রবিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৪ ফাল্গুন ১৪৩১ , ১৭ শাবান ১৪৪৬

শিল্প-সংস্কৃতি

চিত্রশিল্পী সৈয়দ জাহাঙ্গীরের মৃত্যুবার্ষিকী আজ

নিউজজি ডেস্ক ২৯ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১৭:৩২:৪৮

149
  • সংগৃহীত

ঢাকা: মানুষ ও প্রকৃতির সম্পর্ক নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন দেশের বিশিষ্ট শিল্পী সৈয়দ জাহাঙ্গীর। দেশের সঙ্গে তার যে আত্মিক বন্ধন রয়েছে, তার প্রভাব বারবার উঠে এসেছে তার শিল্পকর্মে। ২৯ ডিসেম্বর একুশে পদকপ্রাপ্ত কীর্তিমান এই চিত্রশিল্পীর মৃত্যুবার্ষিকী।

সৈয়দ জাহাঙ্গীর ১৯৩৫ সালে সাতক্ষীরা জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার সৃষ্টিকর্মের বেশিরভাগই গ্রাম এবং গ্রামের প্রকৃতি নিয়ে। মূর্ত ও বিমূর্ত উভয় ক্ষেত্রেই সমকালীন চিত্রকলা অঙ্গনে রেখেছেন সাফল্যের স্বাক্ষর।

চিত্রকলার ভুবনে তিনি খুবই সক্রিয় জীবন যাপন করেছেন। তিনি ছিলেন এ দেশের চিত্রশিল্পের পুরোধাস্বরূপ। ১৯৫০-এর দশক থেকে একাধারে কাজ করেছেন। নানা চিত্রকর্মের মধ্যে ১৯৭৩ থেকে ১৯৭৫ সালের বিভিন্ন ঘটনা নিয়ে করা কাজ ‘আত্মার উজ্জীবন’ উল্লেখযোগ্য।

তাঁর ছবিতে প্রকৃতি ও মানুষের নানা অনুষঙ্গ খুবই সযত্নে উঠে এসেছে। নির্মাণশৈলীতে এসেছে সহজ ছন্দ, যা তাঁর সৃষ্টিকে করে তুলেছে তাৎপর্যময়। সৈয়দ জাহাঙ্গীরের ছবিতে মানুষের শ্রম-ঘাম, ভালোবাসা ও বন্ধনের দৃশ্যকাব্য উঠে এসেছিল। দেশের মাটি ও মানুষের মর্মযাতনার অনুভব তাঁর সৃজনধারাকে করেছে বৈশিষ্ট্যময়।

খুবই রসিক ও আত্মবিশ্বাসী মানুষ ছিলেন সৈয়দ জাহাঙ্গীর। সবার সঙ্গে মিশে যাওয়ার ক্ষমতা ছিল তাঁর। অবস্থান অনুযায়ী নিজেকে বদলে ফেলতে পারতেন তিনি। তিনি জীবনকে উপভোগ করেছেন। সবাইকে মানিয়ে নেয়া ও আপন করে নেয়ার অসাধারণ ক্ষমতা ছিল তাঁর।

প্রায় ২২ বছর পেশাদার চিত্রকর হিসেবে কাজ করার পর তিনি ১৯৭৭ সালে শিল্পকলা একাডেমির চারুকলা বিভাগের প্রধান হিসেবে যোগ দেন। সৈয়দ জাহাঙ্গীর শিল্পকলা একাডেমির পরিচালক হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন এবং শিল্পকলা একাডেমিতে চারুকলা বিভাগ চালু করেন।

চাকরি জীবনে তাঁর অন্যতম কৃতিত্ব হচ্ছে দ্বিবার্ষিক এশীয় চিত্রকলা প্রদর্শনীর প্রবর্তন করেন তিনি। রাজধানীর মতিঝিলে জনতা ব্যাংকের প্রধান শাখায় তার বিশালাকার ম্যুরাল রয়েছে। দেশ স্বাধীনের পর তার বিখ্যাত প্রদর্শনী ও সিরিজের নাম হচ্ছে—‘আত্মার উজ্জীবন,’ ‘উল্লাস,’ ‘ধ্বনি,’ ‘অজানা অন্বেষা’।

১৯৭৪-৭৫ সালে ঘুমোট রাজনীতি নিয়ে সিরিজ ও প্রদর্শনী করেছিলেন ‘অশনি সংকেত’ নামে। তিনি দেশে এবং দেশের বাইরে একাধিক প্রদর্শনী করেছেন। সৈয়দ জাহাঙ্গীর ১৯৮৫ সালে একুশে পদক লাভ করেন। ১৯৯২ সালে চারুশিল্পী সংসদ তাঁকে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করে।

২০০০ সালে মাইকেল মধুসূদন পুরস্কার এবং ২০০৫ সালে শশীভূষণ সম্মাননা লাভ করেন। ২০১০ সালে বার্জার পেইন্টস বিশেষ সম্মাননা প্রদান করে। এছাড়া, তিনি হামিদুর রহমান পুরস্কারসহ একাধিক পুরস্কার লাভ করেছেন। বাংলাদেশের প্রথিতযশা চিত্রশিল্পী ২০১৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর রাজধানীর মোহাম্মদপুরের ইকবাল রোডে নিজের বাসায় মৃত্যুবরণ করেন।

নিউজজি/পি.এম

পাঠকের মন্তব্য

লগইন করুন

ইউজার নেম / ইমেইল
পাসওয়ার্ড
নতুন একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে এখানে ক্লিক করুন