস।

পাঠকের মন্তব্য

লগইন করুন

ইউজার নেম / ইমেইল
পাসওয়ার্ড
নতুন একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে এখানে ক্লিক করুন