বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১ , ৯ শাওয়াল ১৪৪৫

অন্যান্য
  >
একুশে বইমেলা

পর্দা নামলো একুশে বইমেলার

নিউজজি ডেস্ক ১ মার্চ , ২০২৩, ১২:০৫:০৯

  • পর্দা নামলো একুশে বইমেলার

ঢাকা: বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস মহামারীর পর আনন্দ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে উদ্যাপিত এবারের মাসব্যাপী অমর একুশে বইমেলা মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) শেষ হয়েছে। মেলার মূল প্রতিপাদ্য ছিল ‘পড়ো বই গড়ো দেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’।

এবার মেলার বিন্যাস থেকে শুরু করে অন্যান্য স্থাপনাতেও এবারের প্রতিপাদ্যকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়া হয়েছে।

বাংলা একাডেমির তথ্যকেন্দ্রের দেয়া তথ্য অনুযায়ী এবার ২৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৩ হাজার ৪৬৩টি নতুন বই প্রকাশিত হয়েছে। গত বছর ৩ হাজার ৪১৬টি নতুন বই বের হয়েছিলো। অনেক প্রকাশক তাদের নতুন সকল বইয়ের তথ্য না দেয়ায় মেলায় প্রকৃতপক্ষে কত নতুন বই এসেছে এই তথ্য পাওয়া যায়নি। নিবন্ধনকৃত মোট মোড়ক উন্মোচিত বইয়ের সংখ্যা ৭২২টি। এর বাইরেও অনেকে স্টল বা মেলার অন্য স্থানে অনেক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে। এর সঠিক তথ্য জানা যায়নি।

বইমেলায় বাংলা একাডেমিসহ সকল  প্রতিষ্ঠানের বই ২৫ শতাংশ কমিশনে বিক্রি হয়েছে। ২০২২ সালে বাংলা একাডেমি মেলার মোট ৩১ দিনে ১ কোটি ৩৪ লাখ টাকার বই বিক্রি হয়েছিল। চলতি বছরে ২৭ই ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ২৭ দিনে বাংলা একাডেমি ১ কোটি ২৪ লাখ টাকার বই বিক্রি করেছে। ২০২২ অমর একুশে বই মেলায় ৫২ কোটি টাকার বই বিক্রি হয়েছিল। এবার ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্টল মালিকদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য এবং আজকের সম্ভাব্য বিক্রি যুক্ত করলে এবার প্রায় ৪৭ কোটি টাকার বই বিক্রি হয়েছে।

অন্যদিকে, মেলায় স্থাপনকৃত আর্চওয়ের পরিসংখ্যান থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ২৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দর্শনার্থীর সংখ্যা ছিল ৬৩ লাখ ৫৩ হাজার ৪৬৩ জন।

একাডেমী সূত্র জানায়, অনুষ্ঠানে সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্ সাহিত্য পুরস্কার ২০২২, কবি জসীমউদ্দীন সাহিত্য পুরস্কার ২০২৩ এবং অমর একুশে বইমেলা ২০২৩ উপলক্ষে বিভিন্ন গুণীজন স্মৃতি পুরস্কার দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে ক্যারোলিন রাইট এবং জসিম মল্লিককে সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্ সাহিত্য পুরস্কার ২০২২ এবং কবি মোহাম্মদ রফিক-কে কবি জসীমউদ্দীন সাহিত্য পুরস্কার ২০২৩ দেওয়া হয়।

অমর একুশে বইমেলা ২০২৩-এর সমাপনী অনুষ্ঠানে ২০২২ সালে প্রকাশিত বিষয় ও গুণমানসম্মত সর্বাধিক সংখ্যক বই প্রকাশের জন্য আগামী প্রকাশনী-কে চিত্তরঞ্জন সাহা স্মৃতি পুরস্কার-২০২৩ প্রদান করা হয়। ২০২২ সালে প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে শৈল্পিক ও গুণমান বিচারে সেরা বই বিভাগে আহমদ রফিক রচিত ‘বিচ্ছিন্ন ভাবনা’ প্রকাশের জন্য জার্নিম্যান বুক্স, মোহাম্মদ হারুন-উর-রশিদ রচিত ‘বাংলা একাডেমি আমার বাংলা একাডেমি’ বইয়ের জন্য ঐতিহ্য এবং হাবিবুর রহমান রচিত ‘ঠার:বেদে জনগোষ্ঠীর ভাষা’ প্রকাশের জন্য পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লি.-কে মুনীর চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার ২০২৩ প্রদান করা হয়। ২০২২ সালে প্রকাশিত শিশুতোষ বইয়ের মধ্য থেকে গুণমান বিচারে সর্বাধিক গ্রন্থ প্রকাশের জন্য ময়ূরপঙ্খি-কে রোকনুুজ্জামান খান দাদাভাই স্মৃতি পুরস্কার-২০২৩ প্রদান করা হয়।

এছাড়া ২০২৩ সালের অমর একুশে বইমেলায় অংশগ্রহণকারী প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্য থেকে নান্দনিক অঙ্গসজ্জায় সেরা প্রতিষ্ঠান হিসেবে পুথিনিলয় (প্যাভিলিয়ন), নবান্ন প্রকাশনী (২-৪ ইউনিট), উড়কি (১ ইউনিট) -কে শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার ২০২৩ প্রদান করা হয়।

বাংলা একাডেমির সভাপতি কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেনের সভাপতিত্বে মঙ্গলবার বিকেল ৫ টায় অমর একুশে বইমেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তৃতা রাখেন একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন ‘অমর একুশে বইমেলা ২০২৩’-এর সদস্য-সচিব ডা. কে এম মুজাহিদুল ইসলাম। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। বাংলা একাডেমির সচিব এ. এইচ. এম. লোকমান ধন্যবাদ জানান।

মহাপরিচালক বলেন, কোভিড মহামারি পরবর্তীকালে একমাসব্যাপী অমর একুশে বইমেলা ২০২৩ আয়োজন সত্যিই আমাদের জন্য বড়ো একটি সফলতা। বিন্যাস ও আঙ্গিকগত দিক দিয়ে এবারের বইমেলা সবার কাছে প্রশংসিত হয়েছে।

সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বলেন, বইমেলা কেবল বই বিক্রির জায়গা নয়। দল, মত, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকলের প্রাণের মেলা অমর একুশে বইমেলায় সকলের সক্রিয় অংশগ্রহণ ও সহযোগিতায় সাফল্যম-িত হয়েছে।

উল্লেখ্য, করোনা ভাইরাস পরিস্থিতির কারণে পরপর ২ বার ভার্চুয়ালি উদ্বোধনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবার স্বশরীরে ১ ফেব্রুয়ারি বইমেলা ২০২৩ এর উদ্বোধন ঘোষণা করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারপ্রাপ্ত ১৫ জন লেখকের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। এদিন বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত ৭টি বইয়ের মোড়ক উন্মোচনও করেন তিনি।

পাঠকের মন্তব্য

লগইন করুন

ইউজার নেম / ইমেইল
পাসওয়ার্ড
নতুন একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে এখানে ক্লিক করুন