বৃহস্পতিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৩, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩০ , ১৭ জুমাদিউল আউয়াল ১৪৪৫

অন্যান্য
  >
বিশ্বকাপ

জয়রথ থামল ভারতের, সেমিফাইনালের আশায় ইংল্যান্ড

ক্রীড়া ডেস্ক ৩০ জুন , ২০১৯, ২৩:৫৫:২২

  • জয়রথ থামল ভারতের, সেমিফাইনালের আশায় ইংল্যান্ড

ব্যাট-বল হাতে দাপটের সঙ্গেই এগিয়ে যাচ্ছিল ভারত। টানা জয়ে সেমিফাইনালের খুব কাছেও চলে গেছে বিরাট কোহলির দল। ঠিক সে সময়ই রবি শাস্ত্রীর শিষ্যদের জয়রথ থামিয়ে দিল ইংল্যান্ড। তাতে চলতি বিশ্বকাপের শেষ চারে যাওয়া পাওয়ার আশা বেশ ভালোভাবেই টিকে গেল স্বাগতিকদের।   

 

এজবাস্টনে রোববার ভারতকে ৩১ রানে হারিয়েছে ইংল্যান্ড। চলতি বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত এ নিয়ে একবারই মুখ ভার করে মাঠ ছাড়ল কোহলির দল। এরআগে জনি বেয়ারস্টোর সেঞ্চুরি ও বেন স্টোকসের ঝড়ো ব্যাটিংয়ের উপর ভর করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে ৩৩৭ রান করে ইংল্যান্ড। পরে বল হাতে রোহিত শর্মার সেঞ্চুরির পরও ভারতের ৫ উইকেট তুলে নিয়ে রানে ৩০৬ রানে আঁটকে দেয় স্বাগতিকরা। তাতে দুই ম্যাচ পর আবারও জয়ে ফিরল ইয়ন মরগানের দল। একই সঙ্গে সেমিফাইনালের ওঠার স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখল।  

 

বল লক্ষ্য ছুঁড়ে দিয়ে রোববার শুরুতেই ভারত শিবিরে আঘাত করে ইংল্যান্ড। ইনিংসের তৃতীয় ওভারের তৃতীয় বলে লোকেশ রাহুলকে নিজের বলে নিজেই ক্যাচ ধরে ফেরান ক্রিস ওকস। তারপরও স্বাগতিকরা ছিলো না স্বস্তিতে। কেননা দ্বিতীয় উইকেটে বিরাট কোহলিকে নিয়ে ধীরে ধীরে এগোতে থাকেন রোহিত শর্মা। একটা সময় তাদের ব্যাটেই আবার জয়ের স্বপ্ন বুনতে শুরু করেছিল ভারত। ঠিক সে সময়ই কোহলিকে ফিরিয়ে বিপজ্জনক এ জুটি ভাঙেন লিয়াম প্ল্যাঙ্কেট। ইনিংসের ২৯তম ওভারের দ্বিতীয় বলটি ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্ট দিয়ে চারে পরিণত করতে চেয়েছিলেন ভারত অধিনায়ক। কিন্তু ব্যাটের বাইরে লেগে ক্যাচ চলে যায় অতিরিক্ত খেলোয়াড় জেমস ভিন্সের হাতে। তাতে ভাঙে তাদের ১৩৮ রানের জুটি। ফেরার আগে কোহলির ব্যাট থেকে আসে ৭৬ বলে ৭ চারে ৬৬ রান। 

 

কোহলির বিদায়ের পর এক প্রান্তে আগলে ছিলেন রোহিত। ঋশব পান্টকে নিয়ে আরেকটি দারুণ জুটি (৫২) গড়েন তিনি। এরমধ্যে রোহিত ১০৬ বলে ১৫ চারে তুলে নেন সেঞ্চুরি। কিন্তু নিজের ইনিংসটাকে আর বড় করতে পারেননি তিনি। ওকসের করা ৩৮তম ওভারের প্রথম বলে এ ডানহাতি ধরা পড়েন উইকেটেরে পেছনে জস বাটলারের হাতে। তার আগে ১০৯ বলে ১৫ চারে তিনি করেন ১০২ রান। এদিকে ঋশব পান্টও পারেননি নিজেকে ঠিক মেলে ধরতে। দলীয় ২২৬ রানের মাথায় প্ল্যাঙ্কেটের বলে ওকসের হাতে ধরা পড়ে ফেরেন এ ডানহাতি। 

 

শেষ দিকে ভারতের পরাজয়ের ব্যবধান কমান হার্দিক পান্ডিয়া ও মহেন্দ্র সিং ধোনি। পঞ্চম উইকেটে তারা গড়েন ৪১ রানের জুটি। এরপরই ৩৩ বলে ৪টি চার ৪৫ রান করে প্ল্যাঙ্কেটের বলে ভিন্সের ক্যাচে ফেরেন পান্ডিয়া। শেষ পর্যন্ত অবশ্য ধোনি ছিলেন ক্রিসে। কিন্তু ভারতের জয় এনে দিতে পারেননি তিনি। ৩১ বলে ৪টি চার ও ১টি ছয়ে এ ডানহাতি অপরাজিত ছিলেন ৪২ রানে। অন্য প্রান্তে কেদার যাদব ১৩ বলে ১ চারে ১২ রানে ছিলেন অপরাজিত।   

 

ইংল্যান্ডের সফল বোলার লিয়াম প্ল্যাঙ্কেট। এ ডানহাতি পেসার নেন ৫৫ রানে ৩ উইকেট। এদিকে ৫৮ রানে ২টি উইকেট নেন ক্রিস ওকস। 

 

এরআগে টস জেতা ইংল্যান্ডকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন দুই ওপেনার জেসন রয় ও জনি বেয়ারস্টো। ইনিংসের প্রথম ওভারেই মোহাম্মদ শামিকে জোড়া চার মেরে শুরু করেন রয়। সেই ধারাবাহিকতায় ১৫.৩ ওভারেই ইংল্যান্ডের স্কোরকার্ডে জমা হয় বিনা উইকেটে ১০০ রান। এরমধ্যে ৫৬ বলে ৭ চার ও ২ ছয়ে জনি বেয়ারস্টো তুলে নেন হাফসেঞ্চুরি। পরে জেসন রয় ৪১ বলে ৭ চার ও ১ ছয়ে সতীর্থের দেখানো পথ অনুসরণ করেন। এর কিছুক্ষণ পরই এ ওপেনার দলকে ২২.১ ওভারে ১৬০ রানে রেখে কুলদীপ যাদবের বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে সীমানায় অতিরিক্ত খেলোয়াড় রবীন্দ্র জাদেজার দর্শনীয় ক্যাচে ফেরেন। তার আগে তিনি করেন ৫৭ বলে ৭ চার ও ২ ছয়ে ৬৬ রান। 

 

রয় ফিরলেও অন্য প্রান্তে দারুণ খেলেন বেয়ারস্টো। দ্বিতীয় উইকেটে এ ডানহাতি জো রুটকে নিয়ে ২৯.৪ ওভারেই ইংল্যান্ডের স্কোর পৌঁছে দেন ২০০ রানে। তার আগেই অবশ্য বেয়ারস্টো মাত্র ৯০ বলে ৮ চার ও ৬ ছয়ে তুলে নেন সেঞ্চুরি। এর কিছুক্ষণ পরই তিনি মোহাম্মদ সামির বলে এলবিডব্লিয়ের ফাঁদে পড়েন। তার আগে খেলেন ১০৯ বলে ১০ চার ও ৬টি ছয়ে ১১১ রানের ঝলমলে ইনিংস। তার ফেরার ১২ বল পরই ইয়ন মরগান হাঁটেন সাজঘরে। তাকেও ফেরান সামি। যে কারণে ইংলিশদের রান তোলার গতি কিছুটা কমে যায়। তারপরও স্বাগতিকদের টেনে তোলার কাজটি বেশ ভালোভাবেই করে যান জো রুট ও বেন স্টোকস। চতুর্থ উইকেটে তারা ৫৭ বলে ৭০ রানের জুটি গড়েন। রুট ছুটছিলেন হাফসেঞ্চুরির দিকে। কিন্তু ইনিংসের ৪৫তম ওভারে সামির করা প্রথম বলে পান্ডিয়ার হাতে ধরা পড়ে ফেরেন। 

 

রুট ফেরার পর বেন স্টোকস ও জস বাটলার কিছুক্ষণের জন্য ভারতীয় বোলারতের উপর তান্ডব চালান। মাত্র ১৫ বলে তাদের ৫ম উইকেট জুটিতে ওঠে ৩৩ রান। তার মধ্যে ৮ বলে ২ ছয় ও ১ চারে বাটলারের অবদান ২০ রান। এরপর তিনি ফিরলেও স্টোকস (৭৫) নিজের মত করেই শেষ ওভার পর্যন্ত খেলেন। তার ঝড়ো ব্যাটিংয়ের কল্যাণেই তো ইংলিশরা ভারতের সামনে বড় লক্ষ্যই ছুড়ে দেয়। শেষ পর্যন্ত এ রানের উপর ভর করে রোববার ভারতের বিখ্যাত ব্যাটিং লাইনআপকে ৩০৬ রানে আঁটকে দিয়ে দুই ম্যাচ পর দারুণ জয় তুলে নিয়েছে ইংল্যান্ড। তাতে চলতি বিশ্বকাপে সেমিফাইনালে ওঠার স্বপ্নটা উজ্জ্বল হয়েছে দলটির।

 

নিউজজি/সিআর

পাঠকের মন্তব্য

লগইন করুন

ইউজার নেম / ইমেইল
পাসওয়ার্ড
নতুন একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে এখানে ক্লিক করুন