মঙ্গলবার, ২১ মার্চ ২০২৩, ৬ চৈত্র ১৪২৯ , ২৮ শাবান ১৪৪৪

ফিচার
  >
বিশেষ দিবস

বিশ্ব তোতলামি সচেতনতা দিবস আজ

নিউজজি ডেস্ক ২২ অক্টোবর , ২০২২, ১২:১৩:৩১

184
  • বিশ্ব তোতলামি সচেতনতা দিবস আজ

ঢাকা: আজ ২২ অক্টোবর। বিশ্ব তোতলামি সচেতনতা দিবস। আমাদের আশেপাশের অনেকেই আছেন যারা তোতলা। সেজন্যই আজকের দিন অর্থাত্‍ ২২ অক্টোবর নিয়ম করে তোতলামির সচেতনতা বাড়াতে এই দিনটি পালন করা হয়। এ দিবসের মাধ্যমে বোঝানোর চেষ্টা করা হয়, এটা একটি সাময়িক রোগ। ঠিক মতো চিকিত্‍সা করলেই এই রোগ সেরে যায়।

প্রতি বছর বিশ্ব জুড়ে ২২ অক্টোবর আন্তর্জাতিক তোতলামি সচেতনতা দিবস পালন করা হয়ে থাকে। বিশ্বের একাংশ মানুষের ভীষণ সাবলীলভাবে কথা বলতে অসুবিধা হয়। কথা বলবার সময় তাদের তোতলামি লক্ষ্য করা যায়। এই সমস্যার কারণে তাদের অনেকসময় হাসির খোরাক হতে হয়। তারা নিজেদেরকে কোনঠাসা করে ফেলে, মনোবল ভেঙে যায় তাদের। সেইসব মানুষের কথা মাথায় রেখেই তোতলামি বিষয়ে সচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যেই এই বিশেষ দিনটি পালন করা হয়ে থাকে৷

এর মাধ্যমে বোঝাতে চেষ্টা করা হয় যে, তোতলামি একটি সাময়িক রোগ মাত্র। উপযুক্ত চিকিৎসার সাহায্যে এই অসুখ দূর করা সম্ভব৷ এই কথাও প্রত্যেককে বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয় যে এটিকে হাসির খোরাক বানানো উচিত নয় কখনই। বিশ্বের যে সব মানুষ এই সমস্যায় ভুক্তভোগী তারা যে একা নন, তাদের পাশে দাঁড়ানোর,তাদের গ্রহণ করবার, তাদের কথা বোঝার, তাদের নিয়ে চিন্তা করবার মানুষের যে অভাব নেই, এই দিনটিকে বিশেষ মর্যাদা সহকারে উদযাপনের মাধ্যমে সেই বার্তাটিও ছড়িয়ে দেওয়ার প্রয়াস করা হয়।

১৯৯৮ সালের ২২ অক্টোবর থেকে অকল্যান্ডের মাইকেল সুগারম্যানের নেতৃত্বে প্রথম আন্তর্জাতিক তোতলামি সচেতনতা দিবস উদযাপন শুরু হয়েছিল। মূলত যে তিনটি সংস্থা দ্বারা এই দিবস উদযাপনের পরিকল্পনা সংগঠিত হয় সেগুলি হল, ইউরোপিয়ান লীগ অব স্টাটারিং অ্যাসোসিয়েশনস, ইন্টারন্যাশনাল ফ্লুয়েন্সি অ্যাসোসিয়েশন এবং ইন্টারন্যাশনাল স্টাটারিং অ্যাসোসিয়েশন।

বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন ধরনের আয়োজন করা হয় এই দিনটি উদযাপন উপলক্ষে। তবে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ হলো, ইন্টারন্যাশনাল স্টাটারিং অ্যাসোসিয়েশন সেই ১৯৯৮ সাল থেকেই প্রতিবছর ১ অক্টোবর থেকে ২২শে অক্টোবর পর্যন্ত একটি অনলাইন সম্মেলনের আয়োজন করে। এই সম্মেলনে মূলত তোতলামির সমস্যায় জর্জরিত মানুষদের পাশে থাকতে উৎসাহী ব্যক্তিরা এবং ভাষা রোগ বিশেষজ্ঞ ও তাদের চিকিৎসাধীন মানুষের সমাহার লক্ষ্য করা যায়। 

এছাড়া জনসচেতনতামূলক বিভিন্ন কর্মসূচি ও ইভেন্ট, শিক্ষামূলক কার্যক্রম, এমনকি গণমাধ্যম প্রচারও অন্তর্ভুক্ত থাকে। এই অনলাইন সম্মেলনে দেখানো হয় ভুক্তভোগী মানুষের গল্প, কখনো তোতলামির জন্য কী ধরনের থেরাপি ব্যবহার করলে তা এই অসুখ থেকে মুক্তি দিতে পারে তা নিয়ে গবেষণামূলক আলোচনা ইত্যাদি নানা বিষয়।

এছাড়াও বিশেষজ্ঞদের সরাসরি প্রশ্ন করবার ব্যবস্থাও রয়েছে সেখানে। এই দিনটি কোন দেশে কীভাবে পালিত হয় সে নিয়ে লেখালেখির আহ্বানও জানায় এই সংস্থা। এমনকি বিশ্ববিখ্যাত কৃতি মানুষজন যারা এই তোতলামির সমস্যায় ভুগেছেন, তাদেরকেও এই সম্মেলনের মুখ হিসেবে হাজির করা হয় মনোবল বাড়িয়ে তোলবার উদ্দেশ্যে। এছাড়াও আরো বিভিন্ন দেশে এমনই নানাপ্রকার ইভেন্ট, সেমিনার ইত্যাদির সাহায্যে নানা আয়োজনের মাধ্যমে এই দিনটিকে উদযাপন করা হয়ে থাকে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করবার উদ্দেশ্যে।

কথা বলতে পারায় মানুষকে অন্য প্রাণীদের থেকে আলাদা করে তুলেছে। তবে কিছু মানুষ সেই কথাটা ঠিকভাবে বলতে পারেন না। তাদের জিভে আড়ষ্টতা থাকে। আমরা তাদের প্রতি খুব কম সময়ই সহমর্মী হই। বরং, একা কিংবা সবার সামনে সুযোগ পেলেই আমরা তাদের নিয়ে হাসাহাসি করি। তাদেরকে অসম্মান করি। আমাদের এই আচরণ ঠিক নয়।

সঠিক চিকিৎসা পদ্ধতি মেনে প্রথম থেকেই চিকিৎসা শুরু করলে তোতলামি ১০০ শতাংশ সারানো সম্ভব। তবে চিকিৎসা দেরিতে শুরু হলেও তোতলামো কমানো সম্ভব। এক্ষেত্রে রোগের লক্ষণগুলো প্রকট হওয়ার ৩-৬ মাসের মধ্যে যদি চিকিৎসা শুরু হয়, তাহলে অনূর্ধ্ব ৫ বছরের শিশুর তোতলামি ১০০ শতাংশ সারিয়ে তোলা যায়। পাশাপাশি বড়দের ক্ষেত্রেও তোতলামো ৬০-৮০ শতাংশ কমানো সম্ভব। বড়দের অবশ্যই বাড়িতে প্র্যাকটিস করতে হবে। প্রতিদিন এক-দেড় ঘণ্টা অভ্যাস প্রয়োজন।

তোতলামি সারানোর একমাত্র চিকিৎসা ‘থেরাপি’। সঠিক সময়ে থেরাপির মাধ্যমে একজন অভিজ্ঞ থেরাপিস্ট সম্পূর্ণভাবে তোতলামো সারিয়ে তুলতে পারেন।

পাঠকের মন্তব্য

লগইন করুন

ইউজার নেম / ইমেইল
পাসওয়ার্ড
নতুন একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে এখানে ক্লিক করুন