শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ , ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

বিনোদন
  >
ব্যান্ড মিউজিক

এলআরবি’র ভাঙন: স্বপনের যত অভিযোগ

নিউজজি প্রতিবেদক ২৫ জুন , ২০১৯, ১৫:০৪:২৯

39K
  • ছবি: ইন্টারনেট

ব্যান্ড জগতের চিরচেনা তিক্ত সত্য এর ভাঙন। প্রায় সব ব্যান্ড দলেই কখনো না কখনো ভাঙনের সুর বাজে। সেই তিক্ত সত্যটি আবারও জড়িয়ে গেল দেশের লিজেন্ডারি ব্যান্ড ‘এলআরবি’র সঙ্গে। এই ব্যান্ডের সদস্যদের মধ্যে মতের অমিল ও নানান ইস্যুতে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে। যার ফলে ‘এলআরবি’ এখন দুই ভাগে বিভক্ত। এক দিকে আছেন স্বপন ও রোমেল; অন্যদিকে আছেন মাসুদ, শামীম ও বালাম।

এলআরবি’র ভাঙনের পেছনে কারণ কী? সেটা ইতোমধ্যে সাইদুল হাসান স্বপন জানিয়েছেন। দলের ম্যানেজার শামীম ও মাসুদের বিরুদ্ধে তুলেছেন অভিযোগের আঙুল। স্বপন বলেছেন, এলআরবি’র ব্যানারে বসের (আইয়ুব বাচ্চু) ছবি না রাখা, বসকে সম্মানের সঙ্গে সবসময় সামনে রাখা, এসব ব্যাপার তাদের মধ্যে এখন আর দেখছি না। তো বসের অসম্মান হবে, এমন কিছু তো আমি মেনে নিতে পারি না। আমি ‘এলআরবি’র প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য। বসের সঙ্গে তিন দশকের বেশি সময় ধরে কাজ করেছি।

ম্যানেজার শামীমের বিরুদ্ধে ‘এলআরবি’র শো ফিরিয়ে দেয়ার অভিযোগও করেছেন স্বপন। তিনি জানান, কোনো শো আসলে শামীম বলে দিতেন, “এলআরবি’ আপসেট আছে, এখন শো করবে না”। অথচ তারা অন্য ব্যান্ডের সঙ্গে কাজ করছেন, নিজেরা সাউন্ডের ব্যবসা করে যাচ্ছেন। কিন্তু আমাদের তো এই ‘এলআরবি’ই একমাত্র ভরসা। আমাদেরও তো ঘর-সংসার চালাতে হয়।

এখানেই শেষ নয়, স্বপন জানান, ‘এলআরবি’তে নতুন ভোকাল হিসেবে বালামকে নেয়ার ব্যাপারেও নাকি তাদের সঙ্গে পরামর্শ করা হয়নি। তিনি ও রোমেল এই বিষয়ে জানতেন না বলেও উল্লেখ করেছেন এই জ্যেষ্ঠ্য মিউজিশিয়ান।

স্বপন জানান, এত কিছুর পরও তিনি ‘এলআরবি’কে স্বরূপে টিকিয়ে রাখতে চেয়েছেন। যার কারণে এত দিন চুপ করে ছিলেন। তবে প্র্যাক্টিসের তারিখ ঠিক করার পরও প্র্যাক্টিসে না ডাকা, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ না রাখা, শো ফিরিয়ে দেয়া; এসব কারণে তিনি ও রোমেল বাধ্য হয়েছেন ব্যান্ডটিকে নিজেদের মতো রান করতে।

‘এলআরবি’র ভবিষ্যৎ নিয়ে স্বপন জানান, বর্তমানে তিনিই একমাত্র প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। স্বাভাবিকভাবে ব্যান্ডটির দায়িত্ব তার ওপরেই বর্তায়। তাই তিনি ব্যান্ডটিকে এগিয়ে নেবেন। ‘এলআরবি’র গান যারা ভালো গায়, তাদের মধ্য থেকে কাউকে ভোকাল করবেন এবং নিয়মিত শো করবেন।

তবে কপিরাইট আইন অনুযায়ী ‘এলআরবি’ ব্যান্ডটি সদস্যদের সম্পত্তি নয়। এটার মালিকানা আইয়ুব বাচ্চু ও তার উত্তরাধিকারদের। তাই কোনো সদস্য চাইলেও এটাকে নিজের বলতে পারেন না। বিষয়টি নিয়ে স্বপন বলেন, এই বিষয়টা নিয়ে বিতর্ক হয়েছিল। তখন বাচ্চু ভাইয়ের ছেলে ঘোষণা দিয়েছিল, এলআরবি এলআরবির মতো পারফর্ম করুক। বাবার গানগুলো বেঁচে থাকুক। তারপর আর বিতর্ক থাকার কথা না। বাচ্চু ভাই এলআরবির লোগোটা রেজিস্ট্রেশন করেছিলেন। কোনো প্রতিষ্ঠান তো কারও ব্যক্তিগত হতে পারে না। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফল। আমি উনাকে অসম্ভব শ্রদ্ধা করি। কোথাও যেন উনার অসম্মান না হয় সেই চেষ্টাটাই করে এসেছি। ভবিষ্যতেও করে যাব। আমরা ওনার গান করতেই থাকব।

এদিকে এলআরবি’র ম্যানেজার শামীমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তারা কেন আলাদাভাবে শো করছে, সেটা আমরা জানি না। আর যোগাযোগের ব্যাপারে যদি বলি, আসলে কাউকে ডেকে ডেকে তো ব্যান্ড করা যায় না। এটা তাদেরও ব্যান্ড। তারা নিজে থেকে আসবে, প্র্যাক্টিস করবে। এখন তারা যদি না আসে, আলাদাভাবে শো করে, আমাদের কী বলার আছে।

প্রসঙ্গত, ১৯৯১ সালে কিংবদন্তি ব্যান্ড তারকা আইয়ুব বাচ্চু প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ব্যান্ড ‘এলআরবি’। সেই সময় তার সঙ্গে ছিলেন সাইদুল হাসান স্বপন, হাবিব আনোয়ার জয় ও এস আই টুটুল। এর মধ্য থেকে জয় ও এস আই টুটুল বের হয়ে গেছেন অনেক আগেই। আর গত বছর ব্যান্ডের কর্তা আইয়ুব বাচ্চু মারা যান। যার ফলে অভিভাবকশূন্য হয়ে পড়ে ব্যান্ডটি।

আইয়ুব বাচ্চু মারা যাওয়ার পর অধিকাংশ ভক্তই চেয়েছেন, নতুনভাবে ব্যান্ডটি চলুক। আইয়ুব বাচ্চুর দেখানো পথে হাঁটুক এলআরবি। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি দেখে অনেকেই বলছেন, এবি’র প্রয়াণের পর ব্যান্ডটির কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়াই শ্রেয় ছিল। তাহলে অন্তত লিজেন্ডারি এই ব্যান্ড নিয়ে কোনো বিতর্কের সৃষ্টি হতো না।

 

 

 

নিউজজি/কেআই

পাঠকের মন্তব্য

লগইন করুন

ইউজার নেম / ইমেইল
পাসওয়ার্ড
নতুন একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে এখানে ক্লিক করুন