মোছা: সাবিহা আক্তার লাকী ১২ মে , ২০২২, ১৯:৩২:৫৪
প্লাস্টিক দূষণ: লাগাম টানার এক্ষণই সময়
বর্তমান শতাব্দীতে আমাদের স্বাস্থ্যকর অস্তিত্বের হুমকির আরেক নাম প্লাস্টিক দূষণ। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে পলিথিন ও প্লাস্টিক জাতীয় পণ্যের প্রচলন মানব জীবনে বৈপ্লবিক পরিবর্তন নিয়ে আসে। কিন্তু এই প্লাস্টিক পণ্যটি কখনও দ্রবীভূত হয়না বলে এর দূষণ জন্ম দিয়েছে গভীর উদ্বেগের।
করোনাকালে অনলাইন শপিং ও অনলাইন ফুড ডেলিভারিতে ব্যবহৃত নানা রকমের প্লাস্টিকের মোড়ক, ওয়ানটাইম চামচ, গ্লাস ইত্যাদি প্লাস্টিক দূষণের গতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। আর এ দূষণ পরিবেশ, জীববৈচিত্র, অর্থনীতি ও মানবস্বাস্থ্যের জন্য এক বিরাট হুমকি। সুন্দর এই ধরণীকে বাসযোগ্য করে তুলতে এক্ষণি সময় প্লাস্টিক দূষণের লাগাম টানার।
আমাদের প্রত্যাহিক জীবনে আমরা যা যা ব্যবহার করি, তার অধিকাংশই প্লাস্টিকের তৈরি। ইলেক্ট্রনিক যন্ত্রপাতি, গৃহস্থলীর আসবাবপত্র, খাদ্যদ্রব্য বিপণন থেকে শুরু করে সর্বত্রই প্লাস্টিকের উপস্থিতি লক্ষণীয়। প্রাকৃতিক ধাতব, প্রাণিজ ও উদ্ভিজ্জ উৎস থেকে তৈরি যেকোনো দ্রব্যের চেয়ে প্লাস্টিক সস্তা, ব্যবহারবান্ধব এবং দীর্ঘস্থায়ী। ফলে বিদ্যুৎগতিতে প্লাস্টিকের ব্যবহার বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে এবং অবচেতন মনেই আমরা জল, স্থল ও অন্তরীক্ষের সবকিছুকে প্লাস্টিকদূষণে দূষিত করে ফেলেছি। প্লাস্টিকদূষণ আজ মানুষসহ সব জীবের অস্তিত্ব বিপন্ন করে তুলেছে।
পরিসংখ্যান বলছে, পৃথিবিতে এ পর্যন্ত প্রায় ৩০ কোটি টন প্লাস্টিক বর্জ্য জমা হয়েছে। প্রতিবছর উৎপাদিত হচ্ছে প্রায় ৩৮১ কোটি টন প্লাস্টিক ও প্লাস্টিকজাত দ্রব্য উৎপাদিত হয়। এর মধ্যে প্রায় ৫০ শতাংশ হচ্ছে একবার ব্যবহারযোগ্য (সিঙ্গেল ইউজ)। শুধু শতকরা ৯ ভাগ পুণর্ব্যবহার করা হয়।
ইউনাইটেড নেশনস এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রামের একটি নতুন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমানে মহাসাগরে প্লাস্টিকের পরিমাণ প্রায় ৭৫ থেকে ১৯৯ মিলিয়ন টন। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ ছাড়া বাস্তুতন্ত্রের প্লাস্টিক বর্জ্য নির্গমণ ২০৪০ সালের মধ্যে প্রায় তিনগুণ হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। মূল্যায়ন অনুসারে ২০৩০ সালের মধ্যে এটি দ্বিগুণেরও বেশি হতে পারে। এভাবে জমতে জমতে বড়ো বড়ো মহাসাগরে প্লাস্টিক বর্জ্য জমাকৃত এলাকা (প্যাচ) তৈরি হয়েছে।পৃথিবীর সবচেয়ে বড়ো প্রশান্ত মহাসাগরে বর্তমানে প্লাস্টিক বর্জ্যের প্যাচের আয়তন প্রায় ১৬ লাখ বর্গকিলোমিটার। অনুরূপভাবে, প্লাস্টিক বর্জ্য জমাকৃত এলাকা তৈরি হচ্ছে অন্যান্য সাগর ও মহাসাগরেও।
পৃথিবীর সর্বোচ্চ শিখর মাউন্ট এভারেস্ট। মানুষের যাতায়াত নগন্য বললেই চলে। কিন্তু এই দুর্গম প্রকৃতিও রক্ষা পেলনা দূষণের হাত থেকে। এভারেস্টের শিখর থেকে মাত্র ৪০০ মিটার নিচেই এবার খোঁজ মিলল মাইক্রোপ্লাস্টিকের। প্লাইমাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মেরিন গবেষক ইমোজেন ন্যাপারের এমন গবেষণার তথ্য প্রকাশ করেছে বিজ্ঞান পত্রিকা ‘ওয়ান আর্থ’।
মানুষের শরীরে প্রথমবারের মতো মাইক্রোপ্লাস্টিক দূষণ শনাক্ত করেছেন বিজ্ঞানীরা। বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা করে ৮০ শতাংশ মানুষের রক্তেই প্লাস্টিকের ক্ষুদ্র কণা খুঁজে পেয়েছেন। প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় শিশুদের মলে মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া গেছে ১০ গুণ বেশি। অন্যদিকে প্লাস্টিকের পাত্রে যেসব শিশুদের খাবার খাওয়ানো হয় তাদের শরীরে দিনে লাখ লাখ মাইক্রোপ্লাস্টিক কণা প্রবেশ করে। নতুন একটি গবেষণায় উঠে এসেছে এ তথ্য। এনভায়রনমেন্ট ইন্টারন্যাশনাল জার্নালে গবেষণার এ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। ২৪ মার্চ ২০২২ ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এক প্রতিবেদনে এ গবেষণার বিষয়ে জানিয়েছে।
দ্য গার্ডিয়ান সূত্রে আরও জানা যায়, সাম্প্রতিক আর একটি গবেষণায় দেখা গেছে, মাইক্রোপ্লাস্টিক লোহিত কণিকার বাইরে ঝিল্লিতে আটকে যেতে পারে । ফলে অক্সিজেন পরিবহণের তাদের ক্ষমতা কমে যাওয়ার ঝুকি থাকে। গর্ভবতী নারীদের প্লাসেন্টাতেও কণা পাওয়া গেছে। এমনকি গর্ভবতী ইঁদুরের উপর গবেষণা চালিয়ে দেখা যায়, কণাগুলো দ্রুত ফুসফুসের মাধ্যমে হৃৎপিন্ড, মস্তিস্ক ও ভ্রুণের অন্যান্য অঙ্গে প্রবেশ করে।
২০২১ সালের ২০ ডিসেম্বর বিশ্বব্যাংক একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বাংলাদেশের প্লাস্টিক দূষণ পরিস্থিতি নিয়ে। বিশ্বব্যাংকের এ পরিসংখ্যান বলছে, বাংলাদেশের শহর এলাকায় ১৫ বছরে মাথাপিছু তিনগুণ বেড়েছে প্লাস্টিকের ব্যবহার। ২০০৫ সালে মাথাপিছু প্লাস্টিকের ব্যবহার ছিল ৩কেজি। কিন্তু ২০২০ সালে সে পরিমাণ ৩গুণ বেড়ে ৯ কেজি হয়েছে। ঢাকা শহরে এই পরিমাণ ২২ কেজি ৫০০ গ্রাম, যা জাতীয় গড়ের চেয়ে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বেশি। ২০০৫ সালে ঢাকায় মাথাপিছু প্লাস্টিকের ব্যবহার ছিল ৯ কেজি ২০০ গ্রাম।
পরিসংখ্যানটি আরও বলছে, ঢাকায় প্রতিদিন ৬৪৬টন প্লাস্টিক বর্জ্য তৈরি হয়।এর ৩১০ দশমিক ৭টন ময়লা ভাগাড়ে, ৭৭দশমিক ৫টন খাল ও নদীতে, ১৭ দশমিক ৩ টন নর্দমায় ফেলা হয় এবং ২৪০ দশমিক৫ টন রিসাইকেল করা হয়।
‘প্রোলিফারেশন অব মাইক্রোপ্লাস্টিক ইন কমার্শিয়াল সি সল্টস ফ্রম দি ওয়ার্ল্ড লংগেস সি বিচ অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক গবেষণায় দেশের লবণে প্লাস্টিকের উদ্বেগজনক উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এ গবেষণায় দেখা যায় এ লবণের প্রতি কেজিতে প্রায় ২ হাজার ৬৭৬টি মাইক্রোপ্লাস্টিক রয়েছে। সেখানে বলা হয়, দেশের মানুষ যেহারে লবণ গ্রহণ করে তাতে প্রতি বছর একজন মানুষ গড়ে প্রায় ১৩ হাজার ৮৮টি মাইক্রোপ্লাস্টিক গ্রহণ করে।
মাইক্রোপ্লাস্টিকের উপস্থিতি এখন ভয়ংকর রুপ ধারণ করেছে। লবণ থেকে শুরু করে মাছের পেটেও এর উপস্থিতি মিলছে। এক পরিসংখ্যানে জানা যায়, সমুদ্রের পানিতে পাঁচ ট্রিলিয়নের বেশি প্লাস্টিক ভেসে থাকে। ১৪ মিলিয়ন টনের বেশি প্লাস্টিক প্রতিবছর সমুদ্রে জমা হচ্ছে। প্লাস্টিক দূষণ সামদ্রিক প্রাণির জন্য একক সর্বাধিক হুমকির মতো। সামদ্রিক কচ্ছপের মৃত্যু প্লাস্টিক দূষণের কারণে ঘটছে। সামদ্রিক তিমির পাকস্থলীতে প্রচুর পরিমাণে প্লাস্টিক পাওয়া গেছে। এছাড়া সামদ্রিক ছোট মাছের পাকস্থলীতেও প্লাস্টিক পাওয়া গেছে। তাই প্লাস্টিক দূষণ সামদ্রিক মৎস্য প্রজাতির জন্য হুমকিস্বরুপ।
বিশ্লেষকরা বলছেন, প্লাস্টিক মাটিতে মিশতে সময় লাগে প্রায় ৪০০ বছর। ফলে এতে একদিকে যেমন মাটির উর্বরতা নষ্ট হচ্ছে, অন্যদিকে এটি পানির সঙ্গে মিশে পানিকে করছে দূষিত। এর মাধ্যমে এসব প্লাস্টিক মানুষের শরীরে প্রবেশ করছে। পরিবেশের প্রতিটি উপাদানের সাথে ধীরে ধীরে মিশছে মাইক্রোপ্লাস্টিক, যার প্রভাব পড়ছে গোটা প্রাণিজগতে। মাইক্রোপ্লাস্টিকের কারণে ক্যান্সার, হরমোনের তারতম্য, প্রজনন প্রক্রিয়ায় বাধাসহ মারাত্মক সব ক্ষতি হচ্ছে। প্লাস্টিক মানুষের পরিপাকতন্ত্রের মাধ্যমে প্রবেশ করে যকৃৎ,ফুসফুসসহ অন্যান্য অঙ্গে বৈকল্য তৈরি করতে পারে। পাশাপাশি হজমে প্রতিবন্ধকতা, নারী ও পুরুষের বন্ধ্যত্বও তৈরি করতে পারে। কারণ প্লাস্টিক মানবদেহে হরমোনের ভারসাম্যকে বাধাগ্রস্ত করে।
প্লাস্টিক দূষণের প্রভাব শুধু সামদ্রিক মাছের ওপর নয়, সামদ্রিক পাখির ওপরও রয়েছে। পাখিরা যখন প্লাস্টিক পদার্থ গ্রহণ করে, তথন তাদের পেটেও বিষাক্ত রাসায়নিক পলিক্লোরিনেটেড বায়োফেনল নির্গত হয়। এজন্য তাদের দেহের টিস্যু ধ্বংস হয়, তাদের দেহের প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। ধীরে ধীরে পাখির মৃত্যু হয়। শুধুমাত্র উদ্ভিদ বা প্রাণি নয়, মানুষ প্লাস্টিক দূষনের কারণে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। থাইরয়েড হরমোনের অতিরিক্ত ক্ষরণের জন্য প্লাস্টিক দূষণ পরোক্ষভাবে দায়ী। সাধারণত প্লাস্টিক পদার্থে প্রচুর পরিমানে রাসায়নিক রঞ্জক মেশানো হয়। এসব রঞ্জক কারসিনজেন হিসেবে কাজ করে ও এন্ডোক্রিনকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
বর্তমান বিশ্বে বিপুল পরিমাণে প্লাস্টিকসামগ্রী ব্যাবহার করা হচ্ছে। যা পাহাড়ের চূড়া থেকে শুরু করে সমুদ্রের তলদেশ পর্যন্ত জমছে। তাই বিজ্ঞানীরা প্লাস্টিককে রিসাইকেল করে অন্যান্য কাজে ব্যবহার করা যায় কিনা এ বিষয়ে গবেষণা চালাচ্ছেন। সম্প্রতি ইউরোপীয় দেশগুলো তাদের ব্যবহৃত প্লাস্টিকের ৩০ শতাংশ পুন:প্রক্রিয়াজাতকরণের উদ্যোগ নিয়েছে। এছাড়াও প্লাস্টিক দূষণ নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। বর্তমানে রিসাইকেল করা প্লাস্টিকের অন্যতম ব্যবহারে তৈরি হচ্ছে রাস্তা। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্লাস্টিকের দূষণ থেকে মুক্ত হওয়ার মাধ্যম হিসেবে রাস্তা তৈরির কাজে প্লাস্টিক ব্যবহার করা হচ্ছে। ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্য ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলার বি কে রোডটি পরীক্ষামূলকভাবে তৈরি করা হয়েছে প্লাস্টিক দিয়ে। ভারতের পর পাকিস্থানও প্লাস্টিকের রাস্তা বানিয়ে হইচই ফেলে দিয়েছে।
দেশটির রাজধানী ইসলামাবাদের আতাতুর্ক অ্যাভিনিউয়ের রাস্তায় প্লাস্টিকের কার্পেটিং করা হয়েছে। রাস্তাটি তৈরি করতে তারা ব্যবহার করেছে প্রায় ১০ টন ফেলে দেওয়া প্লাস্টিক-যা মূলত সারাদেশ থেকে সংগ্রহ করা। ধীরে ধীরে পাকিস্তানের অন্যান্য সড়কগুলোও প্লাস্টিক দিয়ে রি- কার্পেটিং করা হবে বলে জানা যায়। বিষেজ্ঞদের মতে, প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি সড়কগুলো সাধারণ সড়কের তুলনায় দ্বিগুণ দীর্ঘস্থায়ী এবং প্রায় ৫১ শতাংশ বেশি শক্তিশালী হয়। ভারত-পাকিস্তান ছাড়াও ইন্দোনেশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যে এ পদ্ধতিতে রাস্তা তৈরি হচ্ছে।
প্লাস্টিক পুন:ব্যবহারের নানান উপায় বের করেছেন বিজ্ঞানীরা। এবারে ফেলে দেওয়া প্লাস্টিকের বোতল থেকেই তৈরি হবে সুগন্ধি ভ্যানিলা-যা খাদ্য, প্রসাধনী, ঔষধ, ঘর ও আসবাবপত্র পরিষ্কার জিনিসপত্র এবং বিভিন্ন ভেষজনাশক তৈরির জন্য অন্যতম উপাদান। বর্জ্য প্লাস্টিককে এভাবে পরিবেশ থেকে সরিয়েও দেওয়া যাবে অনেক কম খরচে। ফলে পুকুর, নদী,সমুদ্র ও মহাসাগরে উত্তরোত্তর বেড়ে চলা বর্জ্য প্লাস্টিকের পরিমাণ নিয়ে যে গভীর উদ্বেগ এখন বিশ্বের সর্বত্র, এই আবিষ্কার আগামী দিনে তার থেকে রেহাই পাওয়ার আলো দেখাতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
ইন্দোনেশিয়ার বালি দ্বীপে নদী প্লাস্টিকমুক্ত করতে গ্রহণ করা হয়েছে অভিনব উদ্যোগ। সেখানে নদীতে কি পরিমাণ প্লাস্টিক বর্জ্য রয়েছে তার তথ্য তারা বের করত গুগল ম্যাপ প্রযুক্তির মাধ্যমে ‘রিভার ম্যাপিং’ নামের এক পরিভাষা ব্যবহার করে। ডিজিটাল পদ্ধতিতে বর্জ্যের অবস্থান নির্ণয় করে তা অপসারণের উদ্যোগ গ্রহণ করে। ফলে এই বর্জ্য মসুদ্রে গিয়ে পড়েনা।
প্লাস্টিক দূষণরোধে বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ ২০০২ সালে পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধের বিধান করেছিল। কিন্তু হাইকোর্টের নির্দেশের পরও এই অগ্রগামি উদ্যোগ বাস্তবায়ন হয়নি।
তাই, আইনের যথাযথ বাস্তবায়নের মাধ্যমে প্লাস্টিক ব্যবহার সীমিত করতে হবে, পাট ও পাটজাতপণ্য ব্যবহারকে উৎসাহিত করতে হবে, প্লাস্টিকের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে জনগণকে আরও বেশি সচেতন করার উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। প্লাস্টিক দ্রব্যের উপর অত্যধিক শুল্ক আরোপ করে পাটজাত দ্রব্যকে সুলভ করা প্রয়োজন। পাশাপাশি প্লাস্টিক রিসাইক্লিং ব্যবস্থাগ্রহণ জরুরি। বর্জ্য রিসাইক্লিং এ গ্রহণ করতে হবে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা। যেমন- প্লাস্টিক বোতল, স্ট্র, মোড়ক, ইনস্ট্যান্ট নুডলসের মোড়ক ইট তৈরি কিংবা এ জাতীয় দীর্ঘমেয়াদি সমাধানসূত্র বের করার জন্য ব্যাপক গবেষণা চালানো প্রয়োজন।
আজকের বিশ্ব যদি আত্মবিশ্বাসের জন্ম দেওয়া অর্থনৈতিক অগ্রগতির গল্প হয়, তাহলে একই সাথে তা প্রকৃতি, পরিবেশ আর মানবস্বাস্থ্যের ধ্বংসের গল্পও বটে। আমরা অর্থনৈতিক ও সামাজিক নানা সূচকে এগিয়েছি, অথচ নিজ শহরে ভয়াবহ প্লাস্টিক দূষণে প্রতিনিয়ত নিজেরাই অবদান রেখে চলেছি। এখনই সময় সচেতন হবার। আসুন ,পাতলা পলিথিনের পরিবর্তে ব্যবহারযোগ্য কাপড় বা পাটের তৈরি ব্যাগ নিয়ে বাজারে যাই, খাদ্যসরবরাহকারীকে নন-প্লাস্টিক প্যাকেজিং ব্যবহারে চাপ প্রয়োগ করি, পানির বোতল কেনা এড়িয়ে চলি, নিজের বোতল সাথে রাখি, প্লাস্টিক কাটলারি বর্জন করি। নিজেরা সুস্থভাবে বাঁচার জন্য, পররর্তী প্রজন্মকে একটি সুন্দর বাসযোগ্য পৃথিবী উপহার দেবার জন্য প্লাস্টিক বর্জন এবং দূষণ রোধের কার্যক্রমকে আরও বেগবান করি।
লেখক: তথ্য অফিসার, তথ্য অধিদফতর
Chief Editor: Khademul Jahan |
Address : 82/2, New Elephant Road, Dhaka: 1205 |
Phone: +880 29614681 |
email: info@newsg24.com
Newsg24.com | A G-Series Company.