মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৬ ফাল্গুন ১৪৩১ , ১৯ শাবান ১৪৪৬

ফিচার
  >
উৎসব

আজ ভাইফোঁটা

নিউজজি প্রতিবেদক ১৬ নভেম্বর , ২০২০, ১৩:২৫:৫০

3K
  • ছবি: নিউজজি ২৪

ঢাকা: “ভাইয়ের কপালে দিলাম ফোঁটা, যমের দুয়ারে পড়ল কাঁটা।

যমুনা দেয় যমকে ফোঁটা, আমি দিই আমার ভাইকে ফোঁটা॥

যমুনার হাতে ফোঁটা খেয়ে যম হল অমর।

আমার হাতে ফোঁটা খেয়ে আমার ভাই হোক অমর॥”

আজ ভাইফোঁটা। সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের একটি বড় উৎসব। এই উৎসবের পোষাকি নাম ভ্রাতৃদ্বিতীয়া অনুষ্ঠান। কার্তিক মাসের শুক্লাদ্বিতীয়া তিথিতে (কালীপূজার দুই দিন পরে) এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। বাঙালি হিন্দু পঞ্জিকা অনুযায়ী, এই উৎসব কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের ২য় দিনে উদযাপিত হয়। মাঝেমধ্যে এটি শুক্লপক্ষের ১ম দিনেও উদযাপিত হয়ে থাকে। বাংলাদেশসহ পশ্চিম ভারতে এই উৎসব ভাইদুজ নামেও পরিচিত।

সেখানে ভ্রাতৃদ্বিতীয়া পাঁচ-দিনব্যাপী দীপাবলি উৎসবের শেষদিন। আবার, মহারাষ্ট্র, গোয়া ও কর্ণাটকে ভাইফোঁটাকে বলে ভাইবিজ। নেপালে ও পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং পার্বত্য অঞ্চলে এই উৎসব পরিচিত ভাইটিকা নামে। সেখানে বিজয়াদশমীর পর এটিই সবচেয়ে বড় উৎসব। এই উৎসবের আরো একটি নাম হল যমদ্বিতীয়া।

কথিত আছে, এই দিন মৃত্যুর দেবতা যম তার বোন যমুনার হাতে ফোঁটা নিয়েছিলেন। অন্য মতে, নরকাসুর নামে এক দৈত্যকে বধ করার পর যখন কৃষ্ণ তার বোন সুভদ্রার কাছে আসেন, তখন সুভদ্রা তার কপালে ফোঁটা দিয়ে তাকে মিষ্টি খেতে দেন। সেই থেকে ভাইফোঁটা উৎসবের প্রচলন হয়।

এইভাবে বোনেরা ভাইয়ের দীর্ঘজীবন কামনা করে। তারপর ভাইকে মিষ্টি খাওয়ায়। ভাইও বোনকে কিছু উপহার বা টাকা দেয়।

অনেক সময় এই ছড়াটি বিভিন্ন পরিবারের রীতিনীতিভেদে পরিবর্তিত হয়ে থাকে। অতঃপর, বোন তার ভাইএর মাথায় ধান এবং দুর্বা ঘাসের শীষ রাখে। এই সময় শঙ্খ বাজানো হয় এবং হিন্দু নারীরা উলুধ্বনি করেন। এরপর বোন তার ভাইকে আশীর্বাদ করে থাকে (যদি বোন তার ভাইয়ের তুলনায় বড় হয় অন্যথায় বোন ভাইকে প্রণাম করে আর ভাই বোনকে আশীর্বাদ করে থাকে)। তারপর বোন ঐতিহ্যবাহী মিষ্টি দ্বারা ভাইকে মিষ্টিমুখ করায় এবং উপহার দিয়ে থাকে। ভাইও তার সাধ্যমত উক্ত বোনকে উপহার দিয়ে থাকে।

ভাইফোঁটা একটি ঘরোয়া অনুষ্ঠান হলেও ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে পালিত হয়। পশ্চিম ভারতের ভাইবিজ একটি বর্ণময় অনুষ্ঠান। সেখানে এই উপলক্ষে পারিবারিক সম্মেলনেরও আয়োজন করা হয়। মহারাষ্ট্রে মেয়েদের ভাইবিজ পালন অবশ্যকর্তব্য। এমনকি, যেসব মেয়েদের ভাই নেই, তাদেরও চন্দ্র দেবতাকে ভাই মনে করে ভাইবিজ পালন করতে হয়। এই রাজ্যে বাসুন্দি পুরী বা শ্রীখণ্ড পুরী নামে একটি বিশেষ খাবার ভাইবিজ অনুষ্ঠানের জন্য তৈরি করার রেওয়াজ আছে।

নিউজজি/ এস দত্ত   

 

পাঠকের মন্তব্য

লগইন করুন

ইউজার নেম / ইমেইল
পাসওয়ার্ড
নতুন একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে এখানে ক্লিক করুন