রবিবার, ৩ নভেম্বর ২০২৪, ১৯ কার্তিক ১৪৩১ , ১ জুমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিল্প-সংস্কৃতি

নৃত্যগুরু মাতা রাহিজা খানম ঝুনুর প্রয়াণদিন আজ

নিউজজি ডেস্ক ২৬ নভেম্বর, ২০২৩, ১৩:১৭:৫৫

176
  • ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: রাহিজা খানম ঝুনু ছিলেন নৃত্যশিল্পী ও নৃত্যশিক্ষক। দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে তিনি নৃত্যগুরু মাতা হিসেবে অধিক পরিচিত। গুণী এই শিল্পী বুলবুল ললিতকলা একাডেমিতে নৃত্যশিক্ষক এবং বাংলাদেশ নৃত্যশিল্পী সংস্থার সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। নৃত্যকলায় অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার ১৯৯০ সালে তাকে একুশে পদকে ভূষিত করে।

আজ ২৬ নভেম্বর নৃত্যশিল্পের কীর্তিমান এই শিল্পীর প্রয়াণদিবস। ২০১৭ সালের এইদিনে ধানমন্ডিস্থ ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। রাহিজা খানম ঝুনু ১৯৪৩ সালের ২১ জুন মানিকগঞ্জ জেলায় এক শিক্ষিত ও সম্ভ্রান্ত মুসলমান পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা আবু মোহাম্মদ আবদুল্লাহ খান ছিলেন একজন পুলিশ অফিসার এবং মাতা সফরুন নেছা ছিলেন গৃহীনি।

ঝুনু ছোটবেলায় কলের গান বাজিয়ে বাড়িতে নাচতেন। তার বাবা এতে খুশি হয়ে তাকে গেন্ডারিয়া বালিকা বিদ্যালয়ে (মনিজা রহমান গার্লস স্কুল) ভর্তি করান। যেখানে তিনি পড়াশুনার পাশাপাশি নাচ ও গান শিখেন। স্কুলের প্রধান শিক্ষিক বাসন্তী গুহ ঠাকুর প্রতি বছর স্কুলে নাচ ও গানে প্রতিযোগিতার আয়োজন করতেন।

তিনি ছিলেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ সময়কালে শহীদ বুদ্ধিজীবী জ্যোতির্ময় গুহ ঠাকুর তার স্ত্রী। ১৯৫৫ সালে ঝুনু পঞ্চম শ্রেণিতে পড়াকালীন বাসন্তী গুহ "ঘুমন্ত রাজকন্যা" নামে একটি নৃত্যনাট্য মঞ্চস্থ করেন। এতে ঝুনু একটি পুরুষ চরিত্রে নাচে অংশগ্রহণ করেন। এই নৃত্যনাট্যের নৃত্য পরিচালক ছিলেন অজিত সান্ন্যাল। তিনি ঝুনুর পিতাকে বলেন তাকে বুলবুল ললিতকলা একাডেমিতে ভর্তি করতে।

১৯৫৬ সালে ঝুনু নৃত্যে তালিম নিতে বাফায় ভর্তি হন। তিনি ছিলেন বাফার প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থী। তার সাথে তার ভাই মোজাম্মেল হোসেন সেতার, বোন রুনু রবীন্দ্র সঙ্গীত এবং নীনা ধ্রুপদী সঙ্গীত বিভাগে ভর্তি হন। ১৯৬০ সালে বাফা থেকে পাস করে তিনি বাফার নৃত্যশিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন এবং ১৯৯৮ সালে অধ্যক্ষ পদে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

ঝুনু এসময়ে বেশ কিছু নৃত্যনাট্য পরিচালনা করেন এবং অংশগ্রহণ করেন। ড. এনামুল হক রচিত সূর্যমুখী নদী, উত্তরণের দেশে, হাজার তারের বীণা নৃত্যনাট্যসমূহ পরিচালনা ও অংশগ্রহণ করেছেন। দেশবরেণ্য এই শিল্পী ও এ দেশের নৃত্যাঙ্গনে অগণিত শিল্পী গড়ার এ কারিগর।

উত্তরণের দেশে নৃত্যনাট্যটি একুশে ফেব্রুয়ারির ওপর ভিত্তি করে রচিত এবং সূর্যমুখী নদী গীতিনৃত্যনাট্যটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ওপর রচিত। তিনি বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির প্রযোজনায় দি ম্যালডি নৃত্যনাট্য পরিচালনা করেন। শিশুদের জীবনভিত্তিক পূর্ণাঙ্গ নৃত্যনাট্য দেখব এবার জগৎটাকে পরিচালনা করেছেন।

রাহিজা খানম ঝুনু সারাটা জীবন নৃত্যকে প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্য নিয়ে কাটিয়ে দিয়েছেন এবং নাচকে বিশ্বের দরবারে প্রতিষ্ঠা করার এক অনবদ্য মানসে তিনি নিবেদিত হয়ে কাজ করে এসেছেন। দেশ বিদেশে অনেক সফল নাচের অনুষ্ঠান করে সমাদৃতও হয়েছেন ঝুনু। তার কন্যা ফারহানা চৌধুরী বেবীও একজন গুণী নৃত্যশিল্পী ও বিশিষ্ট নৃত্যপরিচালক। জীবদ্দশায় দীর্ঘদিন তিনি বুলবুল ললিতকলা একাডেমি বাফার প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

নিউজজি/এস দত্ত

 

পাঠকের মন্তব্য

লগইন করুন

ইউজার নেম / ইমেইল
পাসওয়ার্ড
নতুন একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে এখানে ক্লিক করুন