শুক্রবার, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৫ মাঘ ১৪৩১ , ৮ শাবান ১৪৪৬

ফিচার
  >
মানচিত্র

নিষিদ্ধ তিব্বত সে এক অপার সৌন্দর্য

নিউজজি ডেস্ক ২৬ মে , ২০২১, ১২:৪৮:২৮

3K
  • ইন্টারনেট থেকে

ঢাকা: বিশ্বব্যাপী দেশটির পরিচিতি নিষিদ্ধ দেশ হিসেবেই। দেশ? চমকে উঠতে হয়। কারণ তিব্বত এখনও যে দেশের সুযোগ সুবিধায় নেই। তিব্বতের গায়ে তকমা লেগে আছে নিষিদ্ধ। তার ওপর অন্যায়ভাবে চীনের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল হিসেবে পার করছে বছরের পর বছর। কেন? সবকিছুর জট খোলা যাক তবে। 

তিব্বতের চতুর্দিকে বিচ্ছিন্নভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে অসংখ্য পাহাড় ও গুহা। সেই পাহাড়ি গুহাগুলোতে বাস করে বৌদ্ধ পুরোহিত লামারা। তিব্বতের গুহাগুলো নিয়েও রহস্য আর জল্পনা-কল্পনার শেষ নেই। তিব্বত বা লাসায় দীর্ঘদিন মানুষের প্রবেশাধিকার না থাকা, দুর্গম পরিবেশ, লামাদের কঠোরতা ও পর্যটক নিষিদ্ধের কারণে বাইরের পৃথিবীতে তিব্বত যেন পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন এক অচেনা জগত। সম্রাট সগেন পো তিব্বতের রাজধানী লাসা নগরীর প্রতিষ্ঠাতা। ৬৪১ খ্রিস্টাব্দে সম্রাট একটি বিরাট জলাশয় ভরাট করে প্রাসাদ এবং মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। তিব্বতের বিভিন্ন মন্দিরের ভেতরে সোনার তৈরি বড় বড় প্রদীপ মাখন দিয়ে জ্বালানো থাকে। ৪ হাজার ভরি ওজনের একটি প্রদীপও সেখানে রয়েছে। 

হিমালয়ের উত্তরে অবস্থিত এই পরাধীন দেশটি অত্যন্ত দুর্গম। বিশ্বের সর্বোচ্চ মালভূমি আর বরফ গলা নদী নিয়ে জাদুময়ী এক রহস্যরাজ্য তিব্বত। লাসার অদূরেই অবস্থিত গোবি মরুভূমি। এই মরুভূমির কষ্টকর পরিবেশ মানুষকে কাছে যেতে নিরুৎসাহী করে। এই অঞ্চলগুলো এতই উঁচু যে একে পৃথিবীর ছাদ বলা হয়। তিব্বতীয় মালভূমির গড় উচ্চতা ১৬,০০০ ফুট। বহির্বিশ্বের মানুষের প্রবেশাধিকার না থাকা, দুর্গম পরিবেশ, লামাদের কঠোরতা ইত্যাদি বিষয় তিব্বত সম্পর্কে মানুষের কৌতূহল আরো বাড়িয়েছে।

লাসা ইটালিয়ান শব্দ, যার অর্থ ‘ঈশ্বরের স্থান’। তিব্বতিদের জীবনে ধর্ম একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। তাদের প্রধান ধর্মগুরু দালাইলামা। নামটি এখন সারাবিশ্বে পরিচিত। বৌদ্ধ সন্ন্যাসীরা তিব্বতে ‘লামা’ নামে পরিচিত। ‘লামা’ শব্দের অর্থ ‘প্রধান’। আর ‘দালাইলামা’ শব্দের অর্থ ‘জ্ঞান সমুদ্রের সর্বপ্রধান’। সোনার চূড়া দেওয়া ‘পোতালা’ প্রাসাদে দালাইলামা বাস করেন। ১৩৯১ সালে প্রথম দালাইলামার আবির্ভাব ঘটে। ১৯১২ সালে ত্রয়োদশ দালাইলামা কর্তৃক গণচীনের একটি স্বশাসিত অঞ্চল হিসেবে তিব্বত প্রতিষ্ঠা পায়। এই অঞ্চলটি চীনের অধীন হলেও তিব্বতিরা তা মানে না। ১৯৫৯ সালে গণচীনের বিরুদ্ধে তিব্বতিরা স্বাধিকার আন্দোলন করে ব্যর্থ হয়। তখন দালাইলামার নেতৃত্বে অসংখ্য তিব্বতি ভারত সরকারের আশ্রয় গ্রহণপূর্বক হিমাচল প্রদেশের ধর্মশালায় বসবাস আরম্ভ করেন। সেখানেই ভূতপূর্ব স্বাধীন তিব্বতের নির্বাসিত সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়। 

তিব্বতে বিদেশী পর্যটকদের সংখ্যা আরো বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে চীনপন্থী তিব্বত সরকার। পাশাপাশি তিব্বত ভ্রমণে কাগজপত্র নিয়ে যে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয় সেটি কমানো হবেও বলে জানানো হয়েছে। তিব্বত সরকার বিদেশী পর্যটকদের প্রবেশের জন্য যে সময় লাগত তা কমাবে এবং অঞ্চলটির ৫০ শতাংশ বেশি অঞ্চল ভ্রমণ করার সুযোগ দিবে। প্রসঙ্গত, তিব্বত ভ্রমণের জন্য চীনের নাগরিক ছাড়া বিদেশী সকল নাগরিককেই বিশেষ অনুমতি নিতে হয়। আর এজন্য কিছু অনুমোদিত ট্র্যাভেল কোম্পানির মাধ্যমে আবেদন করতে হয়। তবে কোন সাংবাদিক এবং কূটনৈতিক সদস্যকে সেখানে সহজে যেতে দেয়া হয় না।

ছবি ও তথ্য – ইন্টারনেট 

পাঠকের মন্তব্য

লগইন করুন

ইউজার নেম / ইমেইল
পাসওয়ার্ড
নতুন একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে এখানে ক্লিক করুন