শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ , ১১ শাওয়াল ১৪৪৫

অন্যান্য
  >
ইউক্রেন সংকট

ফের রাশিয়ার ভয়াবহ হামলায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ইউক্রেন

নিউজজি ডেস্ক ২৩ অক্টোবর , ২০২২, ১০:২২:২২

  • ছবি: ইন্টারনেট

ঢাকা: ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, রাতভর ইউক্রেনজুড়ে বড় ধরনের হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি অবকাঠামো লক্ষ্য রাশিয়ার চালানো এই হামলায় আবারও ইউক্রেনজুড়ে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নতা তৈরি হয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে জেলেনস্কি বলেছেন, আগ্রাসী শক্তি আমাদের দেশে সন্ত্রাস চালিয়ে যাচ্ছে। রাতে শত্রুরা ব্যাপক আক্রমণ চালিয়েছে। ৩৬টি রকেট নিক্ষেপ করেছে। তবে এসব রকেটের বেশিরভাগই গুলি চালিয়ে ভূপাতিত করা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোতে এই হামলা অত্যন্ত জঘন্য। এ ধরনের হামলা সন্ত্রাসীদের সাধারণ কৌশল।

ইউক্রেনের বিমান বাহিনী বলেছে, দেশজুড়ে গুরুত্বপূর্ণ বিদ্যুৎ স্থাপনায় এক ডজনের বেশি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে রাশিয়া। এর ফলে কিছু কিছু অঞ্চল বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

এর আগে, ইউক্রেনের বিমানবাহিনী কমান্ড জানায়, শনিবার সকালের দিকে ইউক্রেনে ৩৩টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে রাশিয়া। এসব ক্ষেপণাস্ত্রের ১৮টি গুলি চালিয়ে ধ্বংস করা হয়েছে।

গত ১০ অক্টোবর থেকে ইউক্রেনের বিদ্যুৎ অবকাঠামোতে বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা শুরু করেছে রাশিয়া। এর ফলে ইউক্রেনের তাপবিদ্যুৎ উৎপাদনের অন্তত অর্ধেক এবং পুরো বিদ্যুৎ ব্যবস্থার প্রায় ৪০ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

শনিবার ভোরের কিছুক্ষণ পর ইউক্রেনজুড়ে বিভিন্ন অঞ্চলের স্থানীয় কর্মকর্তারা জ্বালানি স্থাপনায় হামলা ও বিদ্যুৎ বিভ্রাটের খবর জানাতে শুরু করেন। রাশিয়ার হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত বিদ্যুৎ যোগাযোগ ব্যবস্থা মেরামতের কাজে ইঞ্জিনিয়াররা নিযুক্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন তারা। সরবরাহ ব্যাঘাত ঘটায় ইউক্রেনের আঞ্চলিক গভর্নররা বাসিন্দাদের পানি মজুত করার পরামর্শ দিয়েছেন।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, রাজধানী কিয়েভের কিছু অংশ সন্ধ্যা পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে। রাজধানীর কেন্দ্রীয় একটি এলাকায় দোকানপাট ও ট্রাফিক লাইট বন্ধ আছে।

দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর মিকোলাইভের প্রত্যক্ষদর্শীরা রয়টার্সকে বলেছেন, কয়েক ঘণ্টা ধরে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এই শহর। যে কারণে কিছু নেটওয়ার্কে মোবাইল ফোনের সিগন্যালও ব্যাহত হয়েছে।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের শীর্ষ সহযোগী মিখাইলো পোডোলিয়াক বলেছেন, মস্কো এই হামলার মাধ্যমে ইউরোপে শরণার্থীদের নতুন ঢেউ তৈরি করতে চায়। অন্যদিকে ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা বলেছেন, রাশিয়া গণহত্যা চালাচ্ছে।

জেলেনস্কির উপদেষ্টা কিরিলো টাইমোশেঙ্কো বলেছেন, শনিবার বিকেল পর্যন্ত ইউক্রেনজুড়ে ১০ লাখেরও বেশি মানুষ বিদ্যুৎবিহীন রয়েছেন। তাদের মধ্যে খমেলনিৎস্কির পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় ৬ লাখ ৭২ হাজারের বেশি মানুষও রয়েছেন।

একই সময়ে ইউক্রেনীয় খেরসন অঞ্চলের দখলদার রুশ কর্তৃপক্ষ সেখানকার বেসামরিক নাগরিকদের অবিলম্বে শহর ছেড়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী শহরটির দিকে অগ্রসর হওয়ায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, যে কারণে শনিবার বেসামরিক নাগরিকদের খেরসন ত্যাগের এই নির্দেশ দেওয়া হয়।

খেরসন শহর পুনরুদ্ধারে ইউক্রেনীয় সৈন্যদের অত্যাসন্ন আক্রমণের ব্যাপারে রুশ দখলদার কর্তৃপক্ষ সতর্ক করে দেওয়ার পর গত কয়েক দিন ধরে হাজার হাজার বেসামরিক মানুষ দিনিপ্রো নদী পেরিয়ে চলে যাচ্ছেন। কিন্তু শনিবার নতুন করে সতর্ক করে দেওয়ায় দিনিপ্রো নদীর আশপাশে মানুষের ঢল শুরু হয়েছে।

টেলিগ্রামে পোস্ট করা এক বিবৃতিতে খেরসনের রুশ কর্তৃপক্ষ বলেছে, আসন্ন উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতির কারণে শহরে ব্যাপক গোলাগুলির ক্রমবর্ধমান ঝুঁকি এবং সন্ত্রাসী হামলার হুমকি রয়েছে। যে কারণে সব বেসামরিক নাগরিককে অবিলম্বে শহর ছেড়ে দিনিপ্রোর বাম (পূর্ব) তীরে যাওয়া উচিত।- রয়টার্স।

নিউজজি/এস দত্ত

পাঠকের মন্তব্য

লগইন করুন

ইউজার নেম / ইমেইল
পাসওয়ার্ড
নতুন একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে এখানে ক্লিক করুন