সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৫ ফাল্গুন ১৪৩১ , ১৮ শাবান ১৪৪৬

ফিচার
  >
বিচিত্র

কোথায় যায় এত চুল!

নিউজজি ডেস্ক ১ ফেব্রুয়ারি , ২০২৩, ২৩:৫১:৫৫

486
  • কোথায় যায় এত চুল!

ঢাকা: ভারতের তিরুপতি মন্দির। যেখানে প্রতি বছর জমা পড়ে কয়েকশো টন মানুষের চুল। এই চুল নিয়ে আছে নানা কৌতুহলী তথ্য। চলুন যেনে নেয়া যাক সেসব-

প্রতিদিন হাজার হাজার পুণ্যার্থী ভিড় জমান তিরুপতি -সহ দেশের বিভিন্ন মন্দিরে। পুজো দেন। ইচ্ছাপূরণ হলে চুল কাটিয়ে দান করেন ভক্তেরা। আর এই চুল বিক্রি করেই বছরে কোটি কোটি টাকার ব্যবসা করেন মন্দির কর্তৃপক্ষ। 

দেশে তিরুপতি মন্দিরে ভক্তরা সব থেকে বেশি চুল দান করেন। তার কারণও রয়েছে। বলা হয়, এই মন্দিরে ভক্তরা যত চুল দেন, ঈশ্বর তার ১০ গুণ বেশি সম্পত্তি ফিরিয়ে দেন তাঁকে।

কথিত রয়েছে, তিরুপতি মন্দিরে চুল দিলে সন্তুষ্ট হন লক্ষ্মী। তাই এখানে শুধু পুরুষ নন, মহিলারাও ইচ্ছাপূরণ হলে চুল দান করেন।

মূলত চুলদান নিয়ে অন্য একটি গল্পও প্রচলিত রয়েছে। বলা হয়, অতীতে বালাজির মূর্তির উপর পিঁপড়ের পাহাড় তৈরি হয়েছিল। একটি গরু রোজ এসে ওই পিঁপড়ের পাহাড়ে দুধ দিত। এক দিন দেখতে পেয়ে খুব রেগে যান গরুর মালিক। কুঠার দিয়ে গরুর মাথায় আঘাত করেন।

সেই আঘাত লাগে বালাজির মাথায়। রক্তক্ষরণ শুরু হয়। আঘাতে বালাজির মাথার চুল ঝড়ে পড়ে। দেখে নীলাদেবী নিজের চুল কেটে সেই ক্ষতের উপর জড়িয়ে দেন। সঙ্গে সঙ্গে বালাজির আঘাত সেরে যায়। দক্ষিণ ভারতে বিভিন্ন মন্দিরে রয়েছে নীলাদেবীর মূর্তি।

নীলাদেবীর এই পদক্ষেপে নারায়ণ খুশি হন। জানান, মহিলাদের শরীরের সৌন্দর্যের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হল চুল। সেই চুলই তাঁর জন্য কেটে ফেলেছেন নীলাদেবী। মনে করা হয়, সেই কারণেই তিরুপতি মন্দিরে চুল দিলে ইচ্ছাপূরণ হয়।

প্রতি বছর লক্ষ টন চুল দেওয়া হয় তিরুপতি মন্দিরে। পরিসংখ্যান বলছে, বছরে ৫০০ থেকে ৬০০ টন চুল দেন ভক্তেরা। তার পর কী করা হয় সেই চুল দিয়ে?

কেটে ফেলা চুল প্রথমে গরম জলে ফোটানো হয়। তার পর তা সাবান দিয়ে ধুয়ে শুকানো হয়। তার পর একটি গুদামে ভরে রাখা হয়। সেই গুদামের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রিত থাকে।

বিভিন্ন ভাগে ভাগ করে চুল সংরক্ষণ করা হয়। প্রথম ভাগে পড়ে ২৭ ইঞ্চির বেশি দৈর্ঘ্যের চুল। দ্বিতীয় ভাগে রয়েছে ১৯ থেকে ২৬ ইঞ্চি দীর্ঘ চুল। তৃতীয় ভাগে রয়েছে ১০ থেকে ১৮ ইঞ্চি লম্বা চুল। চতুর্থ ভাগে রাখা হয় পাঁচ থেকে ন’ইঞ্চি লম্বা চুল। পাঁচ ইঞ্চির কম দৈর্ঘ্যের চুল রাখা হয় পঞ্চম ভাগে।

প্রথম ভাগের চুল কেজি প্রতি প্রায় ২,৯০০ থেকে ৩০০০ টাকায় বিক্রি হয়। দ্বিতীয় ভাগের চুল বিক্রি হয় ২,৬০০ টাকা কেজি দরে। আর পঞ্চম ভাগের চুল বিক্রি হয় কেজি প্রতি ৩৬ টাকা দরে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারের খবরে বলা হয়, ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে তিরুপতি মন্দির কর্তৃপক্ষ ১ লক্ষ ৪৩ হাজার ৯০০ কেজি চুল বিক্রি করেছিলেন। অনলাইনে সেই চুল নিলাম করে পেয়েছিলেন ১১ কোটি ১৭ লক্ষ টাকা। প্রতি বছর প্রায় ১৫০ কোটি টাকা আয় করেন তিরুপতি মন্দির কর্তৃপক্ষ।

পাঠকের মন্তব্য

লগইন করুন

ইউজার নেম / ইমেইল
পাসওয়ার্ড
নতুন একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে এখানে ক্লিক করুন