শনিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ , ৫ জুমাদাউস সানি ১৪৪৬

ফিচার
  >
মানচিত্র

নামে আইসল্যান্ড, তবে সবুজ

নিউজজি ডেস্ক ১৭ জুন , ২০২৩, ১১:৫১:৩৬

431
  • নামে আইসল্যান্ড, তবে সবুজ

ঢাকা: এ বুঝি আইসক্রিমের দেশ অথবা তুষারে ঢাকা, কিন্তু আসলে কি তাই? একদম না! নাম আইসল্যান্ড হলেও এই দেশ মোটেই বরফে ঢাকা নয়! এমনকি তেমন ভয়ঙ্কর ঠাণ্ডাও নয়। বরং কল্পকাহিনীর মতো চোখজুড়ানো সব দৃশ্যপট রয়েছে এই দ্বীপদেশের পুরোটা জুড়ে। আগুন আর বরফ, এই দুয়ের মিলনে আপনার কল্পনাকেও হার মানাবে আইসল্যান্ড। 

প্রায় এক হাজার বছর আগে খ্রিষ্টীয় নবম শতকে ভাইকিং অভিযানকারীরা আইসল্যান্ডে প্রথম বসতি স্থাপন করে। ৩৯ হাজার বর্গমাইলের এ দেশে জনসংখ্যা তিন লক্ষ বত্রিশ হাজার।  

জমাট হিমবাহ আর গনগনে সক্রিয় আগ্নেয়গিরি একে অপরকে আলিঙ্গন করে রয়েছে, এমনটা আর কোথায় দেখতে পাবেন আপনি? পাহাড়ি এই দ্বীপের অবস্থান উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরে। যদিও মূল ভূখণ্ডের সাথে এর কোনও সংযোগ নেই তবুও একে ইউরোপীয় এবং নরডিক দেশ বলে ধরা হয়। অন্যান্য টুরিস্ট স্পটের মতো ছিমছাম গোছালো নয় এই দেশ। এখানে বেড়াতে এলে আপনাকে হয়ে যেতে হবে অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমী।

বছরের বিভিন্ন সময়ে এর দিন-রাত্রির দৈর্ঘ্যে বিশাল পার্থক্য দেখা যায়। জুন মাসে রাতের আঁধার নামে বটে কিন্তু আকাশ পুরোপুরি অন্ধকার হয় না। মার্চ এবং সেপ্টেম্বর ইকুইনক্স বা বিষুবের সময়ে দিনরাত্রির দৈর্ঘ্য প্রায় এক হলেও অন্য সময়ে তা হয় না। ডিসেম্বরে প্রায় ২০ ঘণ্টাই সেখানে রাত্রি। আবার গ্রীষ্মকালে এ অবস্থা উল্টে যায় এবং আপনি দেখতে পাবেন চমৎকার একটি দৃশ্য, যা হল “মাঝরাতের সূর্য”! 

শীতকালে বরফে ঢাকা আইসল্যান্ডের যে সৌন্দর্য তা পাল্টে যায় আবার গ্রীষ্মে এবং দুই ঋতুতে ভিন্ন ভিন্ন ভাবে আপনি উপভোগ করতে পারবেন আপনার আইসল্যান্ড ভ্রমণ। এখানের আবহাওয়া মুহূর্তেই পাল্টে যেতে পারে আর সেই কারণে এখানকার বাসিন্দাদের মাঝে একটি কৌতুক প্রচলিত আছে। “আবহাওয়া তোমার পছন্দ না হলে, পাঁচ মিনিট অপেক্ষা করো!” এটা এমনই এক জায়গা যেখানে সূর্যের তাপে ত্বক পুড়ে যাবে আবার এর একটু পরেই বৃষ্টিতে ভিজে একসা হয়ে যাবেন আপনি। ধরে নেওয়া হয়, শীতকাল যদি বেশ লম্বা এবং ঠাণ্ডা হয় তবে গ্রীষ্ম হবে বেশ উষ্ণ। এখানে বরফের মাঝে মাঝেও রয়েছে অনেকগুলো উষ্ণ প্রস্রবণ বা স্পা। 

আইসল্যান্ডের পুরোটাই দর্শনীয় তবে আপনি যদি বিশেষ কিছু স্থান আলাদাভাবে দেখতে চান তার জন্যেও রয়েছে আকর্ষণ। প্রথমেই দেখতে যেতে পারেন গালফস। দুই ধাপে বিভক্ত এই জলপ্রপাত শীতকালে আংশিক জমাট থাকলেও সেটা গরমকালে এসে নিজের পূর্ণ প্রতাপে আবির্ভূত হয়। একটি দীর্ঘ ও গভীর খাদের মধ্যে এসে ঝাপিয়ে পড়ে এই জলপ্রপাত। 

এখানে যাবার সময় খুব সাবধান থাকা দরকার কারণ এখানে কোনও রেইলিং, ওয়ার্নিং সাইন বা নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেই। এর পরেই রয়েছে ব্লু ল্যাগুন। অপার্থিব এই নীল জল পৃথিবীর আর কোথাও দেখবেন না আপনি, এটা হলফ করে বলা যায়। আগ্নেয়গিরির লাভায় তৈরি ভুমিতে বেষ্টিত, এটা হল আইসল্যান্ডের সবচাইতে বিখ্যাত স্পা। কপাল ভালো থাকলে আপনি এখানে মেরুপ্রভারও দেখা পেয়ে যেতে পারেন। 

আইসল্যান্ডের রাজধানি রেকিয়াভিক থেকে উত্তরে ৯০ মিনিট দুরত্বে অবস্থিত বিয়ারনারফেল অঞ্চলে আপনি দেখা পাবেন একটি সক্রিয় উষ্ণ প্রস্রবণ যা থেকে পানির বুদবুদ সবসময়েই উঠতে থাকে কিন্তু আপনি হঠাৎ করেই দেখা পেয়ে যেতে পারেন আকাশছোঁয়া গরম পানির ফোয়ারার! এই এলাকায় অনেকগুলোই আছে আজ থেকে প্রায় ১০০০ বছর আগে কাজ শুরু করা উষ্ণ প্রস্রবণ। এ ছাড়াও আইসল্যান্ডে রয়েছে বেশ কয়েকটি ন্যাশনাল পার্ক। এর মাঝে রয়েছে ভাটনাইয়ওকুল পার্ক, পুরো দ্বীপের প্রায় ১০ শতাংশ জুড়ে এর অবস্থান। বরফের মাঝে আনন্দ করার জন্য এটি আদর্শ। পিংভেলির ন্যাশনাল পার্ক মূলত ঐতিহাসিক কারণে বিখ্যাত। 

স্নেইফেলসইয়োকুল ন্যাশনাল পার্ক রয়েছে স্নেইফেলসনেস উপদ্বীপ ঘিরে। আর এর মধ্যমণি হয়ে আছে দৃষ্টিনন্দন এক আগ্নেয়গিরি। ইচ্ছে করলে এখানে মাছ ধরেও সময় কাটানো যায়। আর আইসল্যান্ডের হিমবাহের সৌন্দর্য পুরোপুরি উপভোগ করতে হলে সবচাইতে উপযুক্ত স্থান হল ইয়োকুলসারলন।

ইতিহাসের সবচেয়ে ছোট দেশ হিসেবে বিশ্বকাপের মর্যাদাপূর্ণ আসরে জায়গা করে নেয়ার রেকর্ড গড়ল আইসল্যান্ড। ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপে আইসল্যান্ডের যাত্রা একটা চমকও বটে। 

উল্লেখ্য যে, আইস্ল্যান্ডে নেই সামরিক বাহিনীও। 

ছবি ও তথ্য – ইন্টারনেট । 

পাঠকের মন্তব্য

লগইন করুন

ইউজার নেম / ইমেইল
পাসওয়ার্ড
নতুন একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে এখানে ক্লিক করুন