শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ , ১১ শাওয়াল ১৪৪৫

অন্যান্য
  >
ইউক্রেন সংকট

বেসামরিকদের সরানো নিয়ে একমত পুতিন ও গুতেরেস

নিউজজি ডেস্ক ২৭ এপ্রিল , ২০২২, ১০:১৩:৫২

  • ইন্টারনেট থেকে

ঢাকা: মস্কোতে রুশ জাতিসংঘ জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেসের বৈঠকে মারিওপোলের আজভস্টাল স্টিল প্ল্যান্ট থেকে বেসামরিক লোকদের সরিয়ে নেয়ার ব্যাপারে ‘নীতিগতভাবে’ সম্মত হয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ইউক্রেনে রুশ সেনা অভিযান শুরুর পর এটিই পুতিনের সঙ্গে গুতেরেসের প্রথম মুখোমুখি বৈঠক। এ বৈঠকের আগে ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতি করার ডাক দিয়েছেন গুতেরেস।

জাতিসংঘের তরফে বলা হয়েছে, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে জাতিসংঘ প্রধান অ্যান্তনিও গুতেরেস বৈঠক করেছেন মস্কোতে। বৈঠকে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন মারিউপোলে জাতিসংঘের ভূমিকায় ‘নীতিগতভাবে’ একমত পোষণ করেছেন বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। ইউক্রেনে রুশ সেনাদের অবরুদ্ধ করে রাখা মারিউপোল শহর থেকে বেসামরিক লোকদের সরিয়ে নিতে কাজ করছে জাতিসংঘ ও রেডক্রস। দেশটির দক্ষিণাঞ্চলের শহরটিতে গত এক মাস ধরে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন বহু মানুষ।

ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ গড়িয়েছে তৃতীয় মাসে। এমন পরিস্থিতিতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সমালোচনা সত্ত্বেও যুদ্ধ অবসানের বার্তা নিয়ে নিয়ে মঙ্গলবার রাশিয়া সফরে গেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস। জাতিসংঘের দেয়া বিবৃতিতে সংস্থাটির মুখপাত্র স্টিফেন দুজেরিক বলেছেন, মানবিক বিষয়গুলো সমন্বয়ের জন্য জাতিসংঘের অফিস এবং রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে আলোচনা করা হবে।

প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের আগে মস্কোতে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের সঙ্গে আরেকটি বৈঠক করেন জাতিসংঘ প্রধান। ল্যাভরভের সঙ্গে বৈঠকে ইউক্রেন নিয়ে ‘খোলাখুলি’ আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন গুতেরেস। একইসঙ্গে তিনি জোর দিয়ে এও বলেছেন যে, ‘শান্তির বার্তাবাহক’ হিসাবেই তিনি রাশিয়ায় এই সফর করছেন।

বৈঠকের পর মস্কোয় রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ল্যাভরভের সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস বলেন, ইউক্রেনে মানুষের জীবন বাঁচানো এবং দুর্ভোগ লাঘব করাই তার কর্মসূচি এবং উদ্দেশ্য। তিন বলেছেন, তিনি ‘শান্তির দূত’ হিসেবে মস্কো সফর করছেন। তবে রাশিয়ার আক্রমণাত্মক দৃষ্টিভঙ্গি যুদ্ধ শেষ করার প্রচেষ্টাকে জটিল করে তুলছে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন তিনি।

গুতেরেস বলেছেন, আমার এই সফরের উদ্দেশ্য ও এজেন্ডা মানুষের জীবন বাঁচানো এবং দুর্ভোগ কমানোর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। কিন্তু এটা স্পষ্ট যে, ইউক্রেনে যা ঘটছে, তা নিয়ে দুটি ভিন্ন অবস্থান রয়েছে। রাশিয়ান ফেডারেশনের মতে সেখানে বিশেষ সামরিক অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। জাতিসংঘের মতে, ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন দেশটির আঞ্চলিক অখণ্ডতার লঙ্ঘন। ‘তবে এটা আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে, আমরা যত তাড়াতাড়ি এই যুদ্ধের অবসান ঘটাব ইউক্রেনের জনগণের জন্য, রাশিয়ান ফেডারেশনের জনগণের জন্য এবং এর বাইরের মানুষের জন্য ততই ভালো।’

গুতেরেস বলেন, “হাজারো বেসামরিক মানুষ জীবন বাঁচাতে প্রয়োজনীয় সহায়তার জন্য মরিয়া হয়ে আছে। আবার অনেককেই গোলযোগপূর্ণ এলাকা থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।” মানুষের জীবন বাঁচানোর জন্য তিনি জাতিসংঘের তহবিল পুরোপুরি কাজে লাগানো এবং ইউক্রেনের অবরুদ্ধ মারিউপোল নগরী থেকে মানুষজনকে সরিয়ে নিতে প্রস্তুত বলে জানান।

ইউক্রেনে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন লঙ্ঘন, মানবতা বিরোধী অপরাধ এবং সম্ভাব্য যুদ্ধাপরাধের একাধিক খবরেও উদ্বেগ প্রকাশ করে গুতেরেস বলেছেন, এই সব ঘটনার একটি নিরপেক্ষ তদন্ত আহ্বান করা হয়েছে।

রাশিয়ার বিরুদ্ধে কিয়েভ থেকে পিছু হটে যাওয়ার সময় নৃশংসতা চালানোর অভিযোগ করেছে ইউক্রেন। তবে রাশিয়া বলছে, শান্তি আলোচনা বিপথগামী করা এবং মস্কোর ওপর আরও পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা আরোপের অজুহাত খাড়া করতে এমন অভিযোগ করা হচ্ছে। জাতিসংঘ মহাসচিব গুতেরেস বলেছেন, “আমরা কার্যকর সংলাপ, যত দ্রুত সম্ভব যুদ্ধবিরতি এবং সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য সঠিক পরিবেশ সৃষ্টির পথ খুঁজে পেতে অধীর আগ্রহী।”

এর আগে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেব এরদোয়ানেকে বলেন, মারিউপোলে কোনো সামরিক অভিযান চালানো হচ্ছে না এবং আজভস্টাল স্টিল প্ল্যান্টের লোকজনের ব্যাপারে কিয়েভকে দায়িত্ব নেয়া উচিত।

সোমবার ইউক্রেন জাতিসংঘ ও রেডক্রসকে আজভস্টাল থেকে বেসামরিক লোকজনকে সরানোর কাজে সহায়তার আহ্বান জানায়। এদিকে, বৃহস্পতিবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলনস্কির সঙ্গে বৈঠক করবেন জাতিসংঘ মহসচিব।

নিউজজি/এসজেড

পাঠকের মন্তব্য

লগইন করুন

ইউজার নেম / ইমেইল
পাসওয়ার্ড
নতুন একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে এখানে ক্লিক করুন