বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫, ২৮ কার্তিক ১৪৩২ , ২১ জুমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

ফিচার
  >
বিশেষ কলাম

এই দানব থামছেনা কিছুতেই!

মাঈনুদ্দীন দুলাল ১৭ সেপ্টেম্বর , ২০২৫, ১৯:০৭:৩৬

327
  • এই দানব থামছেনা কিছুতেই!

ইসরায়েলের নিষ্ঠুর ও দানবীয় তান্ডব থামানো যাচ্ছে না। জাতিসংঘ, প্রভাবশালী বিভিন্ন রাষ্ট্র ও দুনিয়ার বিবেকবান মানুষের সব প্রচেষ্টাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে তার পথেই হাটছে সে। আর তাকে এই নির্মমতার মৌন সম্মতি জানাচ্ছে তার প্রধান মিত্র যুক্তরাষ্ট্র।

সর্বশেষ জানা গেল, গাজায় আকাশ হামলায় ধ্বংসযজ্ঞ শেষে এবার ইসরায়েল স্থল অভিযান চালিয়ে গাজার নিয়ন্ত্রণ নিতে শুরু করেছে। গাজা সিটি থেকে লোকজন পালাচ্ছেন। কেউ কেউ অবধারিত মৃত্যুর জন্যে অপেক্ষা করছেন।

গাজা উপত্যকার গাজা সিটিতে গত সোমবার রাত থেকে স্থল হামলা শুরু করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। এরমধ্যে তাদের হামলায় গাজা সিটির টেলিফোন ও ইন্টারনেট সেবা বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে গাজা সিটি পুরো বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

স্থল হামলা শুরুর আগে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে গাজা সিটিতে ব্যাপক বোমাবর্ষণ করে দখলদার ইসরায়েল। বিমান ও ড্রোন থেকে মিসাইল ও বোমা ফেলে গাজা সিটির প্রায় সব উঁচু ভবন ধসিয়ে দেওয়া হয়েছে। গাজা সিটিতে স্থল হামলার আগে আশপাশের অঞ্চলগুলোতে অবস্থান নিয়েছিল ইসরায়েলি সেনারা। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তাদের ১৬২ নম্বর এবং ৯৮ নম্বর ডিভিশন গাজা সিটিতে অবস্থান করছে এবং সেখানে হামলার পরিধি বাড়াচ্ছে। সৈন্য সংখ্যা আরো বাড়ানো হচ্ছে। অর্থাৎ গাজা দখলের সব আয়োজন সম্পন্ন।

গত দু'বছর ধরে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের হামলায় নিহত হয়েছেন ৬৪ হাজার মানুষ। আহত হয়েছেন ১ লাখ ৬০ হাজার প্রায়। এ পর্যন্ত ক্ষুধায় মারা গেছে ১৪৫ শিশুসহ ৪২৫ জন। ৩ হাজার পরিবার সম্পূর্ণ নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে যুক্তরাজ্য, স্পেন ও কানাডা ইতোমধ্যেই ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র রপ্তানি বন্ধ করেছে। অন্যদিকে ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া, স্পেন, নরওয়ে ও যুক্তরাজ্যসহ আরও কয়েকটি দেশ জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে। ইসরায়েলের গনহত্যার প্রতিবাদে আমেরিকা, ইউরোপসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে লাখ লাখ মানুষ রাস্তায় নেমেছেন। তাদের সম্মিলিত আওয়াজ ছিল " বর্বরতা থামাও"।

আন্তর্জাতিক কুটনীতি,অর্থনীতি, বিশ্ব বিবেকের কাছে ইসরায়েল একা হয়ে যাচ্ছে।

গত সোমবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক সম্মেলনে নেতানিয়াহু নিজেই বলেছেন, “আমরা এক ধরনের বিচ্ছিন্নতার মধ্যে চলে যাচ্ছি, আর আমাদের ধীরে ধীরে এমন এক অর্থনীতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে যেখানে স্বনির্ভরতার বৈশিষ্ট্য থাকবে।” নেতানিয়াহুর সরকার এতদিন কূটনৈতিকভাবে বিচ্ছিন্ন হওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে আসছিল।

কিন্তু এত কিছুর পরও এই উন্মাদ দানবকে থামানো যাচ্ছে না। অসহায় বিশ্ব বিবেকের হাতের আঙ্গুল কামড়ানো ছাড়া আর কিছুই করার নেই।

লেখক: সাংবাদিক
 
বি.দ্র.- (এ বিভাগে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। নিউজজি২৪ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে।)

পাঠকের মন্তব্য

লগইন করুন

ইউজার নেম / ইমেইল
পাসওয়ার্ড
নতুন একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে এখানে ক্লিক করুন