বৃহস্পতিবার, ৩০ মার্চ ২০২৩, ১৫ চৈত্র ১৪২৯ , ৮ রমজান ১৪৪৪

অন্যান্য
  >
বিশ্বকাপ

মেসি ম্যাজিকে ফাইনালে আর্জেন্টিনা

শামীম চৌধুরী ১৪ ডিসেম্বর , ২০২২, ০৩:০৬:৪০

  • আর্জেন্টিনার জয়ের দুই নায়ক মেসি-আলভারেজ। ছবি-ইন্টারনেট

আর্জেন্টিনা ৩ : ক্রোয়েশিয়া ০

(মেসি, আলভারেজ-২)

রাশিয়া বিশ্বকাপে ক্রোয়েশিয়ার কাছে গ্রুপ পর্বে ০-৩ গোলে হেরে ছন্দহীন হয়ে পড়েছিল আর্জেন্টিনা। গ্রুপ রাউন্ডের বাধা কোনোমতে পেরুলেও রাউন্ড অব সিক্সটিনের বাধা পেরুতে পারেনি আর্জেন্টিনা।

কাতার বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে সেই ক্রোয়েশিয়াকে প্রতিপক্ষ হিসেবে পেয়ে ৪ বছর আগের সেই হারের বদলা নেয়ার সংকল্প ছিল আর্জেন্টিনার। 

লুসাইল স্টেডিয়ামে সেমিফাইনালে ৪-৪-২ ফরমেশনে খেলে ক্রোয়েশিয়ার ডিফেন্স ভেঙ্গে ফেলে ৩-০ গোলে জিতে মধুর প্রতিশোধ নিয়েছে মেসি'র দল।৮ বছর পর বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছে দুই বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা।

এই নিয়ে ৫ম বারের মতো (১৯৭৮,১৯৮৬,১৯৯০,২০১৪,২০২২) বিশ্বকাপের ফাইনালের নাগাল পেলো মেসি। 

এই ম্যাচে মেসি'র সাথে এদিন তরুণ আলভারেজের বোঝাপড়াটা ছিল দেখার মতো। দু'জন, দু'জনের ইশারা বুঝে পজিশন চেঞ্জ করেছেন। তার সুফল পেয়েছে আর্জেন্টিনা।  

 প্রথমার্ধে ৬১% বলের নিয়ন্ত্রন নিয়েও মেসি'দের টলাতে পারেনি লুকা মদ্রিচের ক্রোয়েশিয়া। বরং কাতার বিশ্বকাপে সেমিফাইনালে ক্রোয়েশিয়াকে পেয়ে কাউন্টার অ্যাটাকগুলোকে ভয়ংকর করে চেনারুপে হাজির আর্জেন্টিনা। বলের নিয়ন্ত্রন ৩৯% নিয়েও গোল লক্ষ্য করে নিয়েছে আর্জেন্টিনা ৭টি শট। এখানেই গতবারের রানার্স আপ ক্রোয়েশিয়ার সঙ্গে তৈরি হয়েছে ব্যবধান।

লুসাইল স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার রাতে প্রথম সেমি-ফাইনালে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে রেকর্ড করেছেন ফুটবল জাদুকর মেসি। এতোদিন আর্জেন্টিনার হয়ে বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ ১০টি গোলের রেকর্ড ছিল গ্যাব্রিয়েল বাতিস্তুতার। বাতিস্তুতার সেই গোলসংখ্যাকে টপকে মেসি'র গোলসংখ্যা এখন ১১টি। বিশ্বকাপে গোলসংখ্যার দিক থেকে তার উপরে আছেন জার্মানির মিরোস্লাভ কোসা (১৬টি), ব্রাজিলের রোনাল্ডো ( ১৫), জার্মানির জার্ড মুলার (১৪টি),ফ্রান্সের জো ফন্টেইন (১৩টি) ও ব্রাজিলের পেলে (১২টি)।

ক্রোয়েশিয়াকে কাতার বিশ্বকাপে যে গোলরক্ষক সেমিতে তুলে এনেছেন, সেই লিভাকোভিচের মারাত্মক অপরাধের সুবাদে এগিয়ে গেছে আর্জেন্টিনা।খেলার ৩২ মিনিটের মাথায় ফার্নান্দেজের দারুণ এক পাস থেকে ডি বক্সের ভেতর বল পান আলভারেজ। অবধারিত গোল হচ্ছে তা ধরে নিয়ে আলভারেজকে ফাউল করেন ক্রোয়েশিয়ার গোলরক্ষক লিভাকোভিচ। রেফারি সাথে সাথে ক্রোয়েশিয়া গোলরক্ষককে হলুদ কার্ড দেখানোর  পাশাপাশি আর্জেন্টিনার পক্ষে পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দেন। পেনাল্টি থেকে তীব্র শটে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন মেসি (১-০)। 

এই বিশ্বকাপে এটি তার ৫ম গোল। সব মিলিয়ে বিশ্বকাপে ১১টি গোল মেসি'র।

খেলার ৩৯ মিনিটে আর্জেন্টিনা ব্যবধান দ্বিগুন করে। আলভারেজের গোলটি ছিল এক কথায় অসাধারণ। ৩০ মাঝমাঠ থেকে মেসির পাস থেকে বল পেয়ে দুর্দান্ত ক্ষিপ্র গতিতে বল নিয়ে ডি বক্সের ভেতর ঢুকে ক্রোয়েশিয়ার দুই ডিফেন্ডারকে টপকে বল নিয়ে ভেতরে ঢুকে লিভাকোভিচকে পরাস্ত করেন এই স্ট্রাইকার (২-০)। প্রথমার্ধে ব্যবধান বাড়িয়ে নেয়ার সুযোগ পেয়েছে আরো একবার। খেলার ৪৩ মিনিটে মেসির কর্নার থেকে তাগলিয়াফিকোর হেড কর্নারের বিনিময়ে রুখে দেন লিভাকোভিচ।

খেলার ৫৮ মিনিটে মেসি-ফার্নান্দেজের কম্বিনেশন থেকে ৬মিটার বক্সে জটলার মধ্যে গোলের সুযোগ তৈরি হয়েছিল। তবে ক্রোয়েশিয়া গোলরক্ষক লিভাকোভিচ তা ক্লিয়ার করেন। 

খেলার ৬৩ তম মিনিটে ব্যবধান কমানোর সুযোগ হাতছাড়া করে ক্রোয়েশিয়া। ফ্রি কিক থেবে লোভরেনের হেড আর্জেন্টিনা ডিফেন্ডাররা ক্লিয়ার করেন।

খেলার ৬৯তম মিনিটে মাঝমাঠ থেকে বল পেয়ে ডান প্রান্ত দিয়ে পায়ের কারিশমা দেখিয়ে ডি বক্সে বিপজ্জনকভাবে ঢুকে ক্রোয়েশিয়া ডিফেন্ডার গাভারডিওলকে ডজে পরাস্ত করে আনমার্কড আলভারেজকে মাপা মাইনাস পাস দেন মেসি। চোখ জুড়ানো ওই পাস থেকে ফিনিশিং করেন আলভারেজ (৩-০)। আলভারেজের এটি এই বিশ্বকাপে ৪র্থ গোল। আলভারেজকে অবশ্য হ্যাটট্রিকের সুযোগ দেননি আর্জেন্টিনা কোচ। আলভারেজের দ্বিতীয় গোলের ৫ মিনিট পর তাকে উঠিয়ে নিয়েছেন আর্জেন্টিনা কোচ। 

পাঠকের মন্তব্য

লগইন করুন

ইউজার নেম / ইমেইল
পাসওয়ার্ড
নতুন একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে এখানে ক্লিক করুন