রবিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৪ ফাল্গুন ১৪৩১ , ১৭ শাবান ১৪৪৬

বিনোদন

রাজ্য আছে, রাজা নেই

নিউজজি প্রতিবেদক  জানুয়ারী ২৩, ২০২৫, ১৬:০০:৫৭

45
  • ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশের চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রি যদি একটি রাজ্য হয়, তবে সেই রাজ্যের রাজা ছিলেন রাজ্জাক। অবশ্য ছিলেন বললে ভুলই হবে। কেননা নিজের অসামান্য অবদানের সুবাদে তিনি এখনো রাজাই আছেন। এখনো তার নাম উচ্চারণের আগে ‘নায়করাজ’ উপাধি উল্লেখ করা হয়। শুধু রাজ্জাক বললে যেন তার নামটি পূর্ণতাই পায় না।

নায়করাজ রাজ্জাক তার অভিনয় আর মমতাসূলভ অভিভাবকত্ব দিয়ে আগলে রেখেছিলেন ছোট্ট এই দেশের চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রিকে। বিএফডিসির প্রতিটি ধূলিকণাও শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে এই রাজাকে। এই প্রতিষ্ঠানের প্রত্যেকটি ফ্লোরে মিশে আছে নায়ক রাজের স্মৃতি। প্রায় সব শিল্পী-কলাকুশলীর সঙ্গে তার অতুলনীয় আচরণ, ভুলতে পারবে না কেউই। দেশের চলচ্চিত্র ইতিহাসে এই একটি মানুষই আছেন হয়ত, যার প্রতি কারও কোনো অভিমান কিংবা রাগ নেই। আছে শুধু ভালোবাসা আর শ্রদ্ধা।

আজ ২৩ জানুয়ারি, রাজার জন্মদিন। নায়করাজ রাজ্জাকের জন্মদিন। বিশেষ এই দিন এলো ক্যালেন্ডারের পাতায়, কিন্তু রাজা নেই। পড়ে আছে রাজাহীন রাজ্য। তিনি থাকলে হয়তো এ দিন সিনেমার বাতাসে বিরাজ করতো উৎসবের সুগন্ধ। তবু ইতিহাসের বিশাল আয়তন যার দখলে, সেই নায়করাজ না থেকেও আছেন অনেকটা জুড়ে।

নায়করাজ রাজ্জাকের জন্ম ১৯৪২ সালের ২৩ জানুয়ারি কলকাতায়। তার আসল নাম আব্দুর রাজ্জাক। দেশ ভাগের সময় তিনি ঢাকায় চলে আসেন। সপ্তম শ্রেণীতে অধ্যয়নরত অবস্থায় মঞ্চ নাটকে অভিনয়ের মাধ্যমে অভিনয় জীবন শুরু করেন রাজ্জাক। ১৯৬৬ সালে ‘১৩ নম্বর ফেকু ওস্তাগার লেন’ সিনেমায় একটি ছোট চরিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে এ দেশের চলচ্চিত্রে তার অভিষেক হয়। তিনি জহির রায়হানের ‘বেহুলা’ সিনেমায় কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে নিজের অবস্থান পাকাপোক্ত করেন।

ষাটের দশকের শেষের দিকে এবং সত্তরের দশকেও তাকে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্পের প্রধান অভিনেতা হিসেবে বিবেচনা করা হতো। অভিনয় জীবনে তিনি ‘বেহুলা’, ‘আগুন নিয়ে খেলা’, ‘এতটুকু আশা’, ‘নীল আকাশের নীচে’, ‘জীবন থেকে নেয়া’, ‘ওরা ১১ জন’, ‘অবুঝ মন’, ‘রংবাজ’, ‘আলোর মিছিল’, ‘অশিক্ষিত’, ‘ছুটির ঘণ্টা’ এবং ‘বড় ভালো লোক ছিল’সহ মোট ৩০০টি বাংলা ও উর্দু ভাষার চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। এছাড়া অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি ১৬টি সিনেমা পরিচালনা করেছিলেন।

নায়ক রাজ্জাক তার অনবদ্য অভিনয়ের সুবাদে অঢেল ভালোবাসা আর জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন। সেই সঙ্গে পুরস্কারও জিতেছেন অনেক। ২০১৫ সালে দেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়া হয়। শ্রেষ্ঠ অভিনেতা হিসেবে রাজ্জাক পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার এবং একই আয়োজনে আজীবন সম্মাননা পেয়েছেন। এছাড়া বাচসাস, বাবিসাস ও মেরিল প্রথম আলো পুরস্কারেও তাকে আজীবন সম্মাননা জানানো হয়েছে।

২০১৭ সালের ২১ আগস্ট সবাইকে শোকের সমুদ্রে ভাসিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান ঢালিউডের রাজা। তাকে দাফন করা হয়েছিল বনানী কবরস্থানে।

ব্যক্তিগত জীবনে নায়করাজ রাজ্জাক বিয়ে করেছিলেন লক্ষ্মীকে। ১৯৬২ সালে তাদের বিয়ে হয় কলকাতায়। এই দম্পতির পাঁচ সন্তান। এর মধ্যে বাপ্পারাজ ও সম্রাট দু’জনে চলচ্চিত্র জগতে কাজ করেন।

নিউজজি/এস দত্ত

=

পাঠকের মন্তব্য

লগইন করুন

ইউজার নেম / ইমেইল
পাসওয়ার্ড
নতুন একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে এখানে ক্লিক করুন