বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫, ২৮ কার্তিক ১৪৩২ , ২১ জুমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

ফিচার
  >
বিশেষ কলাম

জনস্বার্থে মৌলিক অধিকারের গন্তব্য, নেতার নীতি কথার বিবেক

খন্দকার মোহাম্মাদ আলী, ২০ জুলাই , ২০২৫, ১৪:৪৪:০২

210
  • জনস্বার্থে মৌলিক অধিকারের গন্তব্য, নেতার নীতি কথার বিবেক

সম্প্রতি সাধারণ মানুষের মনে চরম হতাশা লক্ষ করা যাচ্ছে বর্তমান জনস্বার্থে  মৌলিক অধিকার প্রাপ্তির  বিষয়গুলো নিয়ে। উদ্বিগ্ন  সচেতন ব্যক্তিরা। জনকল্যাণকর সেবামূলক কর্মসূচি বাস্তবায়নে রয়েছে নানা প্রতিবন্ধকতা। যেমন শিক্ষা ব্যবস্থায় রয়েছে প্রজ্ঞাহীন গাধার বোঝা, স্বাস্থ্যসেবায় রয়েছে অর্থ অপচয়ের জটিল ফাঁদ, খাদ্যব্যবস্থায়  রয়েছে গরিব  শোষণের  নকশা, বস্ত্র  খাতে রয়েছে ধনীদের আরও ধনী করার প্রবণতা। বাসস্থানের  জন্য নিশ্চয়তা নেই গরিবদের।

এ ক্ষেত্রে ধনীদের জন্য রয়েছে বিলাসিতার খোলা দরজা। এর পাশাপাশি রয়েছে কিছু সাধারণ মানুষ।  দলমত নির্বিশেষে  রাজনীতি মুক্ত, ঝামেলা মুক্ত, দাম্ভিকতা মুক্ত, ক্ষমতা মুক্ত, শুধু ভোটের অধিকার আদায়ে অপেক্ষমান মানুষগুলো নিশ্চিন্তে  নিজেদের পছন্দমত নেতার নেতৃত্ব  মেনে নেওয়ার অপেক্ষায় থাকে চাতক পাখির মতো। তাদের চাওয়া-পাওয়ার দিকে কোনো ভ্রুক্ষেপ  না করে রাজনৈতিক নেতারা ব্যাস্ত সময় পার করে নিজেদের পদ পদবি টিকিয়ে রাখার দায়িত্ব কর্তব্য নিয়ে। দেশের মানুষের কর্মসৃজনে তাদের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য, বাস্তবায়ন, গন্তব্য নিয়ে ভাবে না, ভাবে ক্ষমতার দাম্ভিকতা আর অর্থ উপার্জনের কলাকৌশল নিয়ে। যার কারণে দেশের লাখ লাখ মানুষ কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে নীরবে চোখের জল ফেলে জীর্ণ কুটিরে ।

এ বিষয়ে, গ্রমীণ দুইশতাধিক চা-স্টলগুলো ঘুরে  দেখা যায় সাধারণ মানুষের মিডায়ার টকশোর মত কথাবার্তার মাঝে আর্তচিৎকারের প্রতিধ্বনি । না পারে তারা  সাহস করে কিছু বলতে, না পারে সইতে। মানুষ হয়ে মানুষ পরিচালনার নীতি নির্ধারকরা রবোটের মতো রিমোর্ট কন্ট্রোলে পরিচালনা করছে দায়িত্বরত ব্যক্তিদের জীবন। হয়তবা  এই কারণে জ্ঞানীরা  রিমোর্টের সিস্টেম না বোঝার কারণে প্রযুক্তিগতভাবে  আজ বিকৃত মেধা হিসেবে পড়ে আছে ডাস্টবিনে ।

প্রযুক্তিগত জ্ঞানে এ প্রজন্মের মানুষগুলোর চিন্তা চেতনা প্রকৃতি থেকে বিমুখ হয়েছে  যার কারণে মনুষত্ববোধ  জাগ্রত হচ্ছে না , মানবতার শিক্ষা পাচ্ছে না, নৈতিকতার শিক্ষার প্রশান্তি পাচ্ছে না যার কারণে হতাশার একরাশি বোঝা মাথায় নিয়ে জীবন যন্ত্রণার  করাল গ্রাসে নিমর্জিত  হচ্ছে  প্রতিনিয়ত।

উন্নয়ন অনুসন্ধান ফাউন্ডেশনের সমন্বয়কারী মো. শাকিল আহমেদ বলেন, পরিবর্তন আর সংস্কারকে কাকে করবে..? গ্রামের সাধারণ মানুষের কোন কর্মটি শৃংখল মানব কল্যাণে  অগ্রসরমান তা নিয়ে কে ভাববে যে যার মতো অর্থ উপার্জনে  ব্যস্ত থেকে জনস্বার্থে  নানান বক্তব্য দিয়ে ভাইরাল হওয়ার চেষ্টা শুধু। প্রকৃতপক্ষে মানুষের কল্যাণে আত্মনিয়োগ  করা শুন্য পকেটের নেতা খুঁজে পাওয়া কঠিন ।

গ্রামের সহজ সরল মানুষদের চাওয়া-পাওয়ার হিসেবটি কেউ কখনো জীবনমুখী বাজেটে বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া করেনি। একটি মানুষের সর্বোচ্চ আয়ু-কাল একশত বছর হলে এর মাঝে রাষ্ট্র পরিচালনার কত নেতার পরিবর্তন হয় কিন্তু সাধারণ মানুষের পরিবর্তনের এবং মৌলিক অধিকার পাওয়ার নিশ্চয়তায়  থাকে জটিল অব্যবস্থাপনা ।

শিশুরা পায় না পুষ্টি, শিক্ষার্থীরা পায় না প্রকৃতিগত জ্ঞানের চর্চা , কর্মজীবীরা পায় না বিবেক সম্মত পরিবেশ, বৃদ্ধরা পায় না বার্ধক্য জনিত সেবা এ যেন নিয়ন্ত্রণহীন  মানুষের পথচলা। যার জন্য জীবনের সমস্ত  সময় ফুরিয়ে চিরগন্তব্যে যাওয়ার পূর্বে ধর্ম-কর্ম এবং জীবন।

এই নিয়ে স্রষ্টার  সৃষ্টিত শ্রেষ্ঠ মানুষ হিসেবে  মানুষ হয়ে মানুষকে পরিচালনা করা একটি  কঠিন বিষয় যা মহামানবেরাও মানুষের মনুষত্ববোধ  এবং বিবেক সম্মত মানুষ তৈরির জন্য শত শত বচ্ছর চেষ্টা করে গেছে। বর্তমান যুগে এসে সভ্যতার চরম শিখরে পৌঁছে ভাবুন আমরা কতটুকু বিবেক সম্মত মানুষ হতে পেরেছি। রাজনীতি, অর্থনীতি, শিক্ষানীতি হয়তবা কোনো খানেই মানুষের বিবেকসম্মত জ্ঞানের পরিশুদ্ধি নেই।

এই লেখাগুলোর উদ্দেশ্য অজ্ঞ ব্যক্তিদের  সমালোচনার জন্য নয় প্রকৃত জ্ঞানীদের কাছে  পৌঁছানোর জন্যই এই নিবেদন। তবে মানুষের  প্রচলিত, আলোচিত এবং সমালোচিত স্বভাবের বাহিরে সুপ্ত জ্ঞানে আত্ম তৃপ্তির প্রশান্তি নিয়ে  প্রকৃত মানুষ হয়ে  বিবেক  সম্মত   মানুষ নেতারা নীরবে ভেবে দেখবেন। ক্ষনস্থায়ী জীবনের লক্ষ উদ্দেশ্যে নিয়ে একটি বার ভাবুন কি পেলাম আর কি রেখে গেলাম।

লেখক : সাংবাদিক
 
বি.দ্র.- (এ বিভাগে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। নিউজজি২৪ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে।
 

পাঠকের মন্তব্য

লগইন করুন

ইউজার নেম / ইমেইল
পাসওয়ার্ড
নতুন একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে এখানে ক্লিক করুন