মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫, ২৭ কার্তিক ১৪৩২ , ২০ জুমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

ফিচার
  >
বিশেষ কলাম

ট্রাম্প ক্রমশ একা হচ্ছেন?

মাঈনুদ্দীন দুলাল ৪ সেপ্টেম্বর , ২০২৫, ১৮:৩৩:১০

309
  • ট্রাম্প ক্রমশ একা হচ্ছেন?

এমেরিকান প্রাইড,ট্রাম্পের ব্যক্তিগত অহম এবং খামখেয়ালিপনা কি তাকে একা করে দিচ্ছে? তিনি একা হয়ে যাওয়া মানে আমেরিকাও বিচ্ছিন্নতার শিকার। পাশাপাশি বিশ্বে ক্ষমতার ভরকেন্দ্র বদলের পদধ্বনিও শোনা যাচ্ছে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আমেরিকা ও রাশিয়ার মধ্যে শীতল যুদ্ধ চলেছে  চার দশক। বিশ্ব দুই শিবিরে বিভক্ত ছিল। ক্ষমতার ভারসাম্য ছিল। নব্বই এর দশকে রুশ প্রেসিডেন্ট মিখাইল গর্বাচেভের সংস্কার নীতির  পেরেস্ত্রোইকা (সংস্কার), গ্লাসনস্ত ( উন্মুক্ততা) হাত ধরে ক্ষমতাধর সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন ঘটে। ইউনিয়ন ভেঙ্গে ১৫ টি রাষ্ট্র গঠিত হয়। বদলে যায় ভারসাম্য। ক্ষমতায় একচেটিয়া বনে যায় আমেরিকা। এখনো সেই প্রভাব বিস্তারে মরিয়া আমেরিকা। তবে তার ক্ষমতা ক্রমশ ক্ষয়িষ্ণু। ধীরে ধীরে উঠে এসেছে চীন। পুতিনের হাত ধরে স্থিতিশীল হয়েছে রাশিয়া। ভারতও প্রভাব দেখাতে সক্ষম। কারো চোখ রাঙানোর দিন ফুরিয়েছে।

চীনে তিয়েনজিন সম্মেলনে হাতে হাত রাখলেন তিন বিশ্ব শক্তি শি- পুতিন - মোদি।  এক নম্বর শক্তি যদি আমেরিকাকে ধরা হয়। তবে বাকী  তিন কি ভাবছে সেটি ভাববার বিষয়।

ট্রাম্পের শুল্ক খড়গ ভারত এবং চীনকে ক্ষুব্ধ করেছে। বিশেষ করে ভারতের ওপর শাস্তি হিসেবে আরোপিত অতিরিক্ত শুল্ক ভারতের আত্ম সম্মানে আঘাত করেছে। ভারতকে অর্থনৈতিক ও সামরিক শক্তির বিবেচনায় তিন বা চারে রাখা হয়। তার আছে বিশাল মানব সম্পদ,ঐক্যবদ্ধ জনশক্তি  বিশাল বাজার,উৎপাদন ব্যবস্থা। তারও অহম থাকা স্বাভাবিক। এশিয়ায় ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষায় চীনকে ঠেকাতে আমেরিকার খুব কাছাকাছি ভারত। মোদি ট্রাম্পকে বন্ধু মেনে তার রাজনৈতিক ক্যাম্পেনেও কৌশলে সহযোগিতা করেছেন। ভারতের প্রতি ট্রাম্পের এই আচরণ মেনে নিতে পারছেননা মোদি। খবর প্রকাশ হয়েছে মোদি ট্রাম্পের ফোন কল ধরেননি। যাকে বলা যেতে পারে " ইট মারলে পাটকেল খেতে হয়"।

অন্যদিকে পুতিনের সাথে ট্রাম্পের সুসম্পর্ক চাউর ছিল। কিন্তু রাশিয়া -ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে ট্রাম্পের ইঁদুর বিড়াল খেলা এবং রাশিয়ার তেল কিনতে নিষেধাজ্ঞায় পুতিন ট্রাম্পের উপর খোশ মেজাজ হারিয়েছেন। এসব সমীকরণ মিলে নতুন মেরুকরণ হবার সম্ভাবনাই প্রবল।

কোনঠাসা বাঘের মতই কি তাই গর্জে উঠলেন ট্রাম্প? মাতব্বরির চেয়ারের খুঁটি নড়ার কটমটে আওয়াজ কি তার কানে ধাক্কা দিচ্ছে?

চীনের রাজধানী বেইজিংয়ের তিয়েনআনমেন স্কোয়ারে বিশ্বের তিন ক্ষমতাধর নেতাকে এক মঞ্চে দেখে ক্ষেপেছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। রাশিয়া ও চীনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার  নেতা কিম জং উন একত্রিত হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছেন  এমনটি ভাবছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ৮০ বছর পূর্তি উপলক্ষে কুচকাওয়াজে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন এবং রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন কে শি জিনপিংয়ের  সাথে এক সাথে  দেখে ট্রাম্প শি জিনপিংকে সম্বোধন করে ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে লিখেছেন, ভ্লাদিমির পুতিন এবং কিম জং উনকে উষ্ণ শুভেচ্ছা জানাই, কারণ আপনারা আমেরিকার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন।

তিনি আরও লেখেন, বেইজিংয়ে যে সামরিক প্যারেডের আয়োজন করা হয়েছে, সেটার মাধ্যমে নিজেদের অর্থনৈতিক, সামরিক এবং কূটনৈতিক ক্ষমতা প্রদর্শন করতে চাইছে চীন।

 তিনি ব্যঙ্গ করে লিখেছেন, দয়া করে আমার উষ্ণ শুভেচ্ছা জানিয়ে দেবেন ভ্লাদিমির পুতিন ও কিম জং উনকে, যখন আপনারা যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন। ট্রাম্পের বক্তব্যে ক্ষমতার ভরকেন্দ্র নড়ার উত্তেজনার আঁচ পাওয়া যায়।

 

পাঠকের মন্তব্য

লগইন করুন

ইউজার নেম / ইমেইল
পাসওয়ার্ড
নতুন একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে এখানে ক্লিক করুন