শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ , ১৯ রমজান ১৪৪৫

দেশ
  >
জনপদ

রাঙ্গুনিয়ায় চলছে ঢাকা আহছানিয়া মিশনের শিক্ষা কার্যক্রম

জিয়াউর রহমান, রাঙ্গুনিয়া (চট্টগ্রাম) ২৫ সেপ্টেম্বর , ২০২২, ১৭:৩২:৩২

651
  • ছবি : নিউজজি

চট্টগ্রাম: ঢাকা আহছানিয়া মিশনের আউট অব স্কুল চিলড্রেন প্রকল্পের রাঙ্গুনিয়া উপজেলা প্রোগ্রাম ম্যানেজার সানি বড়ুয়ার তত্ত্বাবধানে ৭০টি শিশু শিখন কেন্দ্রে ২১শ শিশু নিয়ে কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এছাড়াও ঝড়ে পড়া ও স্কুল বহির্ভূত এই ২১’শ শিক্ষার্থীদের মাঝে বই-খাতার পাশাপাশি স্কুল ব্যাগ ও পোশাক বিতরনে ব্যস্ত সময় পার করেছেন তিনি। এতে করে অধিকার বঞ্চিত শিশুরা প্রাথমিক শিক্ষার সুযোগ পাচ্ছে। উপজেলার দুর্গম পাহাড়ী এলাকায় শিশু শিখন কেন্দ্র স্থাপনে এসব অঞ্চলের অবহেলিত ও দরিদ্র শিশুদের শিক্ষাদানে তাদের মাঝে শিক্ষার আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে।

ঢাকা আহছানিয়া মিশন বাংলাদেশের একটি অলাভজনক সমাজসেবামূলক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, যেটি ১৯৫৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এই প্রতিষ্ঠানটি মূলত গরিব, বিশেষ করে সুবিধাবঞ্চিত মানুষের দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে দারিদ্রতা দূরীকরণ এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে কাজ করে। সমাজ সংস্কারক ও সুফি খান বাহাদুর আহ্ছানউল্লাহ এটি প্রতিষ্ঠা করেন।

রাঙ্গুনিয়ায় সুবিধা বঞ্চিত, ঝড়েপড়া ও এতিম শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়াতে ঢাকা আহছানিয়া মিশন অগ্রণী ভূমিকা রেখে চলেছে। ২০১৩ সালের ডামসিএলসি প্রকল্পে ৯০টি শিশু শিখন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হয় এবং ২০১৭ সালের নভেম্বরে এসে তা সফলভাবে সমাপ্তি করা হয়।

বর্তমানে আউট অব চিলড্রেন এডুকেশন প্রোগ্রাম ২০২০ সালে নভেম্বর থেকে শুরু হয়ে অদ্যাবধি পর্যন্ত ইহার কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। এর আওতায় রাঙ্গুনিয়া উপজেলার ৭০টি শিশু শিখন কেন্দ্রে এই কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ব্যতিক্রমী এই উদ্যোগে শিক্ষার আলো পেয়ে খুশি শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি অভিভাবকবৃন্দরা।

এ প্রকল্পের আওতায় ৮-১৪ বছর বয়সী সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের নিয়ে উপানুষ্ঠানিক প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। ব্যতিক্রমধর্মী মাল্টিগ্রেড শিক্ষা শিখন পদ্ধতির মাধ্যমে শিশুদের যোগ্যতা ভিত্তিক শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে। এভাবে শিক্ষাবিমুখ শিশুদের শিক্ষার আওতায় এনে প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করছে ঢাকা আহছানিয়া মিশন।

রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাঙ্গুনিয়ার প্রোগ্রাম ম্যানেজার সানি বড়ুয়া বলেন, ঢাকা আহছানিয়া মিশন একটি অলাভজনক সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে পেরে নিজেকে গর্বিত মনে করছি। কেননা বর্তমানে আমি রাঙ্গুনিয়ার সুবিধা বঞ্চিত, গরিব, দরিদ্র ও শিক্ষাবিমুখ শিশু-কিশোরদেরকে ঢাকা আহছানিয়া মিশনের সহায়তায় এখানে শিশু শিখন কেন্দ্র স্থাপন করে শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে পেরে আমি ঢাকা আহছানিয়া মিশনের কাছে কৃতজ্ঞ।

তিনি আরো বলেন, রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় ৭০টি শিশু শিখন কেন্দ্রে সুবিধা বঞ্চিত ও দরিদ্র শিক্ষার্থীদের পাঠদান করা হয়। এ উপজেলার ৭০টি শিখন কেন্দ্রের প্রতিটি শিখন কেন্দ্রে একজন করে শিক্ষক দিয়ে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করানো হচ্ছে। এশিখন পদ্ধতি চালু থাকলে ভবিষ্যতে প্রত্যন্ত অঞ্চলে শিক্ষার আলো ফুটতে থাকবে বলে আশা ব্যক্ত করেন তিনি।

রাঙ্গুনিয়ার ইসলামপুর ইউনিয়নের গাবতল কাতালশাহ পাড়ার শিশু শিখন কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে, সেখানে শিশুদের কোর্স মূল্যায়ণ পরীক্ষা চলছে। মূল্যায়ণে শিশুসহ কমিউনিটির ব্যাপক আগ্রহ দেখা গেছে। কেন্দ্র ব্যবস্থাপনা কমিটি ও অভিভাবকগণ শিশুদের মূল্যায়ণ দেখতে আসেন এবং খবরা খবর নেন। সংস্থাটি এ প্রকল্প বাস্তবায়নে স্থানীয় প্রশাসনসহ কমিউনিটির সর্বস্তরের জনগণকে সম্পৃক্ত করেছে।

অভিভাবকদের মধ্যে অনেকে জানিয়েছেন, আহছানিয়া মিশনের মাধ্যমে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের শিক্ষার অধিকার নিশ্চিত হয়েছে। এভাবে যদি সমাজের বৃত্তবানরাও এগিয়ে আসতো তাহলে আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নতি হতো।

 

নিউজজি/এসএম

পাঠকের মন্তব্য

লগইন করুন

ইউজার নেম / ইমেইল
পাসওয়ার্ড
নতুন একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে এখানে ক্লিক করুন