শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ , ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

ফিচার
  >
বিশেষ দিবস

আজ বিশ্ব বায়ু দিবস

নিউজজি ডেস্ক ১৫ জুন , ২০২২, ১১:৩০:৫৮

3K
  • ছবি :ইন্টারনেট

ঢাকা:ঢাকা : আজ ১৫ জুন, বিশ্ব বায়ু দিবস।  প্রতিবছরের ন্যায় সারা বিশ্বে পালিত হচ্ছে এ দিবস। মানুষের গড় আয়ু কমার ক্ষেত্রে যে ভূমিকা রাখছে, তা ধূমপান। এইডস কিংবা সন্ত্রাসী হামলায় মৃত্যুর চেয়ে অনেক বেশি মৃত্যু হয় ধুমপানে। বায়ুর শক্তি এবং কীভাবে এই শক্তিকে কাজে লাগানো যায় – সেই সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতেই পালন করা হয় বিশ্ব বায়ু দিবস। শুধু তাই নয়, এই দিনে এই অপ্রচলিত শক্তি ব্যবহারের সুবিধা এবং এখনও পর্যন্ত এই শক্তিকে কীভাবে কাজে লাগানো হচ্ছে, সেই বিষয়গুলিও পর্যবেক্ষণ করা হয়।

২০০৭ সালের ১৫ জুন প্রথম বিশ্ব বায়ু দিবস উদযাপনন করা হয়েছিল। তবে তখন তা ছিল শুধুই ‘বায়ু দিবস’। দুই বছর পর, ২০০৯ সালে বর্তমান নামটি দেওয়া হয়।
 
জানা যায়, ইউরোপীয় ইউনিয়নের বায়ুশক্তি নিয়ে যারা কাজ করছে তাদের সমন্বয়ে ইউরোপিয়ান উইন্ড এনার্জি এসোসিয়েশন (ইডব্লিউইএ) নামের একটি সংগঠন গড়ে তোলা হয়।
 
‘উইন্ডইউরোপ’ (WindEurope) সংস্থা জানিয়েছে, উপকূলীয় এলাকার বায়ুশক্তিই এখন বিশ্বের, বিশেষ করে ইউরোপের সবথেকে সস্তা শক্তি। বড় বড় উইন্ড টারবাইন ব্যবহার করে বায়ুশক্তিকে বিদ্যুৎশক্তিতে রূপপান্তরিত করা হয়। বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলেই, বর্তমানে বাতাসের শক্তিকে কাজে লাগাতে এই বিশাল বিশাল টারবাইন ব্যবহার করা শুরু হয়েছে। ভারতেও এই বিষয়ে কাজ শুরু হয়েছে।
 
যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব শিকাগোর এনার্জি পলিসি ইনস্টিটিউটের (ইপিআইসি) গবেষকরা বলছেন,বায়ু দূষণের এই সূচকের হিসাবে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি দূষণের শিকার পাঁচ দেশের চারটিই দক্ষিণ এশিয়ায়। বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বায়ু দূষণের শিকার বাংলাদেশ।বায়ু দূষণের কারণে গড়ে সাত বছর করে আয়ু হারাচ্ছে বাংলাদেশিরা।
 
ইউনিভার্সিটি অব শিকাগোর এই বায়ু দূষণ জীবনকাল সূচক অনুযায়ী, বাংলাদেশে সবচেয়ে দূষিত শহর ঢাকার বাসিন্দারা গড়ে ৮ বছর করে আয়ু হারাচ্ছেন। চট্টগ্রামে আয়ু কমছে সাড়ে ছয় বছর করে।
 
প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের ৬৪ জেলার সবক’টিতেই বাতাসে দূষণকারী কণার উপস্থিতি ডব্লিউএইচওর সহনীয় সীমার বেশি।
 
দক্ষিণ এশিয়ার বিপুল জনসংখ্যা এবং জনসংখ্যার ঘনত্বের কারণে এই অঞ্চলের গড় আয়ু হ্রাসের পরিমাণ বিশ্বের মোট আয়ুষ্কালের ৫২ শতাংশ এবং এটা হচ্ছে কারণ এখানকার বাতাসে ডব্লিউএইচওর নির্দেশিত সীমার চেয়ে অনেক বেশি পরিমাণে দূষণকারী কণা উপস্থিতি।
 
১৪ জুন মঙ্গলবার প্রকাশিত রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বের ৯৭ শতাংশ মানুষ এমন এলাকায় বসবাস করছে, যেখানে বায়ু দূষণের মাত্রা সহনীয় সীমা ছাড়িয়ে গেছে। আর তা মানুষের গড় আয়ু কমার ক্ষেত্রে যে ভূমিকা রাখছে, তা ধূমপান, এইডস কিংবা সন্ত্রাসী হামলায় মৃত্যুর চেয়ে অনেক বেশি।
 
ইপিআইসির এয়ার কোয়ালিটি লাইফ ইনডেক্সের পরিচালক ক্রিস্টা হাসেনকফ বলেন, “দূষণের প্রভাব সম্পর্কে আমাদের বোঝাপড়া বাড়ায় এখন সরকারগুলোর জন্য জরুরি ভিত্তিতে নীতি বদলানোর পক্ষে একটি শক্তিশালী কারণ উপস্থাপন করা সম্ভব হবে।”
 
এই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বায়ু দূষণ রোধে আশা করা যাচ্ছে বাংলাদেশ তাদের পর্যবেক্ষণ সক্ষমতা বাড়াবে। বর্তমানে চার শহরে চালু থাকা তাৎক্ষণিক পরিমাপ ব্যবস্থা বাড়িয়ে আট শহরে বিস্তৃত করার হবে।
 
বাংলাদেশে ইটভাটাগুলোতে আরও পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি ব্যবহারে উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছে সরকার। প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ঢাকার ৬০ শতাংশ দূষণের জন্য এসব ইটভাটা দায়ী। এছাড়া ২০২৫ সালের মধ্যে সরকার ইটের পরিবর্তে কংক্রিট ব্লক ব্যবহারের লক্ষ্য বাস্তবায়নে কাজ করছে, যা বায়ু দূষণ কমানো এবং জমির উপরিভাগের মাটি সংরক্ষণে সহায়ক হবে।
 
গবেষণাপত্রে বলা হয়, “অবশ্য এই নীতিগুলোর আদৌ সফল হয়েছে কি না, তা বোঝা যাবে বাতাসে দূষণকারী কণা কমেছে কি না সেটা নিণর্য়ের মাধ্যমে। এজন্য আসন্ন বছরগুলোতে এসব দেশের বাতাসের মান বিষয়ক তথ্যউপাত্তের গণনাভিত্তিক মূল্যায়ন দরকার হবে আমাদের।”

পাঠকের মন্তব্য

লগইন করুন

ইউজার নেম / ইমেইল
পাসওয়ার্ড
নতুন একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে এখানে ক্লিক করুন