শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ , ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

ফিচার

ভীষণ শীত, চলুন ওদের পাশে দাঁড়াই

নিউজজি ডেস্ক জানুয়ারী ৮, ২০১৮, ১১:৫৭:২৮

3K
  • ভীষণ শীত, চলুন ওদের পাশে দাঁড়াই

এক ঝাপটায় শীত নেমে গেছে। আমাদের ত্বক বাঁচানোর কত পদ্ধতি। আমাদের প্রস্তুতিতে থাকে আগের বছরের শীতের পোশাক পাল্টে নতুন ফ্যাশনে অভ্যস্ত হতে। কিন্তু শীতকাল আসতেই যারা ভয়ে জড়োসড়ো হয়ে যান, তাদের জন্যও আমাদের প্রস্তুতির প্রয়োজন। 

প্রতিবছর শীতে দেশের মানুষের একেবারে জবুথবু অবস্থা হয়ে যায়। কোথাও কোথাও ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে আসে তাপমাত্রা অথবা আরো কম। কোথাও ঘন কুয়াশায় সূর্যের আলোর দেখা মেলে না। আবার কোথাও দেখা মিললেও তীব্র বেগে বয়ে চলা হিমেল হাওয়া গায়ের চামড়া ভেদ করে হাড়কাঁপিয়ে দিয়ে যায়। এত কষ্ট হলেও এর মধ্যেই চলে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। মানুষ তো আর শীতল রক্ত বিশিষ্ট প্রাণী না যে শীতের কারণে কোনো কাজ না করে সঞ্চিত খাবার খাবে আর আরামে ঘুমুবে। তবে একেবারেই যে করে না তা না। কারো কারো কাছে এই শীত মৌসুমই প্রিয়। তারা পিকনিকসহ ঘটা করে বিভিন্ন জায়গায় বেড়িয়ে আসে। নিজেদের সঞ্চিত অর্থ ভাঙার সবচেয়ে উন্নত মৌসুম শীতকাল। 

যার এক বেলা চুলা জ্বলে না সে হয়তো একটু বেরিয়ে দু-চার মুষ্টি চাল সংগ্রহ করতে পারে কিন্তু যার একটু শীতের কাপড় নেই সে কীভাবে বাইরে বের হবে! সে শীত নিবারণের জন্য জড়োসড়ো হয়ে কোনো আড়ালে আবডালে হয়তো বসে থাকে। শীতের সীমাহীন তীব্রতা বাড়ার সাথে সাথে মানুষের কষ্ট বেড়ে যায় কয়েকগুণ। মৃতের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলে। সবচেয়ে কষ্ট হয় দেশের উত্তরাঞ্চলের মানুষগুলোর। গরম কাপড় না থাকায় অনেকে গায়ে ছেঁড়া চট/বস্তা জড়িয়ে কোনোরকম শীত নিবারণ করে। লঞ্চ-ঘাট, রেল স্টেশন, বাস স্ট্যান্ড, গাড়ির নীচে, ফুটপাথ, হাটবাজার ইত্যাদি বিভিন্ন জায়গায় মেলে ছিন্নমূল মানুষ। নদীভাঙা মানুষ, প্রাকৃতিক দুর্যোগে, দুর্ঘটনায় সহায় সম্বল হারানো মানুষ, যাযাবর ইত্যাদি বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অসহায়ভাবে দিন যাপন করে। প্রতিবছর শৈত্যপ্রবাহ একটা নিয়মিত দুর্যোগ। এ সময়ে মানুষের যে কষ্ট, তা নিয়ে আমরা দীর্ঘশ্বাস ফেলে দায় সারলে চলবে না। কয়েকটা গরম কাপড় দিয়ে এসে আমাদের দায় সারতে পারি না। আমাদের পাড়ায় পাড়ায়, প্রতি গ্রামে বা মহল্লায় সম্মিলিতভাবে শীতে কষ্ট করা মানুষের জন্য নিয়মিত খোঁজখবর নিতে হবে। শীতের কষ্ট সহ্য করতে না পেরে প্রতিবছর অনেক মানুষ মারা যায়। একদিকে মানুষ মারা যায়, আরেকদিকে মানুষের বিনোদনের সবচেয় নির্ভার সময় হয়ে আসে শীতকালটাই। বিনোদন বিমুখতার প্রয়োজন নেই। প্রয়োজন সামর্থ্য অনুযায়ী গোটা শীতকাল মানুষের খুব কাছে থাকা।

শীত এসে গেছে। শীত নেমে গেছে। শীত আক্রান্ত করে ফেলেছে মানুষকে। জীবন বিপন্ন অনেকের। কতজনের? একটা বিস্তৃত জনপদের প্রায় সকলের। আজকের খবর, পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা দুই দশমিক ছয়। কেমন আছে তারা? বারো তেরোতে নামলেই আমরা হু হু করি। তাদের অবস্থা কেমন? আসুন, ফেসবুকে ওয়াজ না করে এবং সেলফি না তুলে বা প্রচার প্রচারণার চেয়ে সামর্থ্য মতো গরম কাপড় কিনে দিই। কিনে দিতে না পারলে নিজেদের মধ্যে যাদের অতিরিক্ত কাপড় আছে, তা নিয়ে ওদের কাছে পাঠানোর ব্যবস্থা করি। গরমের সময় শীতের কাপড় পাঠিয়ে লাভ নেই। পাঠালে আজ থেকেই পাঠাতে হবে। 

শীতে উষ্ণতা খোঁজার পাশাপাশি উষ্ণতার ছিটেফোঁটার অভাবে যারা মরতে বসেছে, আসুন তাদেরকেও খুঁজি, পাশে দাঁড়াই। 

ছবি – ইন্টারনেট । 

পাঠকের মন্তব্য

লগইন করুন

ইউজার নেম / ইমেইল
পাসওয়ার্ড
নতুন একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে এখানে ক্লিক করুন