বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ , ১৮ রমজান ১৪৪৫

ফিচার
  >
মানচিত্র

হাঙ্গেরি, দানিয়ুব নদীর দেশ

নিউজজি ডেস্ক ৯ ডিসেম্বর , ২০১৮, ১২:১৬:৩৭

12K
  • হাঙ্গেরি, দানিয়ুব নদীর দেশ

কৃষ্ণসাগরের ঘন নীল জলের সাথে মিশে গেছে ভুবন বিখ্যাত এক নদী। যুগে যুগে কত কবি-সাহিত্যিক, কত ইতিহাস প্রণেতা এই নদীর ও নদীর পাড়ের কত কথা লিখে গেছেন। এ নদীর নাম দানিয়ুব। দানিয়ুবের জল গড়িয়ে গেছে ইউরোপের বিভিন্ন দেশেই। তার একটি অন্যতম দেশ হাঙ্গেরি। আমাদের আজকের আয়োজন হাঙ্গেরি নিয়েই। 

হাঙ্গেরি মধ্য ইউরোপের দেশ। এটি স্থলবেষ্টিত প্রজাতান্ত্রিক রাষ্ট্র। এদেশের সিংহভাগ অঞ্চল দানিউব উপত্যকা তথা হাঙ্গেরীয় সমভূমিতে অবস্থিত। এই সমতলভূমির ভেতর দিয়েই মূলত দানিউব নদী প্রবাহিত হয়েছে। হাঙ্গেরির রাজধানী ও বৃহত্তম শহর বুদাপেস্ট। শহরটি দানিউব নদীর উভয় তীরে অবস্থিত। শহরটি পূর্ব মধ্য ইউরোপের সাংস্কৃতিক ও বাণিজ্যিক কেন্দ্র। 

হাঙ্গেরির জনগণ নিজেদেরকে "মজর" নামে ডাকে। মজরেরা ছিল এশিয়া থেকে আগত যাযাবর গোষ্ঠী। ৯ম শতাব্দীর শেষভাগে আরপাদের নেতৃত্বে মজরেরা দানিউব ও তিসজা নদীর মধ্যবর্তী সমভূমি জয় করে, যা বর্তমান হাঙ্গেরীয় সমভূমির মধ্যভাগ। ১১শ শতকের শুরুর দিকেই মজরেরা রাজনৈতিকভাবে সংঘবদ্ধ হয় এবং খ্রিস্টধর্মে ধর্মান্তরিত হয়। হাঙ্গেরির প্রথম রাজা ছিলেন প্রথম স্টিফেন (১০০০ খ্রিস্টাব্দ)। ১০৮৩ সালে তাঁকে সাধু ঘোষণা করা হয়।

১৪শ শতকে বিদেশী শাসকেরা হাঙ্গেরি জয় করে। ১৪শ ও ১৫শ শতক ধরে বিভিন্ন ইউরোপীয় রাজবংশ হাঙ্গেরি শাসন করে। এরপর ১৬শ ও ১৭শ শতকে দেশটির অধিকাংশ ছিল উসমানীয় সাম্রাজ্যের দখলে। এসময় দেশটির পশ্চিমের কিয়দংশ অস্ট্রিয়ার হাব্সবুর্গ রাজবংশ নিয়ন্ত্রণ করত। ১৭শ শতকের শেষভাগে এসে হাব্সবুর্গেরা প্রায় সমস্ত হাঙ্গেরি দখলে নিতে সক্ষম হয়। হাঙ্গেরীয়রা ১৮৪৮ সালে হাব্সবুর্গদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে, কিন্তু তা দমন করা হয়। ১৮৬৭ সালে দুই পক্ষ সন্ধিচুক্তির মাধ্যমে একটি দ্বৈত সাম্রাজ্য গঠন করে, যার নাম দেয়া হয় অস্ট্রো-হাঙ্গেরীয় সাম্রাজ্য। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের (১৯১৪-১৯১৮) পর অস্ট্রো-হাঙ্গেরীয় সাম্রাজ্য বিলীন হয়ে যায় এবং হাঙ্গেরি পূর্ণ স্বাধীনতা লাভ করে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর হাঙ্গেরিতে সাম্যবাদী সরকার ক্ষমতা দখল করে এবং দেশটি সোভিয়েত-অনুগত দেশগুলির কাতারে যোগ দেয়। ১৯৯০ সালের নির্বাচনের পর একটি অ-সাম্যবাদী সরকার ক্ষমতায় আসে।

দেশটিতে ৬৫ লাখ ১১ হাজার হেক্টর জমিতে চাষাবাদ করা হয়। কৃষিপণ্যের মধ্যে আছে - গম, রাই, বার্লি, ভুট্টা, আলু, সূর্যমুখি বীজ প্রভৃতি। দেশটির ১৬লাখ ৭০ হাজার হেক্টর এলাকা জুড়ে রয়েছে সবুজ বনভূমি। 

হাঙ্গেরি মোটামুটি সমৃদ্ধ দেশ। শিল্পসমূহের মধ্যে আছে লৌহ ও ইস্পাত শিল্প, সিমেন্ট কারখানা, সার কারখানা, চিনি শিল্প, রাসানিক শিল্প, চামড়া শিল্প প্রভৃতি। দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা বৈদেশিক বাণিজ্যের উপর নির্ভরশীল। হাঙ্গেরিতে তেল ও গ্যাস ছাড়া অন্যান্য খনিজ দব্যের মধ্য আছে কয়লা, লিগনাইট, বক্সাইট প্রভৃতি।

বাংলাদেশে স্টুডেন্টদের  জন্য ইউরোপের সব দেশের ভিসা কড়াকড়ি করে দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। বর্তমানে  ইউরোপের  গরীব দেশগুলোতেও বাঙালীদের ভিসা দিচ্ছে না  । দূতাবাস থেকে  শতকরা ৯৯% ভিসা রিফিইজ করে দিচ্ছে। ফলে বাংলাদেশে স্টুডেন্টরা  উচ্চশিক্ষার ব্যাপারে  পিছপা হচ্ছে।  ইউরোপের সেনজেনভুক্ত সব দেশ যেখানে ভিসা কড়াকড়ি করেছে সেখানে হাঙ্গেরি ভিসার ব্যাপারে একদম শিথিলতা বজায় রাখছে। দেশটির সাথে বাংলাদেশের সম্পর্কও খুব ভালো।   

একনজরে

পুরো নাম : হাঙ্গেরি।

রাজধানী ও সর্ববৃহৎ শহর : বুদাপেস্ট।

সরকারি ভাষা : হাঙ্গেরীয়।

জাতিগোষ্ঠী : হাঙ্গেরীয় (৮৩.৭%), রোমা (৩.১%), জার্মান (১.৩%)।

প্রেসিডেন্ট : জানোস এডাব।

প্রধানমন্ত্রী : ভিক্টর অরবান।

আইনসভা : জাতীয় পরিষদ।

আয়তন : ৯৩ হাজার ৩০ বর্গকিলোমিটার।

জনসংখ্যা : ৯৮ লাখ ৫৫ হাজার ৫৭১।

ঘনত্ব : প্রতি বর্গকিলোমিটারে ১০৫.৯ জন।

গড় আয়ু : ৭১ (পুরুষ), ৭৮ (নারী)।

জিডিপি : মোট ২৬৫.০৩৭ বিলিয়ন ডলার, মাথাপিছু ২৬ হাজার ৯৪১ ডলার।

মুদ্রা : ফোরিন্ত।

জাতিসংঘে যোগদান : ১৪ ডিসেম্বর ১৯৫৫।

ছবি ও তথ্য – ইন্টারনেট 

পাঠকের মন্তব্য

লগইন করুন

ইউজার নেম / ইমেইল
পাসওয়ার্ড
নতুন একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে এখানে ক্লিক করুন