মঙ্গলবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১১ আশ্বিন ১৪৩০ , ১১ রবিউল আউয়াল ১৪৪৫

দেশ

নিলামে মহাসড়কের জমি: প্রতিবেদন দিতে দুদককে তিন মাস সময়

নিউজজি প্রতিবেদক ২৪ নভেম্বর, ২০২২, ১৮:০০:৫৪

138
  • নিলামে মহাসড়কের জমি: প্রতিবেদন দিতে দুদককে তিন মাস সময়

ঢাকা: উত্তরার আজমপুরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের জমি নিলামে তোলার অভিযোগের অনুসন্ধান সাত মাসেও শেষ করতে পারেনি দুর্নীতি দমন কমিশন–দুদক। যে কারণে আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী শুনানির তারিখ রেখে এ সময়ের মধ্যে অনুসন্ধান প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সংস্থাটিকে।

বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের দ্বৈত বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন। আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন, আইনজীবী মো. তামজিদ হাসান।

বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ ‘র পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আবুল কালাম আজাদ। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শাহীন আহমেদ। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।

এ বিষয়ে আইন কর্মকর্তা মানিক বলেন, অনুসন্ধান শেষ করে দুদককে তিন মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

দুদকের আইনজীবী শাহীন আহমেদ বলেন, দুদকের পক্ষে অনুসন্ধানের একটি অগ্রগতি প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করে অনুসন্ধানকাজ শেষ করতে সময় চাওয়া হয়। বিএফআইইউও’র পক্ষেও সময় চাওয়া হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে আদালত তিন মাসের সময় দিয়েছেন।

জালিয়াত এই গোলাম ফারুককে গত ১৪ এপ্রিল উত্তরা থেকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। পরের দিন রাজধানীর কারওয়ান বাজারে মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব জানায়, বাড্ডা থানার একটি হত্যাচেষ্টা মামলায় তাকে ও তার সহযোগী ফিরোজ আল মামুনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

বিক্রির জন্য মহাসড়কের জমি নিলামে তোলার বিষয়টিও তুলে ধরা হয় ওইদিনের সংবাদ সম্মেলনে। র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার আল মঈন জানান, উত্তরার আজমপুরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের অংশের জমি অধিগ্রহণ করা হয় ১৯৪৮ সালে। ২০০৬ সালে এই জমির ভুয়া দলিল তৈরি করেন গোলাম ফারুক। ২০১০ সালে ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে ওই জমি নিজের স্ত্রীর নামে কিনে আরেকটি ভুয়া দলিল তৈরি করেন তিনি। পরে ওই বছরই স্ত্রীর কাছ থেকে জমিটি নিজের নামে করে নেন। এরপর নিজের নামে নিবন্ধন করা মহাসড়কের জমি বন্ধক রেখে একটি বেসরকারি ব্যাংক থেকে ১৫ কোটি টাকার ঋণ নেন ফারুক।

ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ না করায় ২০১৩ সালে ব্যাংক ওই জমি নিলামে বিক্রি করার নোটিশ দেয়। কিন্তু সরেজমিনে গিয়ে ব্যাংক দেখতে পায় ওই জমিটি সড়ক ও জনপথের। তখন গোলাম ফারুক আবারও জালিয়াতি করে বন্ধক রাখা জমির দাগ নম্বর পরিবর্তন করেন। মহাসড়কের পাশে ব্যক্তি মালিকানাধীন জমির দাগ নম্বর উল্লেখ করে ভুল সংশোধন দলিল করেন। ব্যাংক সেই জমিতে বন্ধকি সম্পত্তির সাইনবোর্ড স্থাপন করতে গেলে গোলাম ফারুকের জালিয়াতির ধরা পড়ে।

হত্যাচেষ্টা মামলায় গোলাম ফারুক গ্রেপ্তার হলেও মহাসড়কের জমি বন্ধকের ঘটনায় কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় এ ঘটনার তদন্ত ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের নির্দেশনা চেয়ে গত ২১ এপ্রিল হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়। রিটের প্রাথমিক শুনানির পর গত ২৫ এপ্রিল রুলসহ আদেশ দেন উচ্চ আদালত। দুদককে মহাসড়কের জমি নিলামে তোলার ঘটনা অনুসন্ধানের নির্দেশ দিয়ে ২৬ জুনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। দুর্নীতি-জালিয়াতির মাধ্যমে উত্তরার আজমপুরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের জমি বন্ধক দেওয়া দুর্নীতিবাজ ব্যক্তি অথবা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতা কেন বেআইনি ও আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, জানতে চাওয়া হয় রুলে। সেই সঙ্গে এই ‘জনসম্পত্তি’ নিলামে তোলার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে  প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়।

দুদক, বাংলাদেশ ব্যাংক, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ), সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড (এসআইবিএল) ও ব্যাংটির ব্যবস্থাপনা পরিচালককে রুলের জবাব দিতে বলেন আদালত। সে ধারাবাহিকতায় মামলাটি কার্য তালিকায় উঠলে আদেশ দেন আদালত।

 

নিউজজি/টিবিএফ

 

পাঠকের মন্তব্য

লগইন করুন

ইউজার নেম / ইমেইল
পাসওয়ার্ড
নতুন একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে এখানে ক্লিক করুন