মঙ্গলবার, ২১ মার্চ ২০২৩, ৬ চৈত্র ১৪২৯ , ২৮ শাবান ১৪৪৪

ফিচার
  >
ইতিহাস ও ঐতিহ্য

হোমনামুক্ত দিবস আজ ২৩ ডিসেম্বর

নিউজজি ডেস্ক ২৩ ডিসেম্বর , ২০২২, ১২:৩৩:০৪

74
  • হোমনামুক্ত দিবস আজ ২৩ ডিসেম্বর

ঢাকা: কুমিল্লার হোমনামুক্ত দিবস আজ ২৩ ডিসেম্বর। ১৬ ডিসেম্বর যখন সারা দেশ বিজয়ের আনন্দে উদ্বেলিত তখনো শক্রমুক্ত হতে পারেনি হোমনবাসী। ২২ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) পর্যন্ত উপজেলার ঘাগুটিয়া গ্রামে পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে তুমুল যুদ্ধে লিপ্ত হন হোমনাবাসী।

অবশেষে ১৯৭১ সালের ২৩ ডিসেম্বর বাঞ্ছারামপুর, দাউদকান্দি, মুরাদনগর ও কুমিল্লার ময়নামতি ক্যান্টনমেন্ট থেকে আগত মুক্তিযোদ্ধা ও যৌথ বাহিনীর ট্যাংক আক্রমণের পর সম্পূর্ণরূপে শক্রমুক্ত হয় ঘাগুটিয়া গ্রাম তথা কুমিল্লার হোমনা থানা।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ঘাগুটিয়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা সোবহান মিয়া বাসসকে জানান, বিজয়ের প্রাক্কালে ১৪ ডিসেম্বর সকালে সূর্যোদয়ের সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর ক্যাম্প থেকে লঞ্চযোগে পালিয়ে যাচ্ছিল শতাধিক পাকিস্তানি সেনার একটি দল। পালিয়ে হোমনার ঘাগুটিয়া লঞ্চঘাটের অদূরে আসা মাত্রই বাঞ্ছারামপুর ও হোমনার মুক্তিসেনারা একযোগে আক্রমণ করে। নিরুপায় হয়ে ঘাগুটিয়া পাকা মসজিদে আশ্রয় নেয়। পাকিস্তানী বাহিনী গ্রামে ঢুকেই মসজিদের পাশে দারোগা সিদ্দিকুর রহমান ও ভূঁইয়া বাড়িসহ আশেপাশের ৪০-৫০টি বাড়িতে আগুন দেয় এবং উপর্যুপরি গুলি চালায়।

পাকিস্তানি বাহিনী গ্রামে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে ঘাগুটিয়া ও ভবানীপুর গ্রামের অধিবাসীরা বাড়িঘর, সহায় সম্পত্তির মায়া ত্যাগ করে পার্শ্ববর্তী মাধবপুর, রামপুর ও নালাদক্ষিণ গ্রামে আশ্রয় নেয়। এ খবর মুরাদনগর ও দাউদকান্দির মুক্তিসেনাদের কাছে পৌঁছলে শতাধিক মুক্তিসেনা ঘাগুটিয়া যুদ্ধে অংশ নেয়। পরে ময়নামতি ক্যান্টনমেন্ট থেকে ট্যাঙ্ক নিয়ে আসা মিত্র বাহিনীর সহায়তায় ঘাগুটিয়া মুক্ত হয়।

ঘাগুটিয়া যুদ্ধে দুজন মুক্তিযোদ্ধাসহ গ্রামের ২০ নারী-পুরুষ শহিদ হন এবং শতাধিক গ্রামবাসী ও এফএফ কমান্ডার আব্দুল আউয়ালসহ অনেক মুক্তিযোদ্ধা এ যুদ্ধে আহত হন। পাকিস্তানী বাহিনীর হাতে যারা শহিদরা হলেন—সৈয়দ আলী প্রধান, কিসমত আলী প্রধান, আছমত আলী প্রধান, ছন্দু মিয়া, লাল মিয়া (লালা), দেওয়ান আলি ভূঁইয়া, জবা মিয়া, আমজত আলি হাজি (ভবানীপুর), কাশেম মিয়া (কাছম), খোরশেদ পাগলা, আইয়ুবের নেছা, মনজুরের নেছা, কালা মিয়া প্রধানের মা, হাওয়া, লালু মিয়া, গোলবরের নেছা, জাবেদ আলি, মুক্তিযোদ্ধা আলেক মিয়া, মুক্তিযোদ্ধা মতিউর রহমান মতি।

ঘাগুটিয়া গ্রামে ’৭১র মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীনতা ইতিহাসের কালের সাক্ষী হয়ে আজও দাঁড়িয়ে আছে ঘাগুটিয়া জামে মসজিদটি। পরবর্তী সময়ে ঐতিহাসিক মসজিদ ও স্কুলের পাশে গণকবরটি চিহ্নিত করে তা সংস্কার করা হয়েছে। এদিকে, প্রতিবছরের মতো ২৩ ডিসেম্বর হোমনা মুক্ত দিবস উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসন ও মুক্তিযোদ্ধাদের সমন্বয়ে ব্যাপক কর্মসূচি  পালন  করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুমন দে বলেন, দিবসটি উপলক্ষ্যে শুক্রবার উপজেলা চত্বর থেকে র‌্যালি করে, ঘাগুটিয়ায় আলোচনা সভার আয়োজন সভা ও মিলাদের আয়োজন করা হয়েছে। 

পাঠকের মন্তব্য

লগইন করুন

ইউজার নেম / ইমেইল
পাসওয়ার্ড
নতুন একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে এখানে ক্লিক করুন