সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৮ মাঘ ১৪৩১ , ১১ শাবান ১৪৪৬

ফিচার

ভারতের একজন বিখ্যাত অভিনেতা প্রমথেশ চন্দ্র বরুয়া

নিউজজি ডেস্ক নভেম্বর ২৯, ২০২৩, ১২:১৩:২৮

133
  • ছবি: ইন্টারনেট

ঢাকা: প্রমথেশ চন্দ্র বরুয়া ছিলেন ভারতের একজন বিখ্যাত অভিনেতা, চলচ্চিত্র পরিচালক ও চিত্রনাট্য লেখক ছিলেন। আসামের গৌরীপুরে জন্মগ্রহণ করা প্রমথেশ বড়ুয়া বাংলা ও হিন্দী চলচ্চিত্র জগতের একজন বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা ছিলেন। অপরাধী চলচ্চিত্রে তিনি সর্বপ্রথম কৃত্রিম আলোর ব্যবহার করেন এবং এটাই ভারতীয় চলচ্চিত্র শিল্পে প্রথম কৃত্রিম আলোর ব্যবহার। তার অপরাধী চলচ্চিত্রে ব্যবহার করা “কৃত্রিম আলো ভারতীয় চলচ্চিত্র জগতে প্রথম কৃত্রিম ব্যবস্থা ছিল। ভারতীয়দের মধ্যে সর্বপ্রথম তিনি দেবদাস চলচ্চিত্রে ফ্লাস ব্যাক মন্তাজ, টেলিপ্যাথি শট এবং সাবজেকটিভ ক্যামেরার ব্যবহার করেন।

প্রমথেশ বড়ুয়ার জন্ম অসমের গোয়ালপাড়া জেলার গৌরীপুরে হয়েছিল। পিতার নাম প্রভাত চন্দ্র বরুয়া ও মাতার নাম সরোজবালা বরুয়া। তিনি ছেলেবেলায় গৌরীপুরে ইউনাইটেড ক্লাব নামক একটি সাংস্কৃতিক সংঘের স্থাপনা করে নাটক করিতেন। প্রমথেশ বরুয়া গৌরীপুর বিদ্যালয়ে শিক্ষা সম্পূর্ণ করার পর কলকাতার হেয়ার বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলন। ১৯২১ সনে তিনি কলকাতার বীরেন্দ্রনাথ মিত্রের কন্যা মাধুরীলতাকে বিবাহ করেছিলেন।

১৯২৮ প্রমথেশ বরুয়া কলকাতার প্রেসিডেন্সী কলেজ থেকে পদার্থ বিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেছিলেন। তিনি ইউরোপ ভ্রমণ করার সময় চলচ্চিত্র জগতের প্রতি তার আগ্রহ জন্মেছিল। ১৯২৬ সনে মাতৃবিয়োগের পর তিনি অসমে ফিরে আসেন ও পিতার সহিত জমিদারী কার্যে মনোনিবেশ করেন। কিছুদিন পর তিনি কলকাতার জন্য রওনা হন এবং ঘরের সদস্যদের আপত্তি থাকা সত্বেও তিনি চলচ্চিত্র জগতে জড়িত হন। তিনি অমলা বালা বরুয়া ও যমুনা বরুয়াকে বিবাহ করেছিলেন। প্রথমেশ বরুয়া মোট ৬টি সন্তানের পিতা ছিলেন।

১৯২০ সালে কলকাতা হেয়ার স্কুল থেকে প্রবেশিকা পাশ। ১৯২৪-এ প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে বিএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ। ১৯২৮-এ মনোনীত সদস্য হিসেবে আসাম আইনসভায় যোগদান। ১৯৩০-এ উক্ত আইনসভার সদস্য নির্বাচিত।তিনি মোট ১৪টি বাংলা ও সাতটি হিন্দি ছবি পরিচালনা করেন। প্রমথেশ চন্দ্র বরুয়া কলকাতার ধীরেন্দ্রনাথ গাঙ্গুলীর 'দ্য ব্রিটিশ ডমিনিয়ান ফিল্ম লিমিটেড'এ মনোনিবেশ করেছিলেন ও তিনি এই প্রতিষ্ঠানে অভিনয় করেছিলেন।তিনি দ্বিতীয়বার ইউরোপ ভ্রমনের জন্য গিয়েছিলেন ও লন্ডন থেকে চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য প্রশিক্ষন নিয়েছিলেন ও প্যারিসে লাইট বয় হিসেবে কাজ করে চলচ্চিত্র নির্মাণের কার্য আয়ত্ত করেছিলেন। প্যারিস থেকে চলচ্চিত্র নির্মাণের সামগ্রী ক্রয় করে তিনি ভারতে বড়ুয়া পিক্চার্স নামক ষ্টুডিও স্থাপন করেছিলেন।

১৯৩১ সনে এই ষ্টুডিওর প্রথম চলচ্চিত্র 'অপরাধী' মুক্তি পেয়েছিল। কালীপ্রসাদ ঘোষ পরিচালিত ভাগ্যলক্ষ্মী চলচ্চিত্রে তিনি খলনায়কের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। ধীরেন্দ্রনাথ গাঙ্গুলী, প্রমথেশ বড়ুয়া ও দেবকী বসু একত্রিত হয়ে নিউ থিয়েটর্স নামক চলচ্চিত্র প্রয়োজনা প্রতিষ্ঠানে যোগদান করেছিলেন। এই থিয়েটারের অন্তঃভুক্ত থাকার সময় তিনি দেবদাস চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছিলেন। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত উপন্যাসে আধারিত এই চলচ্চিত্র প্রথমে বাংলা ভাষায় নির্মাণ করা হয়েছিল এবং ১৯৩৫ সনে তিনি হিন্দী ভাষায় দেবদাস চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছিলেন। তিনি হিন্দী চলচ্চিত্র মন্জিল, মুক্তি, অধিকার ও রজত জয়ন্তীতে পরিচলনা করেছিলেন।

অত্যধিক সুরাপানের ফলে প্রথমেশ বড়ুয়ার স্বাস্থ্য ধীরে ধীরে নষ্ট হতে থাকে; ফলে ১৯৫১ সনের ২৯শে নভেম্বর তারিখে প্রমথেশ বড়ুয়ার মৃত্যু হয়। কলকাতার ক্যাওড়াতলা মহাশ্মশানে প্রথমেশ বরুয়ার অন্তিম কার্য সমাপ্ত করা হয়।

নিউজজি/ এস দত্ত

পাঠকের মন্তব্য

লগইন করুন

ইউজার নেম / ইমেইল
পাসওয়ার্ড
নতুন একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে এখানে ক্লিক করুন