মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ৩১ পৌষ ১৪৩১ , ১৪ রজব ১৪৪৬

দেশ

সিংড়ায় পানিফল চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের

মো. আবু জাফর সিদ্দিকী, সিংড়া (নাটোর) ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১৬:০৬:১৭

93
  • ছবি : নিউজজি

নাটোর: পানিফল সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছেন নাটোরের সিংড়ার চলনবিলাঞ্চলের কৃষকরা। অল্প খরচে লাভবান হওয়ায় প্রায় দুই দশক ধরে এই এলাকার কৃষকরা বাণিজ্যিক ভাবে পানিফলের চাষ করে আসছেন। তবে গত কয়েক বছরের চেয়ে এ বছর আগাম চাষ করায় শীতের আগেই ফল ধরা শুরু করেছে। তাই জমি থেকে ফল সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা।

প্রায় ১০ বছর ধরে একাধারে পানিফল চাষ করে সফলতা অর্জন করেছেন পৌর এলাকার চকসিংড়া মহল্লার কৃষক সাইফুল ইসলাম। এ বছরও তিনি ৩ বিঘা জমিতে পানিফল চাষ করে লাভের সম্ভাবনা দেখছেন তিনি।

সাইফুল ইসলাম জানান, ১০ বছর ধরে পানিফল চাষ করে আসছি। এ বছর ৩ বিঘা জমিতে খরচ হয়েছে ৪০ হাজার টাকা। ১ লাখ টাকার বিক্রি করার আশায় আছি।

কৃষকরা বলছেন, শীতের শুরুতে বাজারে ফলের চাহিদা বেশি থাকে। দামও বেশি পাওয়া যায়। আবহাওয়া অনূকূল থাকলে লাভবান হওয়ার আশা করছেন তারা।

সিংড়া উপজেলার রামানন্দ খাজুরা ইউনিয়নের কৈগ্রামে গিয়ে দেখা যায়, জমি থেকে পানিফল সংগ্রহ করছেন কৃষক। প্রতি বছর এই গ্রামে ৮ থেকে ১০ জন কৃষক পানিফল চাষ করেন।

এ বছর তাদের পানি ফল চাষের জমির পরিমাণ প্রায় ২২ বিঘা। গত দুই দশক ধরে এই গ্রামের কৃষকরা বাণিজ্যিক ভাবে পানিফল চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া অনেক প্রান্তিক কৃষকদের সংসারে ফিরেছে স্বচ্ছলতা।

কৃষকরা জানায়, প্রায় ৩০ বছর আগে কৈগ্রামে প্রথম পানিফলের চাষ শুরু করেন রইচ উদ্দিন। রইচ উদ্দিনের সফলতা দেখে এ গ্রামের অনেকেই ঝুঁকে পড়েন পানিফল চাষে।

কৃষক রইচ উদ্দিন জানান, পতিত পুকুর-ডোবা নালায় বর্ষাকালে অল্প পরিমাণ পানি থাকে এমন নীচু জমিতে পানি ফলের চাষ ভালো হয়। অল্প খরচে লাভ বেশি হলেও পরিশ্রম করতে হয় বেশি। বিশেষ করে প্রতিদিনই জমি থেকে ফল সংগ্রহ করতে হয়।

তিনি বলেন, আমি অন্য কোন আবাদ করি না। প্রতি বছরই ২ এক বিঘা জমি ইজারা নিয়ে পানিফল চাষ করি। এ বছর ৭ হাজার টাকা ইজারা সহ আমার মোট খরচ ১২ হাজার টাকা। নিজে পরিশ্রম করি তাই শ্রমিক খরচ কম। তিনি এ জমি থেকে খরচ বাদে ৭০ হাজার টাকা লাভের আশা করছেন।

কৃষক আব্দুল মজিদ, ইদ্রিস আলী ও শহিদ হোসেন জানান, এবার ফলন ও বাজার মুল্য দুটোই ভালো। দেড় থেকে ২ হাজার টাকা মন বিক্রি হচ্ছে। শীতের শেষ পর্যন্ত বাজার ঠিক থাকলে গতবছরের চেয়ে লাভ বেশি হবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ খন্দকার ফরিদ বলেন, সিংড়া উপজেলার রামানন্দ খাজুরা ইউনিয়নের কৈগ্রামসহ পৌরসভার চকসিংড়া, তাজপুর, কলম এবং শেরকোল ইউনিয়নের পতিত ও নীচু জমিতে বাণিজ্যিক ভাবে কৃষকরা পানি ফল চাষ করছেন। এতে খরচ ও পরিশ্রম কম, লাভ বেশি। পানিফল চাষে রোগবালাই কম। তাই পানিফল চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের।

তিনি আরো বলেন, উপজেলা কৃষি বিভাগ সবসময় কৃষকদের পাশে থেকে সব ধরনের পরামর্শ ও সহযোগিতা করে যাচ্ছেন।

 

নিউজজি/এসএম

পাঠকের মন্তব্য

লগইন করুন

ইউজার নেম / ইমেইল
পাসওয়ার্ড
নতুন একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে এখানে ক্লিক করুন