মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫, ২৭ কার্তিক ১৪৩২ , ২০ জুমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

ফিচার
  >
উৎসব

আজ শুভ মহালয়া : পিতৃপক্ষের অবসান ও দেবীপক্ষের শুরু

নিউজজি ডেস্ক ২১ সেপ্টেম্বর , ২০২৫, ০১:০৩:৩৯

397
  • আজ শুভ মহালয়া : পিতৃপক্ষের অবসান ও দেবীপক্ষের শুরু

ঢাকা: আজ শুভ মহালয়া। পিতৃপক্ষের অবসান ও দেবীপক্ষের শুরু।  চন্ডীপাঠের মধ্য দিয়ে দেবী দুর্গার আবাহনই মহালয়া হিসেবে পরিচিত। আর এই চন্ডীতেই আছে কিভাবে সৃষ্টি হয়েছে দেবী দুর্গার। বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ মহালয়া।

আজ ভোরে চন্ডীপাঠের মধ্য দিয়ে আবাহন ঘটে দেবী দুর্গার। দেবীকে আমন্ত্রণ জানানো হয় মর্ত্যলোকে। আগামী রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) ষষ্ঠীপূজার মাধ্যমে শারদীয় দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হলেও মূলত আজ থেকেই পূজার্থীরা দুর্গাপূজার আগমনধ্বনি শুনতে পাবেন।

এদিন মহালয়া উপলক্ষে রাজধানীর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরসহ দেশের বিভিন্ন মন্দিরে ভোর থেকেই শ্রীশ্রী চন্ডীপাঠসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে রাজধানীর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে সকাল সাড়ে ৭টায় পূর্বপুরুষদের আত্মার শান্তি কামনায়  তিল-তর্পণ। সকাল সাড়ে ৮টায় মহালয়ারঘাট স্থাপন ও বিশেষ পূজা অনুষ্ঠান। এরপর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে। ভোর সাড়ে ৬টা থেকে শুরু হবে আনুষ্ঠানিকতা।

শাস্ত্রীয় বিধান মতে, মহালয়ার অর্থ হচ্ছে, মহান আলোয় দুর্গতিনাশিনী দেবী দুর্গাকে আবাহন। দুটি পক্ষ রয়েছে, একটি হলো পিতৃপক্ষ, অন্যটি দেবীপক্ষ। অমাবস্যা তিথিতে পিতৃপক্ষের শেষ হয়, আর প্রতিপদ তিথিতে শুরু হয় দেবীপক্ষের। আজ মহালয়ার মাধ্যমে শুরু হচ্ছে সেই দেবীপক্ষ।

ধর্মমতে, এই দিনে দেব-দেবীকুল দুর্গাপূজার জন্য নিজেদের জাগ্রত করেন। মহালয়ার দিন ভোরে মন্দিরে মন্দিরে শঙ্খের ধ্বনি ও শ্রীশ্রী চন্ডীপাঠের মধ্য দিয়ে দেবীকে আবাহন জানানো হয়। এদিন গঙ্গাতীরে প্রার্থনা করে ভক্তরা মৃত আত্মীয়স্বজন ও পুর্বপুরুষদের আত্মার মঙ্গল কামনা করেন। তাই মহালয়া দুর্গোৎসবের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। দেবীর আরাধনা সূচিত হয় মহালয়ার মাধ্যমে। মহালয়া থেকেই দেবীপক্ষের শুরু।

বাঙালি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে দেবী দুর্গা সব অশুভ শক্তি বিনাশের প্রতীক রূপে পূজিত। মহামায়া অসীম শক্তির উৎস। পুরাণে আছে, মহালয়ার দিনে, দেবী দুর্গা মহিষাসুর বধের দায়িত্ব পান। শিবের বর অনুযায়ী কোনো মানুষ বা দেবতা কখনো মহিষাসুরকে হত্যা করতে পারবে না। ফলত অসীম ক্ষমতাশালী মহিষাসুর দেবতাদের স্বর্গ থেকে বিতাড়িত করে এবং বিশ্ব ব্রহ্মান্ডের অধীশ্বর হতে চায়। ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও শিব সম্মিলিতভাবে ‘মহামায়া’র রূপে অমোঘ নারীশক্তি সৃষ্টি করলেন এবং দেবতাদের ১০টি অস্ত্রে সুসজ্জিত সিংহবাহিনী দেবী দুর্গা ৯ দিনব্যাপী যুদ্ধে মহিষাসুরকে পরাজিত ও হত্যা করে।

পঞ্জিকা মতে, এবার দেবী আসছেন (আগমন) গজে (হাতি)  চড়ে, যার ফল হচ্ছে শস্যপূর্ণা বসুন্ধরা। আর বিদায় নেবেন দোলায়  চড়ে, যার ফল হচ্ছে মড়ক। পূরাণ মতে, রাজা সুরথ প্রথম দেবী দুর্গার আরাধনা শুরু করেন। বসন্তে তিনি এই পূজার আয়োজন করায় দেবীর এ পূজাকে বাসন্তী পূজাও বলা হয়। কিন্তু রাবণের হাত থেকে সীতাকে উদ্ধার করতে যাওয়ার আগে শ্রী রামচন্দ্র দুর্গাপূজার আয়োজন করেছিলেন। তাই শরৎকালের এই পূজাকে হিন্দুমতে অকালবোধনও বলা হয়।

তবে মহালয়ার আর একটি দিক হচ্ছে- এই তিথিতে যারা বাবা-মা ছাড়া তারা তাদের পূর্বপুরুষদের স্মরণ করে তাদের আত্মার শান্তি কামনা করে অঞ্জলি প্রদান করেন। সনাতন ধর্ম অনুসারে এই দিনে প্রয়াত আত্মাদের মর্ত্যে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। প্রয়াত আত্মার যে সমাবেশ হয় তাকেই বলা হয় মহালয়া।

নিউজজি/এস দত্ত

পাঠকের মন্তব্য

লগইন করুন

ইউজার নেম / ইমেইল
পাসওয়ার্ড
নতুন একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে এখানে ক্লিক করুন